প্রতিবেদন : বাংলার মাটি শ্রীরামকৃষ্ণ, নেতাজি, রবি ঠাকুর, নজরুল, দেশবন্ধুর মাটি। বিদ্যাসাগর এখানেই জন্মেছিলেন। ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়-বাদল-দীনেশ, মাতঙ্গিনী হাজরাদের রক্তের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি ছিল বাংলা। বাংলা না থাকলে দেশ স্বাধীন হতো নাকি! কন্যাশ্রী দিবসে আর একবার বাংলার অস্মিতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথাম রদ করেছিলেন। বাবাসাহেব আম্বেদকর এই বাংলা থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দেশ যেদিন স্বাধীন হয়েছিল, সেদিন জাতির পিতা গান্ধীজি এই কলকাতার বেলেঘাটায় ছিলেন। বাংলাকে যারা অপমান করতে চায় তারা আসলে দেশকে অপমান করে। ইতিহাস জানে না। বাংলায় কথা বললেই আক্রমণ নেমে আসছে বাঙালিদের উপর। বিজেপি-রাজ্যে আক্রান্ত হতে হচ্ছে নির্মমভাবে। বৃহস্পতিবার ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠান থেকে বাংলাকে অপমানের প্রতিবাদে কেন্দ্রকে চড়া সুরে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হুঙ্কার, কেন বাংলাকে অপমান করবেন! বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি? বাংলা নাকি কোনও ভাষাই নয়! তাহলে জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় গান কোন ভাষায় রচিত হয়েছিল? এরপরই কন্যাশ্রীদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, সব ভাষা শিখুন কিন্তু মাতৃভাষাকে কখনও ভুলবেন না। বাংলার মাটিকে ভুলবেন না, বাংলা মাকে ভুলবেন না।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, বাংলা ভাষার মতো মাধুর্য কোথাও পাবেন না। প্রয়োজনে অবশ্যই ইংরেজি শিক্ষা দরকার। কিন্তু বাংলা ভুলে নয়। সব ভাষাই জানা উচিত। যত ভাষা শিখবেন তত উন্নত হবেন। বাংলাভাষাকে সম্মান করার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সকলকে বলব, বিশ্বের মুকুট আপনার মাথায় পরুন। বিশ্ব জয় করুন। নাসা থেকে ভাষা— সর্বত্রই বাংলা। আমাদের বাংলার মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি। আমি মনে করি দেশের সেরা বাংলা, বিশ্বসেরা বাংলা। উৎসবে সেরা বাংলা। উন্নয়নে সেরা বাংলা।
আরও পড়ুন-মঙ্গলবারের মধ্যে বাদ ভোটারদের নাম প্রকাশের নির্দেশ শীর্ষ আদালতের, বিরাট জয়! মন্তব্য দেবাংশুর
তাঁর আরও সংযোজন, বাংলার মাটি রামকৃষ্ণ, স্বামীজি, নেতাজি, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বিদ্যাসাগরের মাটি। ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়, বাদল, দীনেশ, মাতঙ্গিনী হাজরাদের মাটি। রবীন্দ্রনাথ পঞ্জাব থেকে শুরু করে বাংলা দিয়ে শেষ করেছিলেন জাতীয় সঙ্গীত। বাংলা না থাকলে ভারত স্বাধীনতা পেত না। রাজা রামমোহন রায় বাংলা থেকে সতীদাহ প্রথা রদ করেছিলেন। বাবাসাহেব আম্বেদকর নির্বাচিত হয়েছিলেন এই বাংলা থেকে। যেদিন স্বাধীন ভারত শপথ গ্রহণ করছে সেদিন গান্ধীজি ছিলেন এই বাংলায় বেলেঘাটার গান্ধী আশ্রমে। তিনি তখন দাঙ্গা রোধে ব্যস্ত ছিলেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী একহাত নেন বিজেপিকে। নাম না করে তিনি বলেন, যারা একদিন এককাপড়ে চলে এসেছিলেন তাঁরা তো নাগরিক বলে গণ্য হয়েছিলেন। যাঁরা অবৈধভাবে এসেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। কিন্তু অযথা বাংলায় কথা বলার জন্য বিদেশি তকমা দেওয়া হচ্ছে। তোমরা বাংলা ভাষাকে অপমান করবে কেন! এই অপমান বাংলার মানুষ মেনে নেবে না। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন জাতীয় সঙ্গীত। বন্দে মাতরম্ বঙ্কিমচন্দ্রের। জয় হিন্দ্ সুভাষচন্দ্রের। আমরা ‘জয় বাংলা’ বলি কারণ আমরা চাই বাংলা বিশ্ববাংলা হোক।