বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার : হয়নি উন্নয়ন। মানুষের কাছে ভোট নিয়ে ঠকিয়েছেন। আর এই কারণেই পুরভোটে জবাব দিয়েছে মানুষ। শুধু তাই নয়, দলের মন্ত্রীর নামে এবার প্রকাশ্যে কুৎসায় নেমেছেন দলেরই এক শ্রেণির নেতা। যা দলের অন্দরে রীতিমতো অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মন্ত্রিত্ব পেয়ে জন বারলা মানুষকে ভুলে গিয়েছেন, বলছেন দলেরই কয়েকজন নেতা। আর পুরভোটে আলিপুরদুয়ারে বিজেপি থেকে মানুষের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার মূল কারণ হিসাবে এই বিষয়টিকেই দায়ী করছেন খোদ বিজেপির কয়েকজন নেতা।
আরও পড়ুন – ধূলিয়ানে ধূলিসাৎ বিজেপি
প্রথম কারণ আলিপুরদুয়ার সাংসদ জন বারলা লোকসভা ভোটের আগে এই জেলায় এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বর্ডার ডেভলপমেন্ট ফান্ড থেকে জেলায় বেশ কিছু বড় সেতু করবারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে কিছুই করে উঠতে পারেননি আজ পর্যন্ত। তবে মাত্র তিন বছরে নিজের জন্য প্রাসাদের মতো বাড়ি, সরকারি জায়গা দখল করে মার্কেট কমপ্লেক্স ও একটি চা বাগানের মালিক তিনি হয়েছেন বলে সাধারণ বিজেপি কর্মীদের মুখে শোনা যায়। বিজেপির বেশিরভাগ নেতা প্রকাশ্যে বলতে শুরু করেছেন, সাংসদ পদ এবং মন্ত্রিত্ব পেয়ে তিনি এখানকার মানুষকেই ভুলে গিয়েছেন। তাঁর মুখোশটা খুলে গিয়েছে। বেরিয়েছে আসল চেহারা। যা খুবই ভয়ঙ্কর। দ্বিতীয় এবং আরেকটি প্রধান কারণ জেলা বিজেপির কান্ডারি প্রাক্তন জেলা বিজেপি সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার তৃণমূলে (Trinamool Congress) যোগ।
দক্ষ সংগঠক গঙ্গা এমনভাবে দলকে জেলায় মজবুত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন যে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরোধিতা করে অশোক লাহিড়ীর মতো একজন হেভিওয়েট প্রার্থীকে আলিপুরদুয়ার বিধানসভা থেকে বাতিল করে নিজের বাছাই করা প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ নিয়ে জিতিয়েছিলেন। সেই গঙ্গাপ্রসাদ তৃণমূলে (Trinamool Congress) যোগ দিতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে জেলা বিজেপির সংগঠন। তার আঁচ এবার সরাসরি পড়ল পুরভোটে। তাই জেলায় এবার সবার মুখে একটি কথাই শোনা যাচ্ছে, রাজ্য তথা জেলায় এবার বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে।