বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী l আলিপুরদুয়ার: দুর্গম বক্সায় কষ্টকর জীবনযাপন। বাড়ির পাশের সামান্য সমতল জায়গায় ছোট থেকেই কাগজ দিয়ে ফুটবল বানিয়ে খেলত বক্সা পাহাড়ের চুনাভাটি গ্রামের সবার প্রিয় ছোট্ট হনুপ ডুকপ্পা, ওরফে লেপ্ট সেরিং। সেই ছোটবেলা থেকেই ফুটবল প্রেম, তাকে সব কাজের ফাঁকেও ওই এক চিলতে সমতল ভূমিটিতে টেনে নিয়ে যেত প্রায় প্রতিদিন। কিন্তু গরিব পাহাড়ি পরিবারে খেলা, সে তো বিলাসিতা! বাবার সামান্য ভুট্টা চাষ ও দাদার মেষপালনের ওপর যে সংসারের উনুন জ্বলে সেখানে খেলাকে ক্যারিয়ার করা অলীক স্বপ্ন মাত্র। সেখান থেকে স্বপ্নপূরণের পথে সবার প্রিয় সেরিং। অনেক পথ পেরিয়ে এখন সেরিং সুযোগ পেয়েছে ইষ্ট বেঙ্গল ক্লাবের অনুর্ধ ১৭ দলে। জেলা ক্রীড়া সংস্থাও সেরিংয়ের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন-সীমান্ত রক্ষায় বিএসএফ ব্যর্থ, সামলাচ্ছে রাজ্য
ছোট্ট এই ছেলেটি যেন আরও অনেক দুর এগিয়ে যেতে পারে তা দেখবে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সঞ্চয় ঘোষ বলেন, সেরিংয়ের ফুটবলে এগিয়ে নিয়ে যেতে সমস্ত রকমের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। কেমন ছিল সেরিংয়ের সেই লড়াইয়ের দিন? বাড়িতে না জানিয়ে গোপনে টুরিস্ট গাইডের কাজ করেছি। হাতে কিছু পয়সা আসতেই সোজা পাহাড় থেকে জঙ্গলের পথ ধরে আলিপুরদুয়ার। বুট ও জার্সি কিনে বিকেলের মধ্যে বক্সা বন্দী শিবিরের পাশের বড় মাঠে। খেলা দেখে মুগ্ধ হয়ে পরেন পাহাড়বাসীরা। এরপর জয়গাঁও ফুটবল অ্যাকাডেমিতে যোগ। তার খেলা দেখে তাকে বিনে পয়সায় খেলা শেখাতে শুরু করে তার কোচ গোবিন্দ বিস্বা। ততদিনে ফুটবলের গুরুত্ব কিছুটা বোঝে তার পরিবার। দাদা ও বোনেরা মিলে তার থাকবার ও খাবারের ব্যাবস্থা করে জয়গাঁওতে। এরপর বীরপাড়ায় প্রাথমিক ও পরে শিলিগুড়িতে ট্রায়ালে নির্বাচিত হয়ে সোজা জয়গা পায় কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অনুর্ধ ১৭-র দলে।