প্রতিবেদন: নেপথ্যে অবশ্যই গেরুয়া পুলিশ-প্রশাসনের অপদার্থতা। বহাল তবিয়তেই ছিল বাংলাদেশিরা। এবার পরিস্থিতির চাপে রাজধানী দিল্লি এবং বাণিজ্য রাজধানী মুম্বইতে একের পর এক ধরা পড়ছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা। জাল নথির দৌলতে তারা দীর্ঘদিন ধরে থাকছিল সেখানে। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিভিন্ন কাজকর্মও করছিল। কেউ কেউ দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছিল বেআইনি কীর্তিকলাপও। প্রশাসনের নাকের ডগাতেই। ভুয়ো পাসপোর্ট, ভিসা আধার কার্ড-সহ বিভিন্ন জাল নথি তৈরির চক্রের জালও অমিত শাহের পুলিশের দিল্লি এবং গেরুয়া মুম্বইজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে খবর এসেছে। জাল নথির চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্রের থানেতেও। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতায় এতদিনে ঘুম ভেঙেছে দিল্লি এবং মুম্বাই পুলিশের।
আরও পড়ুন-এখনও ৩% রেফার কেন? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর
বেআইনিভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের খুঁজে বের করতে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান। বুধবার রাতে দিল্লিতে বিশেষ অভিযানে এক বাংলাদেশি নাগরিক বিলাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে আরও দুই ভারতীয় নাগরিক অনিমুর ইসলাম ও আশিস মেহেরাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য জাল নথি তৈরি করত। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বিলাল ও তার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ভারতে বসবাস করছিলেন। তারা অন্য বাংলাদেশিদেরও জাল নথি তৈরি করে ভারতে আনার কাজে জড়িত ছিল। অপরদিকে, অনিমুর ইসলাম এবং আশিস মেহেরা অনুপ্রবেশকারীদের জন্য জাল আধার কার্ড ও অন্যান্য নথি তৈরি করত। যদিও মাস্টারমাইন্ড আনিস শেখ ও তাঁর স্ত্রী বাংলাদেশে চম্পট দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। লক্ষণীয়, ইতিমধ্যেই দিল্লিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী ১১ বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে দিল্লি পুলিশের বিশেষ বাংলাদেশ সেল। চিহ্নিত করা হয়েছে আরও ১৭৫ জনকে। এদিকে মুম্বাই, থানে সহ মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তেও বহাল তবিয়তে বসবাস করছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা। মহারাষ্ট্রের থানেতে অবৈধভাবে বাস করার জন্য ৩ বাংলাদেশি মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ তার আগে ১৬ জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল৷ ফলে গত দু’দিনে অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা ১৯৷ সব মিলিয়ে ধৃতের সংখ্যা ৪৬৷ মঙ্গলবার পুলিশ বর্তক নগরের একটি এলাকায় অভিযান চালায়৷ একটি ঘরে থাকা ওই ৩ মহিলাকে খুঁজে পায় পুলিশ। জানা গিয়েছে, প্রত্যেকের বয়স ২২ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে৷ ওই ৩ মহিলা হোটেলে ওয়েটার হিসাবে কাজ করত৷ পুলিশি জেরার মুখে তারা ভারতে প্রবেশ এবং থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কোনও নথি দেখাতে পারেনি৷ তারপরেই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে৷ বুধবারই মুম্বাই, থানে ও মহারাষ্ট্রের অন্য ৩ জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বাংলাদেশের ১৬ জন নাগরিককে৷ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্র অ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াড৷ সবমিলিয়ে এটা প্রমাণিত, প্রশাসনিক অপদার্থতার সুযোগ নিয়ে দিল্লি, মুম্বাই এবং মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় একেবারে জাঁকিয়ে বসেছে বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশকারী বাংলাদেশিরা।