দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দাবানল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪

কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এই ঘটনা নিয়ে জানায়, গত ৫ দিনের দাবানলে প্রায় ৪৩ হাজার একর জমি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।

Must read

২১ মার্চ রাজধানী সোল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে গিয়ংসাং প্রদেশের সানচেং-এ প্রথম আগুনের সূত্রপাত হয়। কিছুক্ষনের মধ্যেই সেই দাবানল ছড়িয়ে পড়ে একাধিক এলাকায়। দাবানল মোকাবিলায় দমকল ছাড়াও শতাধিক হেলিকপ্টার নামানো হয়। কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এই ঘটনা নিয়ে জানায়, গত ৫ দিনের দাবানলে প্রায় ৪৩ হাজার একর জমি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার সেই আগুন ভয়ঙ্কর রূপ নেয় এবং সরকারি ভাবে বুধবার ২৪ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন-হায়দরাবাদের আগ্রাসী ব্যাটিংই কাঁটা পন্থদের

দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দাবানল এটি। ইতিমধ্যেই জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে। সূত্ৰের খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে চেয়োঙ্গসং-গান কাউন্টির চারটি জেল থেকে ২৬০০ কয়েদি-সহ ২৭ হাজার মানুষকে এলাকা থেকে সরানো হয়েছে। বহু এলাকায় বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে। কয়েকটি রাস্তাও বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ভয়ঙ্কর এই দাবানলে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের আওতাধীন ১৩০০ বছরের পুরনো একটি বৌদ্ধ মন্দির এবং হাহয়ে ফোক নামে একটি গ্রাম ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। সরকারের জরুরি প্রতিক্রিয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, ৪৩,৩৩০ একর (১৭,৫৩৫ হেক্টর) জুড়ে এই দাবানলে একটি প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির, বাড়িঘর, কারখানা এবং যানবাহন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। রাতভর তীব্র হাওয়ার ফলে আগুন নেভাতে কর্মীদের রীতিমত হিমশিম খেতে হয়। প্রায় ১৩০টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে বুধবার প্রায় ৪,৬৫০ জন অগ্নিনির্বাপক, সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য কর্মী কাজ করছেন। যদিও মনে করা হচ্ছে বৃহস্পতিবার “অল্প পরিমাণে” ৫-১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন-বিখ্যাত হতে নয়, মানুষের আত্মার অন্বেষণে থিয়েটার

প্রবল বাতাস এবং ধোঁয়ায় ভরা আকাশের কারণে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর আন্দং-এর কর্তৃপক্ষ দুটি গ্রামের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে যার মধ্যে রয়েছে পাঞ্চিওন। সেখানে ১৪-১৫ শতকের দিকে প্রতিষ্ঠিত ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হাহো লোক গ্রাম অবস্থিত। এর মধ্যেই পর্বতারোহীদের মনোরম জিরি পর্বত ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। উইসংয়ের অগ্নিকাণ্ডে গৌন্সার ৩০টি ভবন ও স্থাপত্যের মধ্যে প্রায় ২০টি ধ্বংস হয়ে যায়। দক্ষিণের আরেকটি শহর চেওংসং-এর একটি জেল থেকে ৫০০ জন বন্দীকে সুরক্ষামূলকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তবে কোনও ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। সরকারি তরফে যদিও সন্দেহ করা হচ্ছে যে, মানুষের ভুলের কারণে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সম্ভবত পারিবারিক সমাধিতে বেড়ে ওঠা ঘাস পরিষ্কার করার সময় আগুন ব্যবহারের কারণে অথবা ওয়েল্ডিংয়ের কাজ থেকে স্ফুলিঙ্গের কারণে এই বিপর্যয় ঘটেছে।

Latest article