পরিবারকে সান্ত্বনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, আরজি করে ডাক্তারি পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু, তদন্ত শুরু পুলিশের

পুলিশের তরফে তৎপরতার সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হলেও এদিন হাসপাতাল চত্বরে দেহ নিয়ে রাজনীতি শুরু করে বিরোধীরা।

Must read

প্রতিবেদন : আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর রহস্যমৃত্যুর তদন্তে এক ছটাক ফাঁক রাখতে চায় না পুলিশ। কে বা কারা এই ডাক্তারি পড়ুয়াকে খুন করল তার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। একটি টিম তৈরি করে তদন্ত চালানো হচ্ছে। রাতে পাওয়া ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী গলা টিপে এবং শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই ছাত্রীকে। এত জোরে গলা টেপা হয়েছে যে কলার-বোন ভেঙে গিয়েছে মৃত ছাত্রীর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোদপুরের বাসিন্দা ওই ছাত্রীর বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সান্ত্বনা দিয়েছেন। এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ছাত্রী মৃত্যুর তদন্তে তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। সেখানে রয়েছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাঃ অপূর্ব বিশ্বাস, চিকিৎসক রিনা দাস ও মলি বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বিকেলে এই টিম ময়নাতদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখবে। পুলিশের তরফে তৎপরতার সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হলেও এদিন হাসপাতাল চত্বরে দেহ নিয়ে রাজনীতি শুরু করে বিরোধীরা।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালে যান পানিহাটির বিধায়ক ও বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাঃ সুদীপ্ত রায় জানিয়েছেন, খুন করা হয়েছে ওই চিকিৎসক ছাত্রীকে। পুলিশ তদন্ত করছে। যে বা যারা ওই ছাত্রীকে এত নৃশংসভাবে খুন করেছে তাদের উচিৎ শাস্তি হবে। কোনও অবস্থাতেই অপরাধীদের রেয়াত করা হবে না। তবে নিরাপত্তা নিয়ে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে এদিন সকালেই হাসপাতালে পৌঁছন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। যান স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম-সহ প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরা। হাসপাতালের সুপার-সহ সমস্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন তাঁরা। সন্ধ্যায় হাসপাতালে যান রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরাও। চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে চলে বৈঠক।
শুক্রবার সকালে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের সেমিনার রুমে এক তরুণী চিকিৎসক-ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই তরুণী আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পিজিটি (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং)। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ডিউটি ছিল আউটডোরে। রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খাবার খেতে গিয়েছিলেন তিনি। এবং তখনই শেষবার দেখা যায়। তারপর এদিন সকালে সেমিনার রুম খুললে সেখানে ওই তরুণীর মৃতদেহ দেখতে পান তাঁর সহকর্মীরা। এই নিয়ে হাসপাতালের তরফে এমএসভিপি সঞ্জয় বশিষ্ঠ জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। হাসপাতালের তরফে একটি কমিটি গঠন করে নিরপেক্ষভাবে ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত হবে। ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর থেকে হাসপাতালের ওই সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। সন্ধ্যায় ম্যাজিস্ট্রেট ও হাসপাতালের তৈরি করে দেওয়া কমিটির উপস্থিতিতেই হয় ময়না তদন্ত। ময়নাতদন্তের পর মর্গ থেকে দেহ বের করার সময় নোংরা রাজনীতিতে নামে বিরোধী বিজেপি ও সিপিএম। নিজেদের মধ্যেই হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।

Latest article