নয়াদিল্লি : প্রথমে কলেজিয়াম, তারপর ছুটির ইস্যু। একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের দ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়ছে। বিচারব্যবস্থায় অনুগতদের বসাতে মরিয়া মোদি সরকার। তাই বারবার বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত কলেজিয়াম প্রথার সমালোচনা করছেন সরকারের নানা স্তরের প্রতিনিধিরা। আর খোদ কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী যা বলছেন সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান তার ঠিক উল্টো। এই সংঘাতের আবহে বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু সংসদে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ পদ্ধতির আর একদফা সমালোচনা করে বলেছিলেন, সরকার আদালতের কাজে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে দেশের বিভিন্ন আদালতে পাঁচ কোটি মামলা ঝুলে আছে।
আরও পড়ুন-প্রাণায়াম এবং ধ্যানের উপকারিতা
এনিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। সুপ্রিম কোর্টের পাশাপাশি অন্যান্য হাইকোর্টেও বহু বিচারপতির পদ খালি আছে। বিচারপতির একাধিক পদ শূন্য থাকার কারণেই মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এটা উদ্বেগজনক। এই বক্তব্যের পাশাপাশি আদালতে দীর্ঘ ছুটি নিয়েও বৃহস্পতিবার কটাক্ষ করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, এত মামলা ঝুলে থাকা সত্ত্বেও বিচারপতিরা দীর্ঘ ছুটিতে যান। গরম ও শীতে দীর্ঘদিন ছুটিতেই থাকেন বিচারপতিরা। এটা বোধহয় ঠিক না। ছুটি নিয়ে আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে শুক্রবার পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সরকারের উদ্দেশে দেওয়া পাল্টা জবাবে চন্দ্রচূড় বলেছেন, অন্যান্যবারের মতো এবারও শীতের সময় কোনও বেঞ্চ বসবে না। মনে রাখতে হবে যে, শীত বা গ্রীষ্মের ছুটিতে সুপ্রিম কোর্ট একটি অবকাশকালীন বেঞ্চ গঠন করে। ওই অবকাশকালীন বেঞ্চে গুরুতর মামলার শুনানির হয়। একইসঙ্গে প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ২ জানুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত কোনও বেঞ্চই কাজ করবে না। শীর্ষ আদালতে অন্যান্যবারের মতো ছুটি বহাল থাকবে। এই ঘোষণার মাধ্যমে ছুটি প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যকে কার্যত ফুৎকারে করে উড়িয়ে দিল সর্বোচ্চ আদালত।
আরও পড়ুন-যোগ-ব্যায়াম
আদালতে বিচারাধীন মামলা নিয়েও সুপ্রিম কোর্টকে কটাক্ষ করেছিলেন আইনমন্ত্রী। রিজিজু বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের তুচ্ছ বিষয়ে জড়ানো উচিত নয়। শীর্ষ আদালতের উচিত সাংবিধানিক বিষয়ে শুনানি করা। আইনমন্ত্রীর ওই বক্তব্যও এদিন খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেছেন, কোনও মামলাই ছোট নয়। আদালত ছোট-বড় বিষয়ে জড়ায় না। যে বিষয়টি সামনে আসে ভালভাবে তার নিষ্পত্তি করাই আদালতের কাজ। উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। কলেজিয়ামের সুপারিশ দীর্ঘদিন আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক। কলেজিয়ামের সুপারিশ আটকে রাখায় সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে মোদি সরকারকে।