সংবাদদাতা, হুগলি : দু’দিন আগে চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা যে যে কথা বলে গিয়েছিলেন শুক্রবার সেখানেই সভা করে অন্যতম বক্তা মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে যা প্রতিশ্রুতি দেন তা পালন করেন। কিন্তু যখন ভোট আসে তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেন যা পরবর্তীকালে সবই মিথ্যা পরিগণিত হয়। সদ্যনির্বাচিত কর্নাটক সরকারও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ধাঁচে মহিলাদের জন্য কর্মসূচির কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন-জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে কুর্মিদের ছদ্মবেশে হামলা, কড়া বার্তা অভিষেকের
এইখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অন্যদের তফাত।’’ বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘এখানে দু’দিন আগে এক বীরপুরুষ এসে অনেক বড় বড় কথা বলে গেছেন। অথচ এই মানুষটাই গরিব মানুষের পেটে লাথি মেরে ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের কান ভাঙিয়ে। এই বীরপুরুষই আবাস যোজনার টাকা আটকে দিয়েছেন। এই গদ্দার ২০১১ থেকে ২০২০ রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। অন্তত কুড়িটি দফতরের চেয়ারম্যান ছিলেন। তৃণমূলে থেকে সমস্ত কিছু চুষে খেয়েছেন।’’ জনাকীর্ণ সভায় উপস্থিত মানুষের প্রতি তাঁর প্রশ্ন, ‘‘শিশির অধিকারী কে, দিব্যেন্দু অধিকারী কে? শুভেন্দু এখানে বড় বড় কথা, অনেক নীতিকথা বলেছেন, অথচ ওঁর বাবা-ভাই তৃণমূলের সাংসদ হিসেবে রয়েছেন। আগে ওঁদের সামলান। বলেছে আমি নাকি পুরপ্রধান হিসাবে চাকরি বিক্রি করেছি। আমি ওঁকে পাঁচদিন সময় দিচ্ছি। এর মধ্যেও যদি এই কথার সত্যতা প্রমাণ করতে না পারেন তবে ওঁর সঙ্গে কোর্টে দেখা হবে।’’
আরও পড়ুন-জঙ্গলমহলে জনপ্লাবন
বিধায়ক এলাকা উন্নয়নের খতিয়ান দিয়ে বলেন, ‘‘আমি ১২ বছরে কী কাজ করেছি তা চুঁচুড়ার মানুষ জানেন। রাস্তাঘাট থেকে পানীয় জল, আবাস যোজনা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন সব কিছুই হয়েছে আমার বিধায়ককালে। এখানকার বিজেপির এমপি লকেট দেবী কী করেছেন তার হিসাব দিন।’’ অসিতবাবু শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘‘আমার চুঁচুড়ায় একটা ঠিকানা আছে, বিধানসভার এমএলএ লিস্টে আমার ফোন নম্বর আছে, যদি দম থাকে তো আমার বাড়িতে ইডি-সিবিআই পাঠান।’’
আরও পড়ুন-জরিমানায় স্থগিতাদেশ
অসিতবাবু মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল সরকারে থাকাকালীন বিগলিত ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুণগান এবং তৃণমূল সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান দিয়েছেন সেই অডিও ক্লিপিং শুনিয়ে বলেন, ‘‘আমার কাছে কুড়িটার বেশি অডিও ক্লিপ আছে। তাহলে আপনারা বুঝতে পারছেন গদ্দারকে। ৮ মাস পর চাকা ঘুরলে শিশির-দিব্যেন্দু মমতা মায়ের পায়ে পড়বেন, কিন্তু শুভেন্দুর কী হয় মানুষ দেখবে।’’ জনসভায় দুপুর থেকে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হন। ক্রমে তা জনপ্লাবনে পরিণত হয়।