প্রতিবেদন : একেই বলে মিথ্যার বেসাতি। নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে গেরুয়া নেতারা নির্লজ্জভাবে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ঠিক কতটা নীচে নামতে পারেন তা দেখিয়ে দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সভাসমিতিতে গলা ফাটিয়ে দাবি করছেন কর্মসংস্থানে যুগান্তকারী পদক্ষেপ করেছে গেরুয়া সরকার। অথচ তাঁর নিজের রাজ্যেই গত ১৭ মাসে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে ১৮ লক্ষ ২০ হাজার ৭১৩। রাজ্যে নথিভুক্ত বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩৫৬। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, যে গেরুয়া মুখ্যমন্ত্রীর নিজের রাজ্যেই কাজের জন্য এমন হাহাকার, তিনি মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে দলের প্রার্থীদের জন্য ভোটভিক্ষা করেন কোন লজ্জায়?
আরও পড়ুন-নীতীশের বিহারে পড়ুয়াকে পিটিয়ে মারল দুষ্কৃতীরা, ছাত্র-বিক্ষোভে উত্তাল পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়
বিজেপির নির্বাচনী প্রচারে তারকা প্রচারকের তকমা লাগিয়ে দেশজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন হিমন্ত। অনেক ভাষণেই তিনি নিজের রাজ্য অসমের ‘সুশাসনের’ কাহিনি শুনিয়ে বেড়াচ্ছেন অন্য রাজ্যের ভোটারদের প্রলুদ্ধ করতে। কোথাও কোথাও হুঙ্কার দিচ্ছেন ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার। কিন্তু অসমের এই ‘সুশাসন’-এর আসল ছবিটায় চোখ বোলালেই স্পষ্ট হবে হিমন্তের মিথ্যাচার। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারযুদ্ধে হিমন্ত ও তাঁর দল বিজেপির নেতারা কর্মসংস্থানের মিথ্যা তথ্য এবং প্রতিশ্রুতিকে অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। রাজ্যের শাসকজোট দাবি করেছে, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানে যুগান্তকারী পদক্ষেপ করেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। সত্যিই কি তাই? সরকারি পরিসংখ্যান তো বলছে অন্য কথা।
আরও পড়ুন-সরকারি শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন ৮ সপ্তাহ সময় বেঁধে দিল কোর্ট
গত ১৭ মাসে আসামে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে ১৮ লক্ষ ২০ হাজার ৭১৩ জন। রাজ্যের এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬১৩ জন বেকার যুবক-যুবতীর নাম নথিভুক্ত ছিল। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি মে মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত, মাত্র ১৭ মাসে নতুন নথিভুক্ত বেকারের সংখ্যা ১৮ লক্ষ ২০ হাজার ৭১৩ জন। অর্থাৎ, বর্তমানে আসামে নথিভুক্ত বেকারের মোট সংখ্যা ২৮ লক্ষ ৫৫ হাজার, ৩৫৬ জন। নির্বাচনী প্রচারে ঢাকঢোল পিটিয়ে বলা হচ্ছে, এক লক্ষ বেকারকে চাকরি দেওয়ার কথা। অথচ ভয়াবহভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কর্মহীন শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর সংখ্যা। এটাই বিজেপির ‘সুশাসনের’ নমুনা। মিথ্যাচারের দৃষ্টান্ত।