আর জি কর (RG Kar) মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ। বৃহস্পতিবার, শিয়ালদহ আদালতে (Sealdah Court) জানিয়ে দিল ১৮ জানুয়ারি দুপুর ২টোয় এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবেন বিচারক।
আরও পড়ুন-শম্ভু সীমান্তে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা আন্দোলনরত এক কৃষকের
গত বছরের ৮ অগস্ট আরজি করে ডাক্তারি ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। তদন্তে নেমে ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। এরপর তদন্তভার হাতে নিয়ে আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ারকেই অভিযুক্ত হিসাবে চার্জশিটে উল্লেখ করেছে সিবিআই। প্রাথমিক তদন্তে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে সঞ্জয় রায়কে সেমিনার হলের বাইরে দেখা গেছিল। ঘটনাস্থল থেকে তার হেডফোনও পাওয়া গেছিল। সেই সূত্র ধরেই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করতে তদন্তের মাধ্যমে এগিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ।
আরজি কর-কাণ্ডের ৫ মাস পূরণের দিন রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করে দিলেন বিচারক। এবং মামলা শুরুর ৬০ দিনের মাথায় হবে রায়দান।
গত ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বহিষ্কৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাইকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু চিকিৎসকদের দাবি মেনে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার হাতে নেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। কিন্তু কেন্দ্রের এজেন্সিও কলকাতা পুলিশের তদন্তকেই সিলমোহর দেয়। লালবাজারের গোয়েন্দারা যে সঠিক পথেই তদন্ত করছিলেন, তাকে মান্যতা দিয়ে শিয়ালদহ আদালতের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টেও সঞ্জয় রাইকেই ধর্ষণ-খুনের মূল কালপ্রিট হিসেবে চিহ্নিত করে সিবিআই। এবার শিয়ালদহ আদালতও সঞ্জয়কেই মূল অপরাধী হিসেবে মেনে নিয়ে তার বিরুদ্ধে রায় দেবে আগামী ১৮ তারিখ।
আরও পড়ুন-মানালিতে প্যারাগ্লাইডিংয়ের সময় নীচে পড়ে মৃত্যু পর্যটকের
মূল ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সঞ্জয়ের নামে চার্জশিট পেশ ও চার্জগঠনের পর গত নভেম্বর মাসে শুরু হয়েছিল বিচারপর্ব। ১১ নভেম্বর থেকে শিয়ালদহ আদালতে ধৃত সঞ্জয় রাইয়ের বিরুদ্ধে শুরু হয় রুদ্ধদ্বার ‘ইন-ক্যামেরা’ সাক্ষ্যগ্রহণ। নির্যাতিতার বাবা, সহকর্মী জুনিয়র চিকিৎসক, কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিক, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ-সহ ধাপে ধাপে মোট ৫৩ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয় নিম্ন আদালতে। তারপর শোনা হয় সিবিআই ও সঞ্জয়ের তরফের আইনজীবীদের বক্তব্য। কলকাতা পুলিশের তদন্তকেই মান্যতা দিয়ে সিবিআইও সঞ্জয়কেই মূল কালপ্রিট হিসেবে চিহ্নিত করে তার সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছে। ক্লোজিং সাবমিশনে সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবি করেছে কেন্দ্রের এজেন্সিও। যদিও নির্যাতিতার বাবা-মা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তারা সিবিআই চাননি। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার দিনই বলেছিলেন, আমাকে একটু সময় দিন। দোষীর সাজা হবেই। ফাঁসির সাজাই হবে। কিন্তু অহেতুক রাজনীতি করতে গিয়ে সেই সময় দেওয়া হয়নি। আদালতের নির্দেশে হয়েছে বাকি তদন্ত।