সুমন তালুকদার টাকি: কার্তিকী অমাবস্যায় চার শতাধিক বছরের টাকি কূলেশ্বরী কালীবাড়ি একেবারে অন্য চেহারা নেয়। অতীত দিনের ধারাকে বজায় রেখে আজও প্রচুর ভক্তের সমাগম ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের টাকি পুরসভার এই মন্দিরে। টাকি, হাসনাবাদ, শাকচূঁড়া, বসিরহাট-সহ দূর-দূরান্ত থেকে প্রচুর ভক্ত এবং দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে কূলেশ্বরী কালী মায়ের চরণতলে পুজো দিতে। পুজোর আগে ও পরে কামান দাগা এখন ইতিহাস।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রকল্পের সাফল্য, দুর্ঘটনাপ্রবণ রাজ্যের তালিকায় নেই বাংলা
তবে এখানকার শ্যামা মা জাগ্রত হওয়ায় আজও মানুষের কাছে সমাদৃত কূলেশ্বরী কালীবাড়ি। কালীপুজোর দিন আদিমন্দিরে মায়ের বিশেষ পুজোর পর এখানে অমাবস্যার মধ্যে মায়ের পুজো সম্পন্ন হয়। ছাগ বলি, কুমড়ো বলির প্রচলন এখনও আছে। কয়েক বছর আগেও একশোর বেশি ছাগ বলি হত। এখন সেখানে পঞ্চাশটির মতো ছাগ বলি হয়। মহিষবলি প্রথা এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বলি দেওয়ার জন্য কামারবাড়ি থেকে তিনজনকে আনা হয়। পরদিন মায়ের ভোগ চড়ানোর জন্য রান্না হয় খিচুড়ি, পোলাও, পক্কান্ন, সবজি, মাছের ঝোল, পাঁঠার ঝোল প্রভৃতি। কূলেশ্বরী কালীবাড়ির প্রতিমার চারটি হাতই রুপোর। পুজোর সময় কূলেশ্বরী মা-কে প্রচুর ফুল ও গয়না দিয়ে সাজানো হয়। এছাড়াও কালীপূজার দিন প্রতিবছর টাকি মা কূলেশ্বরী সেবাশ্রম সংঘেও দেবীর আরাধনা হয়। পুজোর সময় এত বেশি মানুযের আগমন ঘটে যে, হাসনাবাদ থানা থেকে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন-কালোবাজারি প্রতিরোধে অভিযানে নামছে টাস্কফোর্স, পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে তৎপর রাজ্য
প্রাচীন এই মন্দিরটির প্রতিষ্ঠা রাজা প্রতাপাদিত্যের সময়ে। সেসময় খড় ও গোলপাতার চালে মাটির ঘরে পুজো হত। পরে সংস্কার হয়ে পাকা মন্দির হয়। জাগ্রত এই মন্দিরটির সংস্কারের জন্য ভক্তদের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’বারে মোট ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। কথিত আছে যে, এই কূলেশ্বরী কালীর আদি মন্দির হাসনাবাদের রজিপুরের কালীতলা। সেখানকার বিসর্জন দেওয়া ঘট ইছামতী নদীর কূলে ভেসে আসায় সেই ঘটেই কূলেশ্বরী কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠা হয়।