তৃণমূলনেত্রীর দেখানো পথেই এবার শপথ বয়কটে ইন্ডিয়ার শরিকরাও

শনিবার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বার্তা দিয়েছিলেন পরদিন তা প্রকাশ্যে অনুসরণ করতে দেখা গেল ইন্ডিয়া শিবিরের দলগুলিকে।

Must read

প্রতিবেদন : তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই কার্যত হাঁটলেন ইন্ডিয়ার সব শরিক নেতা। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার পর বিজেপি যে সরকার গড়তে চলেছে, রবিবার তার শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলেন না তৃণমূল সাংসদেরা। একই পথে হেঁটে ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি, আপ, আরজেডি সাংসদেরাও বয়কট করলেন এদিনের শপথ অনুষ্ঠান। শনিবার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বার্তা দিয়েছিলেন পরদিন তা প্রকাশ্যে অনুসরণ করতে দেখা গেল ইন্ডিয়া শিবিরের দলগুলিকে।

আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে দ্বিতীয়, সমানে টক্কর তৃণমূলের

রবিবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে ফের এই বিষয়ে দলের বক্তব্য জানান তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর কথায়, স্পষ্টভাবে জানাতে চাই তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বিজেপির কোনও নেতা বা মন্ত্রীর ফোন আসেনি। এছাড়াও শপথ অনুষ্ঠানে আমাদের অংশগ্রহণ করার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ অগণতান্ত্রিক ও জনবিরোধী শক্তি একটি নড়বড়ে সরকার গঠন করতে চলেছে। আমাদের নেত্রী স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই সরকার আদৌ পাঁচ বছর টিকবে না। অসাংবিধানিক সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে আমরা কোনওভাবেই অংশ নিতে পারি না। ডেরেকের কথায়, আগের দিন আমাদের দলনেত্রী যা বলেছেন দেখা গেল সেটাই অনুসরণ করেছে ইন্ডিয়ার শরিক দলগুলিও।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

শপথ অনুষ্ঠান বয়কটের পাশাপাশি কৃষক আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতা ও সমর্থনের বার্তা দিতে পাঞ্জাবের খানৌরিতে সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচ সদস্যের টিম পাঠাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই টিমের নেতৃত্বে থাকছেন রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। বাকিরা হলেন মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাগরিকা ঘোষ ও সাকেত গোখেল। এই সফর নিয়ে ডেরেক বলেন, আমাদের নেত্রীর দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস আছে। গোটা দেশ তা জানে। পশ্চিমবঙ্গে তিনি যেমন কৃষি আন্দোলন করেছেন, একইভাবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আনা চরম কৃষকবিরোধী বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থেকে সিঙ্গুর আন্দোলনকারী কৃষকদের সহমর্মিতার বার্তা; সবক্ষেত্রেই প্রতিবাদের মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডেরেকের মন্তব্য, বিভিন্ন সময়ে আমাদের নেত্রী কৃষকদের স্বার্থে যে অবস্থান নিয়েছেন তাতে বর্তমান আন্দোলনকারীরাও সবচেয়ে বেশি ভরসা করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকেই।

আরও পড়ুন-কাশ্মীরে পুণ্যার্থীদের বাসে জঙ্গি হামলা, মৃত ১০

কৃষক-স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার যেভাবে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন তা মনে করিয়ে রাজ্যসভার দলনেতা বলেন, ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে সিঙ্গুরে বলপূর্বক কৃষিজমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে নিজের জীবন বিপন্ন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৬ দিনের অনশন-প্রতিবাদ চালিয়েছেন। ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজ্যসভায় সাংসদদের সাংবিধানিক অধিকার বুলডোজ করে তাঁদের কৃষিবিলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে দেয়নি বিজেপি সরকার। আটজন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। প্রতিবাদে তাঁরা সংসদে গান্ধীমূর্তির সামনে বসে ধরনা দেন। কৃষকদের প্রতি এই রকমই চরম বৈরিতার মনোভাব কেন্দ্রের সরকারের। ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর কৃষি আইনের বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন চালাচ্ছিলেন দেশের লক্ষাধিক কৃষক, তখন সবার আগে সেখানে সাংসদদের টিম পাঠান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্ঘু সীমান্তে আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেসই। সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টানা ২০ মিনিট আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সমর্থনের বার্তা দেন। আর এসব ঘটনাই বুঝিয়ে দেয়, বিজেপির স্বৈরাচারী নীতির বিরুদ্ধে সবার আগে সোচ্চার হন আমাদের নেত্রীই।

Latest article