নয়াদিল্লি: বিতর্কটা আজকের নয়, দীর্ঘদিনের। বিষয়টা নিয়ে সংশয় গভীর হয়েছে সময়ের হাত ধরেই। অবশেষে সমাধানসূত্র বের হল শীর্ষ আদালতের রায়ে। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিল, কোনও স্বামীহারা নিঃসন্তান মহিলার মৃত্যুর পরে তাঁর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারেন স্বামীর পরিবারের কোনও সদস্য। সেই সম্পত্তির ভাগ পাবেন না বাপের বাড়ির কোনও সদস্য। এর কারণও ব্যাখ্যা করেছে শীর্ষ আদালত— বিয়ের সঙ্গে সঙ্গে গোত্রও পরিবর্তন হয়ে যায় কোনও মহিলার। একটি উত্তরাধিকার বিতর্ক সংক্রান্ত মামলায় সম্প্রতি এই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন-তৃণমূলের পুজোর শুভেচ্ছার ফেস্টুন ছিঁড়ে বিজেপির অসভ্যতা ত্রিপুরায়
হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে উল্লিখিত ধারাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আনা একটি আর্জির প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ। শীর্ষ আদালতের একমাত্র মহিলা বিচারপতি বিভি নাগরত্নম স্পষ্ট জানিয়েছেন, হাজার হাজার বছর ধরে যা চালু আছে সমাজে, তা ভেঙে দেওয়ার আদৌ কোনও ইচ্ছা নেই আদালতের। তাঁর কথায়, ‘কন্যাদান’ একটি প্রথা চালু রয়েছে দীর্ঘকাল ধরে। বিয়ের সময় যখন কোনও মেয়েকে স্বামীর হাতে সম্প্রদান করেন তাঁর বাবা কিংবা অন্য কোনও গুরুজন, তখন পরিবর্তিত হয়ে যায় তাঁর গোত্রও। বিচারপতির মতে এই গোত্রই বংশ মর্যাদা এবং উত্তরাধিকার পরিচয়ের ধারক ও বাহক।
আরও পড়ুন-দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে এবার বিশেষ আকর্ষণ রাজস্থানের সোনার কেল্লা
লক্ষণীয়, নিঃসন্তান স্বামীহারা হিন্দু মহিলার সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে বারবার দেখা দিয়েছে বিতর্ক। অজস্র আবেদন জমা পড়ে শীর্ষ আদালতে। প্রশ্ন উঠেছে, স্বামীহারা মহিলা মৃত্যুর আগে যদি কোনও উইল না করে যান তা হলে কী হবে? কে পাবেন সম্পত্তির ভোগদখল? স্বামীর উত্তরাধিকারী নাকি বাপের বাড়ির পক্ষের উত্তরাধিকারী? লক্ষণীয়, আদালতে এই নিয়ে দুটি মামলা এসেছে এরকমই দুটি জটিল প্রশ্ন নিয়ে। একটি কোভিড পিরিয়ডে এক অল্পবয়সি দম্পতির মৃত্যুর পরে। সম্পত্তি দাবি করে মামলা করেন স্বামী এবং স্ত্রী-দুজনেরই মা। আর একটি ক্ষেত্রে এক নিঃসন্তান দম্পতির মৃত্যুর পরে সম্পত্তির দাবি জানিয়ে মামলা করেন ছেলেটির বোন। বিচারপতি নাগরত্ন কন্যাদান এবং গোত্রদানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেছিলেন, উইল ছাড়া সেই সম্পত্তি শ্বশুরবাড়ির ভাগেই যাবে।