চিনের হুনান প্রদেশের বুকে, হঠাৎ জেগে উঠেছে এক সোনালি স্বপ্ন— প্রায় হাজার টনের সোনার খনির গহ্বরে! প্রকৃতির অতল গর্ভে লুকানো ছিল যে ইতিহাস, যেন আজ তা খুলে দিয়েছে রৌদ্র-ছায়ার মাঝে বিস্ময়ের এক উজ্জ্বল আশ্বাস। এ যেন মাটির গভীর থেকে উঠে আসা ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি— সম্ভাবনার সোনালি সূর্য, ভোরের মতো উজ্জ্বল ও অদম্য গতি। সেই সোনা খুঁজতেই, কয়েক মাস আগে চিন দেশের হুনান প্রদেশে বিস্তৃত স্বর্ণখনি অঞ্চল এবং ব্যতিক্রমী গুণসম্পন্ন আকরিকের আধার ঐতিহাসিক পিংজিয়াং কাউন্টির ওয়াংগু গোল্ড ফিল্ডে একদল ভূবিজ্ঞানী উদ্ধার করেছেন এক সুবিশাল সোনার খনি! বিজ্ঞানীদের হিসেবে, এটাই নাকি এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া স্বর্ণভাণ্ডারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়; তাঁদের অনুমান ওই খাদানে রয়েছে প্রায় ১০০০ মেট্রিক টন সোনা।
অরাম লোকুইটার, অমনিস লিঙ্গুয়া ট্যাসেট। বহুল প্রচলিত একটি লাতিন প্রবাদ, ইউরোপীয় ভাষা সংস্কৃতির আবহে যাকে বলে— হোয়েন গোল্ড স্পিকস, এভরি টাং ইজ সাইলেন্ট! যখন সোনা কথা বলে, তখন সব ভাষা নীরব; অর্থাৎ এটি সর্বজনীন একটি বাণী যা সোনা তথা ধনসম্পদের প্রভাব ও ক্ষমতাকে তুলে ধরে। প্রাচীন লাতিন প্রবাদের যথার্থতা আজ যেন চিনের বুকে ফুটে উঠেছে। বৈজ্ঞানিক মহলে শোরগোল পড়ে গেছে, এই বিপুল পরিমাণ সোনা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বর্ণশিল্পের জগতে একটি মাইলস্টোনের মতো। অঙ্কের খাতায় ওই পরিমাণ সোনার বাজারমূল্য নাকি প্রায় ৭৮ বিলিয়ন ইউরো, যা চিন দেশের প্রায় ৬০০ বিলিয়ন য়ুয়ান এবং ৮৩ বিলিয়ন আমেরিকান ডলারের সমান। এই বিশাল স্বর্ণখনি উদ্ধার বৈশ্বিক খননকার্যের সামগ্রিক ছবিটাকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে নতুন কৌশলে গঠন করবে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
সোনালি ইতিহাস
কবি নজরুল তাঁর বিখ্যাত বুলবুল কবিতায় লিখেছেন, ‘সোনার চুড়ি, নূপুর প’রে, বধূ এলো বসন গুছায়ে।’ সোনা মানুষের কাছে আভরণ, আকাঙ্ক্ষা! সোনার প্রতি মানুষের আকর্ষণ যুগযুগ ধরে চলে আসছে। তবে আমেরিকার বিখ্যাত কবি ও দার্শনিক রাল্ফ ওয়াল্ডু ইমারসন একবার বলেছিলেন, ‘সোনার প্রতি লোভ সোনার জন্য নয়, বরং এটি স্বাধীনতা এবং সুবিধার উপায়ের জন্য।‘ এর মানে হল, মানুষ সোনার পিছনে ছোটে না কেবল তার ধাতব মূল্যের জন্য, বরং সোনার মাধ্যমে যে স্বাধীনতা, নিরাপত্তা এবং জীবনের বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়, তার জন্য। সোনা এখানে একটি প্রতীক, যা সম্পদ বা শক্তির মাধ্যমে জীবনে আরও স্বাচ্ছন্দ্য এবং সুযোগ-সুবিধা অর্জনের আকাঙ্ক্ষাকে নির্দেশ করে। সেই জন্যই বোধহয় মানুষ সেই প্রাচীন কাল থেকেই সোনার খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে।
খ্রিস্ট পূর্ব ৪০০০০ সালের প্রাগৈতিহাসিক যুগে মানুষ সর্বপ্রথম নদীর পাঁকে চকচকে সোনার দলা খুঁজে পায়। তাঁরা দেখেন ধাতুটি নমনীয় এবং ওর উপর কোনওপ্রকার জং ধরে না, দেখতে সুন্দর— নানারকম প্রথা ও গহনা হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। চলতে থাকে সোনার খোঁজ! খ্রিস্ট পূর্ব ৩০০০ সালে প্রাচীনকালের মেসোপটেমিয়া, মিশর, সুমেরু ও সিন্ধু সভ্যতার বুকে খননকাজ চালানো হয় স্বর্ণ উদ্ধারের আশায়। তখনই সোনা অলঙ্কারের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে ওঠে সামাজিক স্থায়িত্ব, প্রভাব, প্রতিপত্তি, নিরাপত্তা, সাফল্য, ঐশ্বর্য এবং ঈশ্বরীয় ক্ষমতার প্রতীক। এরপর মানবসভ্যতার মধ্যযুগে খ্রিস্ট পূর্ব ৭০০ থেকে খ্রিস্ট পরবর্তী ৫০০ সালের মধ্যে গ্রিক ও রোমান সাম্রাজ্যের নানা জায়গায় সোনার খোঁজে খোদাই করা হয়। এই সময়েই সোনার কয়েন খুঁজে পাওয়া যায় এবং সোনা তখন কারেন্সি হিসেবে প্রচলিত হয়। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা বেড়ে যায়। খ্রিস্ট পরবর্তী ৫০০ থেকে ১৫০০ সালের মধ্যে মধ্যযুগীয় ইউরোপ এবং এশিয়ার মালি ও বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের খননকাজ সোনার গুরুত্বকে বহু অংশে বাড়িয়ে দেয়। বাণিজ্য, পরিকাঠামো এবং সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে ব্যাপক উন্নয়ন দেখা যায়। ১৩২৪ সালের মানসা-মুসা পিলগ্রিমেজ তার অনন্য উদাহরণ!
আধুনিক যুগের সেই ষোলো শতকে আমেরিকার উপর স্প্যানিশ ‘এল ডোরাডো’ অভিযান, যা আজও একটি রহস্য! তবে ক্ষমতা ও স্বাধীনতার লক্ষ্যে স্প্যানিশরা মেক্সিকো ও পেরুর বুকে যেভাবে স্বর্ণ-লুট চালিয়েছিলেন তা মনে রাখার মতো। ১৮৪৮-১৮৫৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়া গোল্ড রাসে শাটার্স মিলে খুঁজে পাওয়া সোনার জন্য যে হইচই পড়ে যায়, তা আজও সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে আছে। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য ও সুন্দর জীবনের জন্য বহু মানুষ সেদিন ক্যালিফোর্নিয়ায় ছুটে গিয়েছিলেন। ১৮৯৬-১৮৯৯ সালে ক্লনডাইক, ১৮৫০-এ অস্ট্রেলিয়ান ও ১৮৮০ সালে সাউথ আফ্রিকান গোল্ড রাসেও একই রকম মাইগ্রেশনের হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন-গোমাংস পাচারে সুপারিশ শান্তনু ঠাকুরের, মুখোশ খুলল তৃণমূল কংগ্রেস
সোনালি অনুসন্ধান
সোনার প্রতি মানুষের আগ্রহ যেন আজন্মের। আজও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনন্য কৌশলের আশ্রয় নিয়ে গোটা পৃথিবীতে নিবিড়ভাবে চলছে স্বর্ণ-অনুসন্ধান-অভিযান। সম্প্রতি ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে চিনের ইয়াংজি নদী-তীরবর্তী সাংহাই শহরের পাশে মধ্য চিনের হুনান প্রদেশের পিংজিয়াং কাউন্টির ওয়াংগু গোল্ড ফিল্ডে, দ্য জিওলজিক্যাল ব্যুরো অব হুনান প্রভিন্সের একদল ভূবিজ্ঞানী সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সোনার খনির খোঁজ পেয়েছেন। ওই অঞ্চলে কোনও একদিন ভূবিজ্ঞানীদের আকস্মিক অভিযানে যে সামান্য খোদাই করা হয়েছিল, সেখান থেকে উঠে আসা পাথরের মধ্যে লক্ষণীয় পরিমাণে সোনার উপস্থিতি ছিল। সেই সময়ই বিজ্ঞানীদের ধারণা হয় ওই স্থানে নিশ্চিত কোনও উচ্চশ্রেণির খনিজ পাওয়া সম্ভব। কথামতোই গত নভেম্বরে খননকাজ শুরু হয়।
প্রাথমিকভাবে ওই জায়গায় প্রায় ৬৬০০ ফুট (২০০০ মিটার) খোঁড়া হয়; পাওয়া যায় ৪০ টিরও বেশি গোল্ড ভেইনস বা স্বর্ণশিরা। আনুমানিক হিসেবে আন্দাজ করা হয় ওই প্রাথমিক স্থানে মজুত সোনার পরিমাণ প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা যায়, খননের ফলে উঠে আসা প্রতি টন খনিজ আকরিকে উপস্থিত সোনার পরিমাণ প্রায় ১৩৮ গ্রাম। এই পরিমাণ সোনার উপস্থিতি খুবই ব্যতিক্রমী; সাধারণত খুব বড় অপারেশনে এইরকম বিরল প্রাপ্তি হয়ে থাকে। যদি কোনও খনি থেকে পাওয়া আকরিক স্বর্ণের পরিমাণ ৮ গ্রামের বেশি হয়, তখন তাকে হাই গ্রেড মাইন বলে চিহ্নিত করা হয়। এক্ষেত্রে তো প্রতি টনে ১৩৮ গ্রাম, বিস্ময়কর! গবেষকদের উৎসাহ বেড়ে যায়। আরও গভীরে প্রায় ৯৮০০ ফুট (৩০০০ মিটার) মাটির নিচে খোদায়ের পর তাঁরা এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, ওটা একটি সুপারজায়ান্ট ডিপোজিট। আনুমানিক মজুত সোনার পরিমাণ প্রায় ১০০০ মেট্রিক টনেরও বেশি। জিওলজির পরিভাষায় সেইসব ডিপোজিটগুলোকে সুপারজায়ান্ট বলা হয়, যেখানে সম্ভাব্য প্রাপ্ত সোনার পরিমাণ মিলিয়ন নয়, বিলিয়ন আউন্সে মাপা হয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ওই এলাকায় মজুত সোনার পরিমাণ প্রায় ৩৫.২ মিলিয়ন আউন্স; প্রতি আউন্স সোনার বাজারমূল্য নাকি প্রায় ২৭০০ আমেরিকান ডলার।
বিশ্ব জুড়ে জিওলজিস্টরা মনে করছেন, খুঁজে পাওয়া এই নতুন স্বর্ণখনিটি এখনও পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া খনির চেয়ে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। যাইহোক, বিজ্ঞানীরা অ্যাডভান্সড জিওলজিক্যাল মডেল অর্থাৎ স্টেট-অব-দ্যা-আর্ট এক্সপ্লোরেশন টেকনোলজি ও থ্রি ডি জিওলজিক্যাল মডেলিংয়ের সাহায্যে নিখুঁতভাবে সূক্ষ্মতার সঙ্গে এই অনুসন্ধানপর্ব সম্পন্ন করেছেন। তাঁরা অত্যাধুনিক অনুসন্ধান প্রযুক্তি, উন্নত সিসমিক ইমেজিং, ড্রোন-ভিত্তিক জরিপ এবং এআই-চালিত ডেটা বিশ্লেষক ব্যবহার করে নির্ভুলভাবে জমার অবস্থান চিহ্নিত করেন। ত্রিমাত্রিক ভূতাত্ত্বিক মডেলিং ভূ-ভৌতিক, ভূ-রাসায়নিক এবং ড্রিলিং ডেটা একত্রিত করে ৯,৮০০ ফুট গভীরতায় আকরিক শরীরের কাঠামো প্রকাশ করে। এছাড়াও হাইপারস্পেকট্রাল ইমেজিং এবং মেশিন লার্নিং দক্ষতা বাড়ায়, খরচ কমায় এবং পরিবেশগত প্রভাব হ্রাস করে। এভাবেই তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন সোনালি স্বপ্নের বিপুল সম্ভার!
আরও পড়ুন-শ্রীরামপুর রাজবাড়ির পুজো যেন কাব্য
সোনালি প্রভাব
‘তোমার সোনার থালায় সাজাব আজ দুঃখের অশ্রুধার। জননী গো, গাঁথব তোমার গলার মুক্তাহার।’ রবি ঠাকুরের এই লাইন দুটি বারবার আমাদের জীবনে সোনার গুরুত্ব ঠিক কতটা, তা বুঝিয়ে দেয়। সোনা আশা, সোনা প্রত্যাশা, সোনা শক্তি, সোনা সাহস, সোনা সম্পদ। হুনান প্রদেশে সোনার সম্ভার শুধুমাত্র ওই অঞ্চলের উপর গভীর ছাপ ফেলেছে তা নয়; বরঞ্চ সমগ্র চিনের অর্থনৈতিক পরিসর বিশ্বের দরবারে আরও বিস্তৃত হয়েছে। ওয়াংগু গোল্ড ফিল্ডে উপস্থিত সোনার পরিমাণ ও গুণাগুণের কথা ভেবে চিন আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বৈশ্বিক স্বর্ণ উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি উদীয়মান শক্তি হিসেবে দেখা দিয়েছে। সার্বজনীন শিল্পমহলের জল্পনা আগামী দিনে ওই বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের বাণিজ্যিকীকরণের কথা ভেবে বহুসংখ্যক আন্তর্জাতিক মাইনিং কর্পোরেশন বিনিয়োগ করতে চলেছে।
খনি থেকে স্বর্ণের নিষ্কাশন, শোধন এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক উপায়ের কথা মাথায় রেখে বিপুল পরিমাণ পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হতে চলেছে চিনে। তৈরি হতে পারে নতুন ট্রান্সপোর্ট; হাজার হাজার কর্মসংস্থান তরুণদের মুখে ফোটাতে পারে হাসি; আসতে পারে আর্থিক ও সামাজিক স্বাচ্ছন্দ্য। তবে প্রতিকূলতাও কম নয়— অন্যান্য বিপত্তিগুলো দূরে সরিয়ে রাখলেও পরিবেশগত ঝুঁকির কথা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতেই হয়। ভূমিক্ষয়, জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও বাতাসে কার্বন নির্গমন সবচেয়ে বড় বিপত্তি। যদিও বিজ্ঞানীদের এই খোঁজ আর্থিকভাবে রূপান্তরযোগ্য, তবে পরিবেশগত দায়িত্ব পালন করে শৈল্পিক বিকাশের ধারা অব্যাহত রাখতে দরকার একটি ‘ব্যালান্সড স্ট্রিনজেন্ট রেগুলেটরি ওভারসাইট’।
আরও পড়ুন-হেরেও জকোর চোখ গ্র্যান্ড স্ল্যামেই
সোনালি ভবিষ্যৎ
এবছর ২০২৫ সালের মে মাস নাগাদ খবরে এসেছে চিনের লায়াওনিং প্রদেশেও নাকি যথেষ্ট পরিমাণে গোল্ড ডিপোজিট রয়েছে। আবার ওই একই মাসে জানা গেছে, আর্জেন্টিনার আন্ডিয়ান হাইল্যান্ডস অঞ্চলে একটি খনি থেকে প্রায় ৮০ মিলিয়ন আউন্স সোনা ও রুপো এবং প্রায় ১২ মিলিয়ন টন তামার সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই মাসেই আবার কুইন্সওয়ে গোল্ড প্রজেক্টের আওতায় কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের ড্রপকিক এলাকায় খোঁজ মিলেছে সোনার। মে মাসেই সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এর একটি পোস্টে দাবি করা হয় ঘানা এবং উগান্ডাতেও নাকি ১২ ট্রিলিয়ন আমেরিকান ডলার বাজারমূল্যের স্বর্ণ মজুত রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ওই মে মাসেই জানা যায়, স্বর্ণের আশায় অস্ট্রেলিয়ার খনিজ প্রধান এলাকায় শুরু হয়েছে খননকাজ। জোরকদমে খোঁড়া হচ্ছে নোভা-বোলিঙ্গার ডিপোজিট— যদিও এখনও সোনা পাওয়ার কোনও খবর মেলেনি!
স্ফটিকীকৃত সিলিকন ডাই অক্সাইডের নিচে চাপা ধাতব স্তর, যাকে কোয়ার্টজ বলা হয়, সেখান থেকেই সোনার উৎপত্তি। পৃথিবীর বুকে সোনার খনি খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিল, কেননা এটি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণেই এই ধরাধামে মজুদ রয়েছে। মনে করা হয়, এখনও পর্যন্ত আমরা নাকি ৫৩০০০ মেট্রিক টনের মতো সোনা উদ্ধার করতে পেরেছি। এখনও প্রায় ৫০০০০ মেট্রিক টন সোনা আমাদের অধরা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে চিন দেশে এইপ্রকার সোনার খনি উদ্ধার, বৈশ্বিক সোনার বাজারে চিনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। ২০২৪ সালের শুরুতেই চিনের সংগৃহীত স্বর্ণের পরিমাণ ২০০০ টন ছাড়িয়ে গেছে; ওই দেশ একাই গ্লোবাল গোল্ড আউটপুটের ১০ শতাংশ দখল করে বসে আছে। তবে ভারতবর্ষও পিছিয়ে নেই। এখনও পর্যন্ত ভারতে প্রাপ্ত সোনার পরিমাণ প্রায় ৮৮০ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৭১ বিলিয়ন আমেরিকান ডলার। সাম্প্রতিক গবেষণায় ওড়িশার দেওঘর এবং কেওনঝাড় এলাকার গোল্ড ডিপোজিটের সম্ভাবনার কথা ভেবে চলছে নিবিড় গবেষণা— হয়তো একদিন আমাদের সোনালি স্বপ্ন সত্যি হবে।