ইউনুস ও সেনাপ্রধানের দ্বন্দ্ব তীব্র

সূত্রমতে, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার দলগুলিকে একত্রিত করে দেশের জন্য নির্বাচন করতে চান।

Must read

প্রতিবেদন: অগণতান্ত্রিকভাবে দেশের ক্ষমতার শীর্ষে বসে যেভাবে নির্বাচন করানো নিয়ে চূড়ান্ত গরিমসি করছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস, তাতে ক্ষুব্ধ সেনাপ্রধান ওয়াকার উজজামান। পাকিস্তান ও মৌলবাদী সংগঠন-সহ বিদেশি শক্তি বাংলাদেশে অস্থিরতা জিইয়ে রাখতে হস্তক্ষেপ করছে বলেও মনে করেন সেনাপ্রধান। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার উজজামান চান, ইউনুস যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন ঘোষণা করুন। তাঁর সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হল বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ, যা দেশে দীর্ঘমেয়াদি অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসকে বিদেশি সংস্থাগুলির, বিশেষ করে আমেরিকার পুতুল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মঙ্গলবার দেশের পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন সেনাপ্রধান। তার একদিন আগে সেনাপ্রধান মার্কিন কূটনীতিকদের সাথে দেখা করেছিলেন।

আরও পড়ুন-ইরানের উপর ইজরায়েলের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে সতর্কবার্তা দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ

সূত্রমতে, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার দলগুলিকে একত্রিত করে দেশের জন্য নির্বাচন করতে চান। সেনাবাহিনীর এখন সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হল ইউনুস কর্তৃক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বন্দিদের নির্বিচারে মুক্তি দেওয়া। অন্য বড় উদ্বেগের বিষয় হল সেনাপ্রধানের অনুপস্থিতিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) নিয়োগ করে ইউনুসের সামরিক বাহিনীতে বিভাজন তৈরির প্রচেষ্টা। সেনাপ্রধানকে অপসারণ করতে এর আগে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমান ইউনুসের আস্থাভাজন এনএসএ খলিলুর রহমানের সাথে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিলেন। এনএসএ এবং ইউনুস সেনাপ্রধানকে অপসারণের চেষ্টা করলেও বেশিরভাগ কমান্ডার যত দ্রুত সম্ভব দেশে নির্বাচন চান। ইতিমধ্যে, সেনাপ্রধান স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি নাগরিক সমাজের কোনও চাপ সহ্য করবেন না। সেনাপ্রধানের অফিস বা বাড়ির দিকে যেকোনও প্রতিবাদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সূত্র বলছে, সেনাপ্রধান প্রথমে ইউনুসকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিদেশি হস্তক্ষেপের কারণে সেনাপ্রধান এখন দ্রুত নির্বাচন চান। গত বছরের আগস্টে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা সহিংসতার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। অভ্যুত্থানের পর, বাংলাদেশি সামরিক বাহিনী এবং প্রতিবাদী গোষ্ঠীগুলি নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন করে।
তবে, ইউনুস নির্বাচিত নন এবং তাঁর কোনও গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব নেই। তা সত্ত্বেও তিনি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা এবং শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশ আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। সেনাপ্রধানকে সাধারণত ভারতপন্থী বলে মনে করা হয়। তিনি ইসলামি মৌলবাদীদের সমর্থন করেন না, যদিও ইউনুস এবং তাঁর প্রশাসন পাকিস্তানপন্থী এবং তাদের প্রধান সমর্থকেরা বাংলাদেশ এবং বিদেশে উগ্র ইসলামপন্থার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। এই অবস্থায় গণতান্ত্রিক নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নেই বলে মনে করেন সেনাপ্রধান।

Latest article