প্রতিবেদন : লোকসভা ভোটের জেরে ব্যাহত হওয়া রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ যাতে সময়ে শেষ করা যায় সেজন্য প্রশাসনকে পূর্ণ শক্তি নিয়োজিত করতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটের পর মঙ্গলবার নবান্নে এক উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উন্নয়নের কাজের হাল হকিকত খতিয়ে দেখেন। কোথায় আর্থিক বরাদ্দ রয়েছে, কোথায় কতটা কাজ এগিয়েছে, চলতে থাকা কাজ কতটা বাকি রয়েছে, নতুন করে আরও কিছু লাগবে কি না তা সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী ও আমলাদের কাছে জানতে চান।
আরও পড়ুন-এপ্রিল থেকে বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা পাবেন সব সরকারি কর্মচারীরাই
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন মুড়িগঙ্গা সেতু নির্মাণের কাজও দ্রুত শুরু করা হবে। খুব তাড়াতাড়ি গ্লোবাল টেন্ডার হবে মুড়িগঙ্গা সেতুর জন্য। নবান্নের বৈঠকে আবাস যোজনা নিয়েও আলোচনা হয় বলেই সূত্রের খবর। একইসঙ্গে আবাস প্রকল্পের যোগ্য উপভোক্তাদের খুঁজে বের করতে নতুন করে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি উত্তরের জলপাইগুড়িতে টর্নেডোয় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও রিমেলে সুন্দরবন-সহ উপকূলবর্তী অঞ্চলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুর্গত এলাকার পুনর্গঠন ও বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের কাজ দ্রুত শেষ করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, বার্ধক্যভাতা, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, কৃষকভাতা, সবুজসাথী, যোগ্যশ্রী-সহ সমস্ত সরকারি প্রকল্পের সুবিধে সকলের কাছে সময়মতো পৌঁছতে বলা হয়েছে। আসন্ন বর্ষার মরশুমকে সামনে রেখে বাঁধ মেরামতি, শস্যহানি রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে গতি আনতে বলা হয়েছে।
অতি বৃষ্টির কারণে যদি ফসলের ক্ষতি হয় সেক্ষেত্রেও কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন তার জন্য শস্যবিমার টাকাও যাতে সঠিক সময়ে তাঁরা পান সেদিকে নজর রাখতে হবে। এদিন বৈঠকে প্রতিটি জেলা ধরে পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-যোগ্যশ্রীতে সুযোগ সংখ্যালঘু-সাধারণ মানুষেরও
রীতিমতো তথ্য-পরিসংখ্যান-সহ বর্তমান পরিস্থিতি বুঝে নিয়ে সেই মতো প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। দীর্ঘ ভোট-পর্বের কারণে বহু জায়গায় কাজ অর্ধসমাপ্ত রয়েছে। বিশেষ করে রাস্তা, পানীয় জল, আলো-সহ পঞ্চায়েত এলাকায় সার্বিক উন্নয়নকে আরও জোরদার করতে প্রশাসনকে অবিলম্বে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের একাধিক প্রকল্পের টাকা দিচ্ছে না। যেটুকু করের টাকা দিয়েছে তা যৎসামান্য। সব খরচ রাজ্য সরকারই করছে, করবেও।
এদিন নবান্ন সভাঘরে ওই বৈঠকে রাজ্যের সব দফতরের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, বিভাগীয় সচিব, ডিভিশনাল কমিশনার, যুগ্মসচিব ও তার উপরের স্তরের সমস্ত আধিকারিক ও জেলাশাসকরা সশরীরে উপস্থিত ছিলেন।