প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এবার মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের নামে কলকাতার একটি রাস্তার নামকরণ করল কলকাতা পুরসভা। চিড়িয়া মোড় থেকে দমদম স্টেশন পর্যন্ত যে রাস্তাটি এতদিন দমদম রোড (Dumdum Road) নামে পরিচিত ছিল এবার সেই রাস্তাটির নাম হল ‘মহাপ্রভু চৈতন্যদেব সরণি’।
মহাপ্রভুর গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারের সঙ্গে কলকাতার গঙ্গা তীরবর্তী স্থান যেমন পানিহাটি, খড়দহ, বরানগরের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শ্রীচৈতন্যভাগবত অন্ত্যখণ্ড থেকে জানতে পারা যায়, আনুমানিক ১৪৩৬-৩৭ সাল ও ইংরেজির ১৫১৪ খ্রিস্টাব্দে নীলাচল অর্থাৎ পুরী যাওয়ার পথে মহাপ্রভু রামকেলি গ্রাম থেকে যাত্রাপথে পানিহাটিতে শ্রীরাঘব পণ্ডিতের বাড়িতে আসেন। সেখান থেকে বরানগরে শ্রীল ভাগবতাচার্যর গৃহে সঙ্গীদের নিয়ে আসেন। ভক্তি শাস্ত্রে বিশেষ দক্ষ শ্রীল ভাগবতাচার্য মহাপ্রভুকে দেখে শ্রীভাগবত পাঠ করেন। কিছুদিন ওখানে থেকে মহাপ্রভু তাঁকে শ্রীচরণ-পাদুকা প্রদান করেন। সেখান থেকে নীলাচলের উদ্দেশ্যে যাত্রাপথে কিছু সময় তিনি শ্রীগৌড়ীয় মঠ, বাগবাজারের এই ভূমিতে বিশ্রাম করে সেখান থেকে রওনা দেন।
আরও পড়ুন- বিশ্ববাজারে ৪০ শতাংশ চাকরি ধ্বংস করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
তাই কলকাতার বিভিন্ন স্থান, বিশেষত বরানগর, বাগবাজার অঞ্চল মহাপ্রভুর পদাঙ্কপুত। বাগবাজার শ্রীগৌড়ীয় মঠের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে দীর্ঘদিন ধরে আর্জি জানানো হয়, এই অঞ্চলের কোনও রাস্তা মহাপ্রভুর নামে হোক। এই মর্মে গত ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর মঠ কর্তৃপক্ষ কলকাতা পুরসভাকে আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি দেয়। ওই বছরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাগবাজারে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু মিউজিয়ামের উদ্বোধন করতে এসে মঞ্চ থেকেই পুরসভাকে চৈতন্যদেবের নামে রাস্তার নামকরণের নির্দেশ দেন। কিন্তু বরানগর ও বাগবাজার পার্শ্ববর্তী সব রাস্তা হেরিটেজ তকমা পেয়েছে। তাই এই রাস্তাগুলির নাম পরিবর্তন করা সম্ভব নয় বলে চিড়িয়া মোড় থেকে দমদম পর্যন্ত দমদম রোড (Dumdum Road) রাস্তাটিকে নির্বাচন করা হয়। ওই রাস্তার নাম দেওয়া হয় ‘মহাপ্রভু চৈতন্যদেব সরণি’। বাগবাজার গৌড়ীয় মঠের প্রচেষ্টায় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উদ্যোগে কলকাতা পুরসভার এই কাজকে চৈতন্য অনুরাগী সব মহলই স্বাগত জানিয়েছে। মহাপ্রভুকে নিয়ে যাঁরা বিভিন্ন গবেষণাধর্মী কাজ করে চলেছেন এমন কাজ তাঁদের আরও অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করবে।