প্রতিবেদন: ক্রমশ বদলে যাচ্ছে সমুদ্রের জলের রং! নীল রংয়ের সমুদ্র হয়ে যাচ্ছে গাঢ় সবুজ। কেন? কী এর কারণ? কীসের ইঙ্গিত দিচ্ছে এই পরিবর্তন? সম্প্রতি সমুদ্র বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রকৃতির এই খেলার নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে, তার অন্বেষণে নেমে পড়েছেন বিজ্ঞানী ও গবেষকরা। একাংশ মনে করছেন, সমুদ্রের জলের এই রং বদলের পিছনে রয়েছে ‘মহাপ্রলয়ে’র ইঙ্গিত! সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে ট্রপিক্যাল রিজিয়ন বা ক্রান্তীয় এলাকায় অর্থাৎ নিরক্ষরেখার কাছাকাছি যে সমস্ত সমুদ্র রয়েছে, সেই সমস্ত সমুদ্রের জলের রং সবুজ হয়ে উঠছে। সাধারণত সমুদ্রের জলের রং নীল হয়। সেই নীল রং বদলে গিয়ে সমুদ্র হয়ে উঠছে সবুজ থেকে গাঢ় সবুজ। বিজ্ঞানীরা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনই এ জন্য দায়ী। নেচার জার্নালের প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে, সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রে বদল ঘটছে। সেই কারণেই সমুদ্রের জলের রং বদলাচ্ছে। কেননা সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের উপরই নির্ভর করে সমুদ্রের চরিত্র।
আরও পড়ুন- সাগরে ফের সাইক্লোনের ভ্রুকুটি
সমুদ্রের জল নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চালাচ্ছে দু’টি প্রতিষ্ঠান। আমেরিকার মাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এবং ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল ওলিয়ানোগ্র্যাফি সেন্টার এই গবেষণা চালাচ্ছে যৌথভাবে। তাদের গবেষণায় আবার উঠে এসেছে, সমুদ্রের জলের এই রং বদলের জন্য শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণ দায়ী নয়। এর নেপথ্যে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনও, যার জন্য পরোক্ষে দায়ী মানুষও। আমরা প্রকৃতির খেয়াল রাখছি না বলেই সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই দ্রুত বদল ঘটছে বাস্তুতন্ত্রে। বিজ্ঞানীরা বলেন, গবেষণায় ধরা পড়েছে এখন পর্যন্ত সমুদ্রের ৫৬ শতাংশ এলাকায় রং বদল হয়েছে। সমুদ্রের এই রংবদল বুঝতে সিমুলেশন চালানো হচ্ছে। সমুদ্রের উপর জলবায়ু বদলের প্রভাব বুঝতে বিজ্ঞানীরা ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের উপর নজর রেখেছিল।
গবেষকরা জানান, জলজ উদ্ভিদস্বরূপ মাইক্রো অর্গানিজম সমুদ্রের উপরিভাগে থাকে। আর এতে থাকে ক্লোরোফিল। এই ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন সামুদ্রিক খাদ্যশৃঙ্খলের অন্যতম ভিত্তি। তা কার্বন ডাই অক্সাইড সঞ্চয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০০২ থেকে গবেষণা চলছে, তাতে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তার পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ করেই তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা।