বিয়ে নিয়ে বচসা, মেয়েকে গুলি করে মারল বাবা

ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটা? প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, হত তরুণীর নাম তনু গুর্জর। বাড়ি গোয়ালিয়রের গোল কা মন্দির এলাকায়।

Must read

প্রতিবেদন: পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদে্র উপস্থিতিতেই অনারকিলিং গেরুয়া রাজ্যে। ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে এসপি- সহ পদস্থ পুলিশ অফিসারদের সামনেই মেয়েকে গুলি করে খুন করল বাবা। জেদ ধরে বসেছিলেন মেয়ে। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, নিজের পছন্দের ছেলে ছাড়া অন্য কাউকেই বিয়ে করবেন না। সেই রাগেই পুলিশকে সামনে দাঁড় করিয়েই ২০ বছরের তরুণী মেয়েকে গুলি করে করল বাবা। বোনকে খুন করতে বাবাকে সাহায্য করল তরুণীর সম্পর্কিত এক দাদাও। ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটির সাক্ষী বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ। মঙ্গলবার রাতে ন্যক্কারজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে গোয়ালিয়রে। বাবার ঠিক করা পাত্রের সঙ্গে বিয়ের ঠিক ৪ দিন আগে। খুনি বাবা মহেশ গুর্জরকে গ্রেফতার করা হলেও দাদাকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি গেরুয়া পুলিশ।প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশের সামনে কীভাবে এমন ভয়ঙ্কর খুনের ঘটনা ঘটতে পারল? পুলিশ আটকালো না কেন উন্মত্ত বাবাকে? বিজেপির শাসনে এতটাই অযোগ্য, অপদার্থ, মেরুদণ্ডহীন পুলিশ?

আরও পড়ুন-কাঁপছে পাহাড়, দার্জিলিঙ চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচায় হিটার

ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটা? প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, হত তরুণীর নাম তনু গুর্জর। বাড়ি গোয়ালিয়রের গোল কা মন্দির এলাকায়। ভিকি ওরফে ভিকম মাওয়াই নামে যোগীরাজ্যের আগ্রার এক যুবকের সঙ্গে তনুর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। ৬ বছরের গভীর প্রেম। কিন্তু সেই সম্পর্ককে বিয়ের পরিণতি দিতে রাজি হননি বাবা মহেশ গুর্জর। তনুর আপত্তি অগ্রাহ্য করেই নিজের পছন্দের পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ের ঠিক করে বাবা মহেশ। ১৮ জানুয়ারি সেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৪ দিন আগে আবার তাঁর তীব্র আপত্তির কথা জানিয়ে দেন তনু। সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে তাঁর ক্ষোভের কথা জানান। তাঁকে বলতে শোনা যায়, আমি ভিকিকেই বিয়ে করতে চাই। আমার পরিবার প্রথমে রাজি হলেও এখন তা অস্বীকার করছে। আমাকে রোজ মারধোর করেন তাঁরা। মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। আমার কিছু হয়ে গেলে দায়ী থাকবে আমার পরিবার। নিমেষের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ৫২ সেকেন্ডের সেই ভিডিও। সেটি দেখেই তরুণীর বাড়িতে ছুটে আসেন পুলিশ সুপার ধরমবীর সিং এবং বেশ কয়েকজন পুলিশকর্তা। পুলিশের সামনেই শুরু হয়ে যায় তনুর সঙ্গে তাঁর বাবার তুমুল কথা কাটাকাটি। তারপরেই ঘরে নিয়ে গিয়ে মেয়েকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় মহেশ। দোসর তনুর দাদা রাহুল। গুলি লাগে তনুর বুকে-কপালে-ঘাড়ে। তারপরেই সেই পিস্তল নিয়ে দু’জনে চড়াও হয় পুলিশকর্তাদের উপরে। কিন্তু খুনি বাবার হাত থেকে পিস্তল কেড়ে নিয়ে তাকে ধরে ফেলে পুলিশ। চম্পট দেয় রাহুল।
মৃত্যুর কয়েকঘন্টা আগেই অসহায় তরুণীর ভিডিও পোস্ট এবং তারপরে পুলিশ কর্তাদের সামনে নিজের বাড়িতেই বাবা-দাদার হাতে খুন – এই ভয়ঙ্কর ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তে কিন্তু সময় লাগেনি বেশিক্ষণ। প্রতিবাদের ঝড় ওঠে রাজ্যজুড়ে। প্রশ্নচিহ্নের মুখে গেরুয়া পুলিশের অপদার্থতা।

Latest article