পশ্চিমবঙ্গকে আক্ষরিক অর্থে ভিখারি করে ছেড়েছিল বামেরা

আজ তারা বলছে বড় বড় কথা। কিন্তু সমীক্ষা বলছে বাম-আমলে ভারতে সবথেকে বেশি ভিখারি ছিল এই রাজ্যে। সেই ভয়ানক বাস্তবতার কথা তুলে ধরলেন তন্বী দাস

Must read

মিনিস্ট্রি অফ সোশ্যাল জাস্টিস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্টের ২০১১ সালে, কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং কয়েকজন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করা আদমশুমারি অনুসারে সর্বাধিক সংখ্যক ভিক্ষুক তালিকায় রাজ্যগুলির মধ্যে শীর্ষে ছিল বামফ্রন্ট-শাসিত পশ্চিমবঙ্গ; বাম-আমলের চৌত্রিশটা বছর সমাজের তথাকথিত খেটে-খাওয়া মানুষের সরকার মানুষের পাশে কতটা ছিল সেটা এই সমীক্ষা থেকেই বোঝা যায়। ‘বামপন্থা’ শব্দটিকে একটি আবরণের মতো ব্যবহার করে আদপে চলেছে স্বৈরাচার। নাগাড়ে ট্রেড ইউনিয়নগুলোর স্ট্রাইক এবং সরকারের শিল্পে উদাসীনতা ভারতের একদা বর্ধিষ্ণু প্রকৌশলগত এবং কৃষিনির্ভর অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছিল।

আরও পড়ুন-চমক আর চমক, তোমার কি আর কিছুই নাই, মোদিপক্ষ?

একের পর এক কলকারখানায় তালা কর্মহীন করেছিল বাংলার বহু মানুষকে। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত শ্রমিক বাংলা ছেড়ে ভিন রাজ্যে যাওয়া শুরু করে তখন থেকেই। সঙ্গে জমি অধিগ্রহণে সরকারের দুর্নীতি মানুষের মনে হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কর্মক্ষেত্রের এই অচলায়তনে একদিকে যেমন বেড়েছে বেকার সমস্যা— অন্যদিকে, খাদ্যাভাবে পিঁপড়ের ডিম খেয়েও বেঁচে থাকার ঘটনার কথা উঠে এসেছিল তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গে। আমলাশোলের ঘটনা তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ফলে জনসংখ্যার এক বড় অংশের অসহায় কর্মহীন মানুষের কাছে ভীক্ষাবৃত্তি ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না। সমসাময়িক বামফ্রন্টের আমলে বাংলায় প্রতি লাখের মধ্যে প্রায় ৯০ জন ভিক্ষাবৃত্তিকে জীবিকা হিসেবে বেছে নিতে বাধ্য হয়, সমীক্ষাতে যে সংখ্যা উঠে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১১ পর্যন্ত বাম-শাসিত পশ্চিমবঙ্গে মোট ভিক্ষুকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৮১,২৪৪ জন যার মধ্যে প্রায় ৩৩,০৮৬ জন পুরুষ এবং ৪৮,১৫৮ জন মহিলা। পশ্চিমবঙ্গের পরে উত্তরপ্রদেশ ও বিহার ছিল যথাক্রমে দুই ও তিন নম্বরে।

আরও পড়ুন-জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে কুর্মিদের ছদ্মবেশে হামলা, কড়া বার্তা অভিষেকের

এ-এক চরম লজ্জার বিষয়, যে রাজ্য চাল উৎপাদনে ভারতের মধ্যে প্রথম, সেই রাজ্যের মানুষের মুখে অন্ন জোগাতে ব্যর্থ হয়েছিল সমাজের প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষের তৎকালীন বামপন্থীদের সরকার। চৌত্রিশ বছরের স্থায়ী সরকার মানুষের মনের এবং পেটের খবর রাখতে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়। এখন প্রশ্ন হল, শ্রমিক-কৃষকের সরকার সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিল কেন? ২০১১ সালে এই সরকারের পরে মা-মাটি-মানুষের সরকার সুপ্রতিষ্ঠিত হলে বাংলায় খাদ্যসাথী প্রকল্প শুরু হয়। এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত পরিবার ২ টাকা কেজি দরে চাল প্রকৃত অর্থে সমাজের খেটে খাওয়া প্রান্তিক মানুষের খাদ্যাভাব মেটাতে সক্ষম হয়েছে। বাম-আমলে যে কর্মসংস্কৃতির অবসান ঘটে সেই অবস্থার অনেকটাই পরিবর্তন ঘটতে দেখা যাচ্ছে বর্তমান সরকারের আমলে। রাজ্যে ফিরছে শিল্প, বাড়ছে কর্মসংস্থান।

Latest article