গুড়াপে (Gurap Rape-Murder Case) নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল চুঁচুড়া আদালত। ঘটনার ৫৪ দিনের মাথায় রায়দান আদালতের। ১৭ জানুয়ারি এই মামলায় শাস্তি ঘোষণা। দোষীকে ফাঁসির সাজা শোনালো আদালত। রায় ঘোষণার পর গুড়াপ থানা জিন্দাবাদ স্লোগান ওঠে আদালত চত্বরে।
গত ২৪ নভেম্বর, রবিবার গুড়াপের একটি গ্রামে নাবালিকাকে ধর্ষণ (Gurap Rape-Murder Case) করে খুনের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সুপার কামনাশিস সেনের নেতৃত্বে সিট গঠন করে এই মামলার তদন্ত শুরু করেছিল হুগলি পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একাধিক প্রমাণ পেশ করা হয় আদালতে। এই মামলায় ৯ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। ১১ তারিখ চার্জ গঠন হয়। মোট ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। অবশেষে গত বুধবার অভিযুক্ত অশোক সিং-কে দোষী সাব্যস্ত করেন চুঁচুড়া পকসো আদালতের বিচারক চন্দ্রপ্রভা চক্রবর্তী। আজ শাস্তি ঘোষণা হল।
ঘটনার দিন সন্ধেয় পাশের বাড়িতে খেলতে গিয়েছিল শিশুটি। বেশ কিছুক্ষণ ধরেই তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের লোকজন। প্রতিবেশীরা মেয়েটিকে খোঁজার পর অবশেষে প্রতিবেশী অশোক সিং-এর বাড়িতে তাকে পাওয়া যায়। প্রতক্ষদর্শীরা জানান উদ্ধার করার সময় নাবালিকা বিবস্ত্র অবস্থায় ছিল। তাকে হত্যা করে কম্বল, মশারি, কাঠ চাপা দিয়ে ঘরে রেখে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। শিশুটির দেহ খুঁজে পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। গুড়াপ থানার পুলিশ অভিযুক্ত প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করে। পকসো আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
আরও পড়ুন- সিমলিপালে খুন বিরল বাঘ! প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে
ফাঁসির রায় শোনার পরই আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে নাবালিকার পরিবার সহ এলাকার মানুষ। পুলিশের নামে জিন্দাবাদ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে আদালত চত্বর। গুড়াপ থানার পুলিশ আধিকারিকদের সাধারণ মানুষ ফুলের মালা পরিয়ে দেন। চোখের জল মুছতে মুছতে নাবালিকার মা বলেন, আজ আমার মেয়ের জন্মদিন। আর আজকের দিনেই এই রায় যেন মেয়ের আত্মার শান্তির জন্যই এই রায়। প্রথম দিন থেকেই পুলিশ আধিকারিকরা খুবই সাহায্য করেছে সকলকে ধন্যবাদ।
নাবালিকার বাবা সুজিত সামুই বলেন, আজ মেয়ের জন্মদিন আর আজকে এই রায় ঐতিহাসিক। আমি চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেন ফাঁসি হয়ে যায়। হুগলি জেলার পুলিশকে ধন্যবাদ তারা প্রথম থেকে যে কথা দিয়েছিল আজ সেটাই হয়েছে। আমাদের এলাকার পার্টির লোক সাধারণ মানুষ সকলেই আমাদের পাশে থেকেছে। এত তাড়াতাড়ি এই রায় হবে ভাবতে পারিনি কিন্তু হয়েছে খুবই খুশি হয়েছি। মহামান্য আদালতকে ধন্যবাদ। আর আমি চাই সমাজে যেন এমন ঘটনা না ঘটে আমি আমার মেয়েকে হারিয়েছি কিন্তু আর যেন কেউ কারো মেয়েকে না হারায়। সকল মেয়েরা যেন সুরক্ষিত থাকে ভালো থাকে তাদের পরিবারের কাছে।