পুজোর আগে বর্ষায় দুর্দশাগ্রস্ত মৃৎশিল্পীদের বিকল্প জায়গা দেবে পুরসভা

মাথার ওপর বৃষ্টির ঘনঘটা, অথচ হাতে বেশি সময় নেই। সামনেই বাঙালির বৃহত্তম উৎসব দুর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে নেমে পড়েছেন শিল্পীরা।

Must read

সৌমেন্দু দে, সিউড়ি: মাথার ওপর বৃষ্টির ঘনঘটা, অথচ হাতে বেশি সময় নেই। সামনেই বাঙালির বৃহত্তম উৎসব দুর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে নেমে পড়েছেন শিল্পীরা। কিন্তু বাধ সেজেছে আকাশের গম্ভীর মুখ, যখন-তখন বৃষ্টি নামার ফলে মাথায় হাত মৃৎশিল্পীদের। লাগাতার বৃষ্টির মধ্যে কীভাবে প্রতিমা শুকোবে সেই চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে তাঁদের। সিউড়ি শহরে কুমোরটুলির মতো ব্যবস্থা এখনও তৈরি হয়নি যেখানে একসঙ্গে একাধিক মৃৎশিল্পী প্রতিমা তৈরি করতে পারবেন।

আরও পড়ুন-থাকছে না বুকিং কাউন্টার, মেট্রোর আধুনিকীকরণে বিপাকে পড়তে চলেছেন ৩ স্টেশনের নিত্যযাত্রীরা

শহরের বিভিন্ন জায়গায় চালাঘর বানিয়ে মৃৎশিল্পীরা প্রতি বছর ঠাকুর তৈরিতে হাত লাগান। কিন্তু এবার বর্ষা দেরিতে আসায় মৃৎশিল্পীরা চিন্তায় পড়েছেন, কারণ রোদ না হলে প্রতিমা শুকোবে না, আর সময়মতো ক্লাবগুলোকে প্রতিমা সরবরাহ করতে না পারলে বিরাট আর্থিক লোকসানের মুখোমুখি হতে হবে মৃৎশিল্পীদের। গুরুতর এই সমস্যার কথা জানতে পেরে সিউড়ি শহরের মৃৎশিল্পীদের সাহায্যের জন্য সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন, যেখানে বৃষ্টি এড়িয়ে কারিগরেরা নিশ্চিন্তে ঠাকুর তৈরি করতে পারবেন। পুরপ্রধান জানান, সারা বছর বাঙালি দুর্গাপুজোর জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। উৎসব সফল করার জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন মৃৎশিল্পীরাই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙালির এই উৎসবকে পৃথিবীর মানচিত্রে নতুনভাবে তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তিনি ঘোষণা করেছেন, দুর্গাপুজোকে আরও স্বাবলম্বী করার জন্য চলতি বছরে ৮৫ হাজার টাকা করে প্রত্যেক ক্লাবকে দেওয়া হবে। মৃৎশিল্পীদের চরম এই চ্যালেঞ্জের সমাধান কীভাবে করা যায় তা আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।

আরও পড়ুন-বাংলার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের বঞ্চনা,  সংসদে সোচ্চার ঝাড়গ্রাম, বর্ধমানের সাংসদ

এলাকার মৃৎশিল্পী সমীর পাল জানান, ১০০ বছর ধরে আমাদের পরিবার দুর্গা ঠাকুর তৈরি করে আসছে। প্রতিবারই বর্ষার সময় প্রচণ্ড সমস্যা হয় ঠাকুর গড়তে। কলকাতার কুমোরটুলির মতো পুরসভা যদি সব মৃৎশিল্পীর জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা করে দেয় তাহলে আমাদের খুব সুবিধা হয়। আরেক মৃৎশিল্পী গৌতম পাল বলেন, রাস্তার ধারে বা অন্য কোথাও কোনও রকমে চালা বেঁধে প্রতিবার আমাদের ঠাকুর তৈরি করতে হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা আবেদন করব, যেভাবে সরকার পুজো সংগঠকদের সাহায্য করছে সেভাবে মৃৎশিল্পীদের দুর্দশা কাটাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে নিশ্চিন্তে কাজ করা যায়। সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী জানান, মৃৎশিল্পীদের দাবি ভেবে দেখার মতো। তাঁদের আঙুলের ছোঁয়ায় আমরা সুন্দর মা দুর্গা উপহার পাই। এটা বাঙালির অহংকার এবং গর্বের উৎসব। মৃৎশিল্পীদের সমস্যার বিষয় নিয়ে যথাস্থানে আমি আলোচনা করব।

Latest article