সংবাদদাতা, বোলপুর : বোলপুরের রজতপুরে এক পরিবারের তিনজন খুনের ঘটনার নেপথ্যে পরকীয়া। তার জেরে ঘটনাস্থলে মা ও সন্তান এবং বেসরকারি নার্সিংহোমে মারা যান গৃহকর্তা। ভ্রাতৃবধূর পরকীয়া দেখে ফেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় বেঘোরে প্রাণ দিতে হল একই পরিবারের তিনজনকে। দাহ্য পদার্থ ছুঁড়ে আগুন লাগিয়ে এক পরিবারের ৩ সদস্যকে হত্যা করার ঘটনায় দুই সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরকীয়ার জেরেই এই খুন। ঘটনার পর ওই পরিবারের সঙ্গে প্রথম থেকেই যোগাযোগ রেখে চলেন জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ। না হলে হয়তো বগটুইয়ের মতো আরেক ঘটনা ঘটতে পারত। কাজল শেখের শ্বশুরবাড়ি রজতপুরে মৃতদের বাড়ির পাশেই। কাজল জানান, পরকীয়ার জেরেই এই তিন খুন।
আরও পড়ুন-রঘুনাথগঞ্জের বাপ্পার গড়া জগন্নাথের দারুমূর্তি বিদেশে
প্রসঙ্গত, ঘটনাস্থলে মা ও শিশু অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। গৃহকর্তা আব্দুল আলিম বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে স্থানান্তরিত হয়ে চাঁদাইপুরে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত শনিবার ভোররাতে মারা যান। জানা গিয়েছে, আব্দুলের তুতো ভাই এবং তাঁর স্ত্রী রূপা বিবি জানতেন, ভাইয়ের স্ত্রী স্মৃতি বিবির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার সফিকুল ইসলামের। দু’জনের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের দৃশ্য দেখে ফেলেন ভাসুর। প্রতিহিংসা থেকেই অভিযুক্ত দু’জন পুরো পরিবারকে আগুন লাগিয়ে খুন করার মতো এই নারকীয় ঘটনা ঘটায় বলে প্রতিবেশীদের দাবি। শনিবার সকালে শেখ আব্দুলের মৃত্যুর খবর গ্রামে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসী। তাঁদের দাবি, মৃত আব্দুলের ভাই রতন শেখের স্ত্রী স্মৃতি বিবির সঙ্গে দীর্ঘদিন অবৈধ সম্পর্ক ছিল পাশের গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার সফিকুল ইসলামের। আর এই নিয়ে পরিবারে ছিল দীর্ঘদিনের বিবাদ। হাতুড়ের বাড়ি সুপুর বানপাড়ায়। বিষয়টি জানাজানি হতেই তার আক্রোশ বাড়ে আব্দুল আলিমের পরিবারের উপর। তারপরই এই মর্মান্তিক ঘটনা। ইতিমধ্যেই বোলপুর থানার পুলিশ সফিকুল ও রতন শেখের স্ত্রী স্মৃতি বিবিকে আটক করে। দু’জনের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ফিস্টের পর খাওয়াদাওয়া সেরে একতলার ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন শেখ আব্দুল, স্ত্রী রূপা বিবি ও শিশুপুত্র আয়ান। খোলা ছিল ঘরের জানালা। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অভিযুক্তরা নৃশংস ঘটনা ঘটায় বলে পুলিশের অনুমান। জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল।