‘১০টা রাজবংশী স্কুলকে রাজ্য সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে গেলাম’ উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে কেন্দ্রকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর

লোকসভা ভোটের (Loksabha Election) প্রাক্কালে ৫ দিনের জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

Must read

লোকসভা ভোটের (Loksabha Election) প্রাক্কালে ৫ দিনের জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আজ, সোমবার কোচবিহার পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী আর সেখানেই সভা থেকে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি। বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করে এদিন তিনি বলেন ‘মাথাভাঙ শীতলকুচি রাস্তায় উন্নয়নের জন্য ২৯ কোটি টাকা. গোপালপুরে কমিউনিটি হল, ১ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার, গ্রামীণ রাস্তা, কমিউনিটি হল, ক্ষুদ্র শিল্প প্রকল্পে টাকা দেওয়া হয়েছে। দিনহাটা গোসাইমারা রাস্তা ১৬ কোটি টাকা খরচ করে করা হচ্ছে। মেখলিগঞ্জ চ্যাঙড়াবান্দা রাস্তা ২১ কোটি টাকা। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ২ কোটি টাকা। কোচবিহারে মেডিক্যাল কলেজের জন্য ২৫ একর জমিও দিয়েছি। ২ কোটি লক্ষ্মীর ভান্ডার পান। আরও ১৩ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডারে যুক্ত হবেন। ১০লক্ষ ওল্ড এজ পেনশন পান। অসময়ের বৃষ্টিতে চাষিদের ক্ষতি হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ চাষিকে ১০২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। মেধাশ্রী শুরু করেছে। ১০ লক্ষ টাকা করে স্মার্ট কার্ড তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রীতি করতে চায় না। আমি করব। যে জাতিই হোক, ভাষা হোক, আমরা করব। আজ ১০ হাজার চা বাগানেপ শ্রমিকদের পাট্টা দেব। আমি বাংলা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৪০ শতাংশ একশো দিনের কাজ করেছি। নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন করে দিয়েছি। গোর্খা ব্যাটেলিয়ন, জঙ্গলমহল ব্যাটেলিয়ন করে দিয়েছি। অনেকগুলো ছোট ছোট রাজবংশী স্কুল ছিল। কিন্তু সেগুলোর একটাও গর্ভমেন্টের মাইনে পেত না। নিজেরা লোকালি চালাত। তারা কোনও সুযোগ পেত না। আজকে ১০টা রাজবংশী স্কুলকে রাজ্য সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে গেলাম।’

আরও পড়ুন-‘তৃণমূল সরকার যতদিন আছে, মানুষের পাশে থাকব’ বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

এদিন ফের কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একশো দিনের কাজের টাকা দেয় না। আমি তিন থেকে চার বার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। বাংলা আবাস যোজনা। আমরা অর্ধেক দিই, ওরা অর্ধেক দেয়। সেই টাকাও জিএসটি দিয়ে তুলে নিয়ে যায়। এখন সেটাও বন্ধ। পথশ্রীতে ১২ হাজার রাস্তা করেছি। আরও ১২ হাজার গ্রামীণ রাস্তা হবে পথশ্রীতে। রাজ্য জুড়ে বাংলার সহায়তা কেন্দ্র চলছে। কারোর কাস্ট সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা হয়, তাহলে ১২ তারিখ পর্যন্ত স্টেশনে আধিকারিকরা থাকছেন। পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও থাকবেন।’ বামফ্রন্ট সরকারকে নিশানা করে এদিন তিনি বলেন, ‘৩৪ বছর বামফ্রন্ট ছিল কিছু করেছে? কোচবিহারের মানুষকে দেখত? আগেরবার বিজেপির সাংসদ জিতল, কী করেছে? আমি করে দিলাম এয়ারপোর্ট আর বাবু প্লেন চরে এসে বলছে আমি করেছি? জমিদার বাবু? ওরা তো একদিন ঘাস পুঁতেও দেখেনি, ঘাস কীভাবে পুঁততে হয়! জল প্রকল্পে বলছে, ‘হাম নে ঘর ঘর মে জল দিয়েছি’! আমি বলি, কত টাকা দিয়েছেন? ২৫ শতাংশ দিয়েছে। আর বাকি আমরা দিয়েছি। মদন মোহনের কথা মনে আসে না, দুর্গা, লক্ষ্মী, কারোর কথা মনে আসে না। ওরা যে চাপিয়ে দেবে, সেটাই আমাদের দেবতা! আমি তো কিছু বলি নি। ধর্ম যার যার, দেবতা সবার। সীতার নাম ভুলে গিয়েছে। কৌশল্যা মায়ের নাম ভুলে গিয়েছে। মা ছাড়া সন্তানের জন্ম দেয় কে, বউ ছাড়া স্বামীকে এগিয়ে দেয় কে? আমার মা-বোনেরা সন্তানের গর্ব। আমরা জন্মে নাম পাই, সারনেম পাই। কিন্তু ওটা থাক। উৎসব সবার।’

আরও পড়ুন-বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে সরে গেল মেডিক্যাল-মামলা, নির্দেশ শীর্ষ আদালতের

উত্তরবঙ্গ উন্নয়নের প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে কী করি না আমরা। ধূপগুড়ি সাব ডিভিশন চেয়েছিল, করে দিয়েছি। কোচবিহারকে হেরিটেজ টাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কোচবিহার রাজবাড়িকে সম্মান জানিয়ে মেডিক্যাল কলেজের নাম রাখা হয়েছে। ২৫ একর জমি আমরা দিয়েছি। ছিটমহল হস্তান্তর করে দিয়েছি, কোচবিহার বিমানবন্দর করে দিয়েছি ৩০০ কোটি টাকায়। হলদিবাড়ি মেখলিগঞ্জের মধ্যে জয়ী সেতু করেছি।’

আরও পড়ুন-পলিটেকনিক, আইটিআইতে মেয়েদের যোগদান বাড়াতে উদ্যোগী রাজ্য

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের চিন্তাধারাকে আক্রমণ করে বলেন, ‘আমাকে শেখাতে হয় না। আমাদের শেখানো হয়েছে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। আমাদের হাতে পাঁচটা আঙুল রয়েছে, কোনটা ছোট, কোনটা বড়। ১০০ ভাগ লোকের মধ্যে ১ ভাগ খারাপ কাজ করলে, আইন ব্যবস্থা নেবে। তার জন্য আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, আমাকে বলছে চোর। ওঁ তো একজন ডাকাত। সার্টিক হাউজে থাকলে ভাড়াটাও দিয়ে দিই। এক পয়সার চা কারোর কাছ থেকে খাই না। মিথ্যা কথা বললে, জিভ খসে পড়বে। দুটো তফসিলি মেয়ে রয়েছে আমার বাড়িতে। আমার বিছানায় শোয়। আমি ইচ্ছা করে ভোটের সময়ে রাস্তা থেকে খাবার কিনে এনে তফসিলির বাড়িতে বসে খাচ্ছি বলে নাটক করি না।’

 

Latest article