প্রতিবেদন : অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে এবার কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া কমানোর জন্যই এই পদক্ষেপ। শনিবার স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতালের প্রেসক্রিপশন অডিটের পাশাপাশি মাছ ও মুরগি চাষে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। দ্রুত সমস্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে অ্যান্টিবায়োটিক পলিসি কার্যকর করা হবে বলে খবর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে।
আরও পড়ুন-বিজেপির পতনের বৃত্ত সম্পূর্ণ: ব্রাত্য
ইদানীং সাধারণ মানুষের একাংশ রোগ-ব্যাধি হলে নিজেরাই ডাক্তারি ফলান। নিজেরাই ইন্টারনেটে সার্চ করে অ্যান্টিবায়োটিকের খোঁজ করেন। তারপর ওষুধের দোকান থেকে সেই অ্যান্টিবায়োটিক কিনে নিজেরাই ডোজের পরিমাণ ঠিক করে মুঠো মুঠো খেয়ে ফেলেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের একাংশও অকারণে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করছেন। ডব্লুবিসি কাউন্ট, কালচার সিনসেটিবিটি না দেখেই বহু চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দিচ্ছেন রোগীকে। তার জেরে বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে কাজই করছে না কোনও অ্যান্টিবায়োটিক। অর্থাৎ রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও হাঁস-মুরগি পালন ও মাছ চাষেও ঢালাও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হচ্ছে। ওই মাছ-মুরগি যাঁরা খাচ্ছেন তাঁদের শরীরেও অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ তৈরি হচ্ছে। তাই অ্যান্টিবায়োটিকের এই যথেচ্ছ ব্যবহার রুখতে অ্যান্টিবায়োটিক পলিসি কার্যকর করতে চাইছে রাজ্য। এই নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, গোটা রাজ্য জুড়েই কাজ চলছে। হাসপাতালের পাশাপাশি বিভিন্ন খামার ও জলাশয় থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। কোনওদিকে কোনও ফাঁক রাখতে চাই না আমরা। দ্রুত নীতি প্রণয়ন করা হবে। সম্প্রতি রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে ৩২ হাজার কেস স্টাডি করে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়। সেই রিপোর্ট থেকেই দেখা যাচ্ছে, এই রাজ্যে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার অত্যন্ত বেশি। আসলে ফাঁকা না পাওয়ার অজুহাতে অনেক ক্ষেত্রেই হাসপাতালের সিসিইউ বা আইসিইউ-কে প্রোটোকল মেনে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে না। যার জেরে অনেক রোগীই হাসপাতালে গিয়ে নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন। কেউ ছুটির সময় সংক্রমণ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। পরে ধরা পড়ছে। ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বাড়ছে। তার জেরে বাড়ছে সেপসিসে মৃত্যুও। এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য। গোটা বিষয়টি সরোজমিনে খতিয়ে দেখছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা।