মৌসুমী বসাক: মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে দাপট দেখাল কন্যাশ্রীরা। সর্বস্তরেই মেয়েরা পিছনে ফেলল ছেলেদের। এসসি, এসটি, সংখ্যালঘু অর্থাৎ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষ সবেতেই এগিয়ে কন্যারা। ছেলেদের চাইতে মেয়েরাই বেশি সংখ্যায় পরীক্ষা দিয়েছে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
নির্দ্ধিধায় বলা যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্পগুলি এক্ষেত্রে অগ্রগণ্য ভূমিকা নিয়েছে। মেয়েদের উন্নয়নে একের পর এক প্রকল্প শুধু যে পড়াশোনায় সামনের সারিতে এগিয়ে এনেছে তাই নয়, মেধাতালিকাতেও তার ছাপ পড়েছে। প্রকল্পগুলির সুফল স্পষ্ট ফলাফলে।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবার কলকাতার একাধিক নামকরা স্কুলের পড়ুয়ারা থাকলেও বাজিমাত করল সেই জেলা। পাশের নিরিখে কলকাতাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে রইল জেলাগুলো। ৭০ দিনের মাথায় প্রকাশিত হল মাধ্যমিকের ফলাফল। পাশের হার ৮৬.৫৬ শতাংশ। গত বছর পাশের হার ছিল ৮৬.৩১ শতাংশ। পাশের হার সব থেকে বেশি পূর্ব মেদিনীপুরে (৯৬.৪৬ শতাংশ), এরপর যথাক্রমে রয়েছে কালিম্পং (৯৬.০৯ শতাংশ), কলকাতা (৯২.৩০ শতাংশ) ও পশ্চিম মেদিনীপুর (৯০.৫২ শতাংশ)। মেধাতালিকার পরিসংখ্যান বলছে উত্তরের এই জেলায় এবছর ৯৬.০৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে। মেধাতালিকায় প্রথম দশে রয়েছে ৬৬ জন। পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এটি জীবনের প্রথম পদক্ষেপ। আগামী জীবনে এই সাফল্য আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। যারা সফল হয়নি তারাও যাতে ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে পারে সেই জন্য শুভকামনা রইল। একই সঙ্গে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা হওয়ার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
চলতি বছরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪২৫ জন। গত বছরের তুলনায় ৫৬,৮২৭ জন বেশি। AA গ্রেড পেয়েছে মোট ১০,৬৫৯ জন। A+ পেয়েছে ২৫,৮২০ জন। A গ্রেড পেয়েছে ৯১,২৩৭ জন। ৬৯৬ পেয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুলের ছাত্র অদ্রিত সরকার। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে মালদা জেলার রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির স্কুলের ছাত্র অনুভব বিশ্বাস এবং বাঁকুড়া বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের সৌম্য পাল। পেয়েছে ৬৯৪। তৃতীয় স্থানে একজন— কোতুলপুর সরোজবাসিনী বালিকা বিদ্যালয়ের ঈশানী চক্রবর্তী। সে পেয়েছে ৬৯৩। শুক্রবার সকাল নটার সময় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ফল প্রকাশের পর ৯.৪৫ থেকেই ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে ফল। সকাল দশটা থেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ৪৯টি ক্যাম্প অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে মার্কশিট ও সার্টিফিকেট৷ এদিনই সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট হাতে পেয়ে গেছে পড়ুয়ারা।
পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও পড়ুয়ার যদি উত্তরপত্র রিভিউ করার থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে তাদের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছে মাধ্যমিকের রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং কোন বিষয়ে সে রিভিউ করাতে চায় তা লিখে সাদা কাগজে আবেদন করতে হবে। এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের মোট যতগুলি এ-ধরনের আবেদন জমা পড়বে সবগুলো একসঙ্গে করে পর্ষদের ওয়েবসাইটে জমা দেবে। পর্ষদের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে সাফ জানানো হয়েছে কোনওভাবেই পরীক্ষার্থীদের রিভিউর একক আবেদন সরাসরি জমা নেওয়া হবে না। স্কুলের মাধ্যমেই তা জমা করতে হবে।