সরকারি গণবণ্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বাড়ানোই লক্ষ্য, চার ধাপে নজরদারি

সরকারি গণবণ্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও নজরদারি আরও জোরদার করতে জেলা থেকে রেশন দোকান পর্যন্ত চার স্তরে নজরদারি কমিটি গঠন করছে রাজ্য সরকার।

Must read

প্রতিবেদন : সরকারি গণবণ্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও নজরদারি আরও জোরদার করতে জেলা থেকে রেশন দোকান পর্যন্ত চার স্তরে নজরদারি কমিটি গঠন করছে রাজ্য সরকার। সেই উদ্দেশ্যে রাজ্য খাদ্য নিরাপত্তা বিধি পরিবর্তনের জন্য একটি খসড়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই খসড়ার উপর মতামত গ্রহণের পরই চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।

আরও পড়ুন-পাঁচবার বৈঠকের পরও অনুমোদন দিল না কেন্দ্র, মনীষী ও বিপ্লবীদের শ্রদ্ধায় সাজানো বাংলার ট্যাবলো

খসড়া অনুযায়ী, রাজ্য, জেলা, ব্লক এবং রেশন দোকান এই চার স্তরে নজরদারি কমিটি গঠন করা হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রতিটি কমিটিকে বৈঠকে বসতে হবে। চার স্তরের সব কমিটিতেই পদাধিকার বলে সরকারি আধিকারিক, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধি থাকবেন।
খসড়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজ্যভিত্তিক নজরদারি কমিটির চেয়ারম্যান থাকবেন মুখ্যসচিব। এই কমিটিতে খাদ্য-সহ একাধিক দফতরের প্রধান সচিব, খাদ্য দফতরের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন আধিকারিক, কলকাতা ও হাওড়া পুর কমিশনার, রাজ্য পুলিশের এডিজি এনফোর্সমেন্ট, ফুড সেফটির অধিকর্তা এবং এফসিআই-এর জেনারেল ম্যানেজারের মতো আধিকারিকরা থাকবেন। পাশাপাশি মহিলা, তফসিলি জাতি, তফসিলি জনজাতি এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের একজন করে প্রতিনিধি রাখতে হবে। মোট ১৭ সদস্যের এই কমিটির বৈঠক অন্তত ছ’মাসে একবার বসানোর কথা বলা হয়েছে। খাদ্যসামগ্রীর বরাদ্দ ও সংগ্রহ, মজুতের পরিমাণ, সরবরাহ করা খাদ্যের গুণমান এবং জেলা কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করবে রাজ্য কমিটি।
জেলাস্তরের কমিটির চেয়ারম্যান থাকবেন জেলাশাসক। কলকাতার ক্ষেত্রে এই দায়িত্বে থাকবেন কলকাতার পুর কমিশনার। জেলা কমিটিকে তিন মাসে অন্তত একবার বৈঠকে বসে রেশন ব্যবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে। ব্লক স্তরের কমিটির চেয়ারম্যান হবেন বিডিও। জেলা ও রাজ্য কমিটির মতোই এখানে ব্লকের বিভিন্ন সরকারি আধিকারিক, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং মহিলা ও তফসিলি জাতি-জনজাতির প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই কমিটির বৈঠক হবে অন্তত দু’মাসে একবার।

আরও পড়ুন-এবার পুরসভা থেকেই পাওয়া যাবে ডোমিসাইল সার্টিফিকেট

রেশন দোকান স্তরের কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসেবে কোনও সরকারি আধিকারিক থাকবেন না। পুরসভা এলাকায় স্থানীয় কাউন্সিলার এবং পঞ্চায়েত এলাকায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এই কমিটির চেয়ারম্যান হবেন। কমিটিতে স্থানীয় স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষক সদস্য হিসেবে থাকবেন। পাশাপাশি মহিলা, তফসিলি জাতি ও তফসিলি জনজাতির প্রতিনিধিরাও থাকবেন। সরকারি আধিকারিক হিসেবে শুধুমাত্র ওই এলাকার খাদ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর বা সাব-ইন্সপেক্টর এই কমিটিতে থাকবেন। রেশন দোকান স্তরের কমিটিকে প্রতি মাসে অন্তত একবার বৈঠক করে তার কার্যবিবরণী ব্লক কমিটিকে পাঠাতে হবে। পুরসভা এলাকার ক্ষেত্রে সেই রিপোর্ট পাঠাতে হবে জেলা স্তরের কমিটিতে। রাজ্য প্রশাসনের মতে, এই চার স্তরের নজরদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে রেশন ব্যবস্থায় জবাবদিহি বাড়বে এবং ত্রুটি বা অনিয়ম চিহ্নিত করা সহজ হবে। খসড়া বিধি নিয়ে মতামত পাওয়ার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Latest article