প্রতিবেদন: মোদি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি যে আসলে কতটা অন্তঃসারশূন্য এবং বিভ্রান্তিকর তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (Ritabrata Banerjee)। রাজ্যসভায় কেন্দ্রকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের কোনও মতামত ছাড়াই জোর করে ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে এই নয়া শিক্ষানীতি। রাজ্যের ছেলেমেয়েরা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যাতে পিছিয়ে না পড়ে তার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার চার বছরের স্নাতক কোর্স-সহ ইন্টারডিসিপ্লিনারি এবং মাল্টিডিসিপ্লিনারি পঠন-পাঠন চালু করেছে। কিন্তু এর জন্য যে বিপুল অঙ্কের খরচা জরুরি তা জোগান দেওয়া তো দূরের কথা, এই টাকা কোথা থেকে আসবে তা নিয়েও অদ্ভুতভাবে মৌন কেন্দ্র।
আরও পড়ুন-ভোটার কার্ড দুর্নীতি, সংসদের বাইরেও জনমত গড়ে তুলবে তৃণমূল
ঋতব্রতর প্রশ্ন, সর্বশিক্ষা মিশনে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় শেয়ারের টাকা এখনও রাজ্যকে দেওয়া হয়নি কেন? তাঁর অভিযোগ, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ২৬২৯ কোটি টাকা। কেন্দ্রের শেয়ার ১৭৪৫.৭৮ কোটি টাকা। আশ্চর্যের ব্যাপার ওই অর্থবর্ষের রাজ্য পেয়েছে মাত্র ৩১১.২৯ কোটি টাকা। সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভূমিকা তীব্র সমালোচনা করেন ঋতব্রত। তাঁর কথায়, কেন্দ্র রাজ্যপাল ও অর্থাৎ আচার্যকে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক হিসাবে ব্যবহার করছে রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে। উপাচার্যদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। যেসব উপাচার্য তাঁদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন না তাঁদের অনৈতিকভাবে সরিয়ে দিয়ে নিজেদের লোক বসিয়ে দিচ্ছেন আচার্য। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এভাবেই পুরোপুরি ধ্বংস করছে কেন্দ্র।
ঋতব্রত কটাক্ষ, যোগীরাজ্যে পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে রবীন্দ্রনাথকে। অথচ রবীন্দ্রনাথই শিক্ষা ও সংস্কৃতির মধ্যে নিবিড় যোগসূত্র স্থাপন করেছিলেন। আসলে ওরা বোঝেই না, ৫ হাজার বছরের ডিএনএ জুড়ে শুধুই মা-মাটি-মানুষ আর মাছ। তাই বিজেপি পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করছে রামদেবকে। তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ, গেরুয়া সরকারের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির বলি শুধু বিশ্বকবি নন, চালর্স ডারুইনের বিবর্তনবাদ এবং পিরিওডিক টেবিলও।