সংবাদদাতা, কোচবিহার : ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলে গিয়েছে গ্রামের চেহারাটা। রবিবার সকাল পর্যন্ত যেখানে ছিল জল্পেশ মন্দিরে যাওয়ার উচ্ছ্বাস, সোমবার সেখানে শ্মশানের স্তব্ধতা। মাঝেমধ্যেই ভেসে আসছে কান্নার রোল। আর বুকচাপড়ানো হাহাকার। চিৎকার করে কাঁদছেন কোনও মা, ‘ছেলেটা আর বলবে না, মা ভাত বাড়।’ কেউ বলছেন ‘কেন যে যেতে দিলাম! বাবার মাথায় জল ঢালতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরল না মানুষটা।’
আরও পড়ুন-বাড়ছে জলস্তর, বিপর্যস্ত ডুয়ার্স
রবিবার রাতে গাড়িতে জেনারেটর থেকে শর্টসার্কিট হয়ে মৃত শুভঙ্কর বর্মন, স্বপন বর্মন, বাদল বর্মন, বিশাল তির্কি, বিভাস বর্মন, বিক্রম বৈশ্য, বাপি বর্মন, লক্ষ্মণ বর্মন, মানব বর্মন, সুশান্ত বর্মনদের বাড়ির চেহারাটা এমনই। ঘটনার জেরে এলাকায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাড়ির ছেলেকে আর ফিরে পাবেন না ভাবতেই পারছেন না মৃতদের পরিবারের সদস্যরা। এই বিষয়ে শীতলকুচি পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ পূর্ণগোবিন্দ সিংহ বলেন, ‘মর্মান্তিক ঘটনা। সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই। এরকম ঘটনা যেন আর কখনও না হয় এটাই কামনা করি।’
আরও পড়ুন-শীঘ্রই ২১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ
রবিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ শীতলকুচি থানার অন্তর্গত গোলেনাওহাটি গ্রামপঞ্চায়েতের মিরাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে পিকআপ ভ্যানে ময়নাগুড়ি জল্পেশ মন্দিরে শিবঠাকুরের মাথায় জল ঢালার জন্য রওনা হয়েছিল ৩৬ জন পুণ্যার্থী। কিন্তু আর পুজো দেওয়া হল না। তাদের মধ্যে ১০ জন পূর্ণার্থীর মাথাভাঙা মহকুমার পুলিশ মর্গ থেকে আজ নিথর দেহ বাড়ি ফিরল। তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৬-১৮ বছরের মধ্যে। সোমবার ভোররাতে দেহগুলি মাথাভাঙা মহকুমার পুলিশ মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য আনা হয়।