প্রতিবেদন : গত পয়লা জুন নিগৃহীত কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের আন্দোলনের সমর্থনে এক মৌন মিছিলে শামিল হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক পরের দিন সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়াদের উপর নিপীড়নের প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিলেও নেতৃত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেদিন মিছিলে অংশ নেওয়া বাংলার দুই জাতীয় স্তরের কুস্তিগির রবি জয়সওয়াল ও নন্দন দেবনাথকে সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। যেমন কথা, তেমনই কাজ। বৃহস্পতিবার নবমহাকরণে ক্রীড়া দফতরের কার্যালয়ে রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র দুই কুস্তিগিরের হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন-শুভমনেই আস্থা রাখছেন রোহিত
অনুষ্ঠানে ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘‘রবি ও নন্দন দু’জনেই জাতীয় স্তরের কুস্তিগির। রাজ্য ও জাতীয় স্তরে অনেক সাফল্য পেয়েছে ওরা। গত ৬ জুন গ্রুপ ‘ডি’-তে ওদের সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ওদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। আগামী দিনে ওরা বাংলার কুস্তিকে আরও শক্তিশালী করবে। রাজ্য ও জাতীয় দলের হয়ে পদক জিতবে। এই আশায় বুক বেঁধেই আমরা ওদের পাশে থাকব।’’
আরও পড়ুন-বার্সায় ফিরতে চেয়েছিলাম ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়ে মেসি
সরকারি চাকরির নিরাপত্তা পেয়ে কুস্তিতে নিজেদের আরও উন্নত করতে চান দুই কুস্তিগির। বিডন স্ট্রিটের বাসিন্দা রবি তাঁর মায়ের সঙ্গে দশকর্মার দোকান চালান। বাবা প্রয়াত হয়েছেন। সংসার চালাতেই হিমশিম খান। কুস্তির জন্য পুষ্টিকর খাবারই পান না। রবি বলছেন, ‘‘আমাদের একটা সুযোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ভাল পারফরম্যান্স করতে হলে সঠিক খাবার প্রয়োজন। তবেই আমরা আরও এগিয়ে যেতে পারব। আমাদের অভাব, যন্ত্রণা অনুভব করে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী এগিয়ে এসে সাহায্য করলেন, তাতে আমরা আজীবন ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।’’ কুস্তিগির নন্দন আলিপুরদুয়ারের ছেলে হলেও এখন কলকাতায় ১০০ দিনের কাজ করেন। বললেন, ‘‘আমার স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মা দুর্গার মতো আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ক্রীড়ামন্ত্রীও আমাদের খুব সাহায্য করছেন। আশা করি, এভাবেই কুস্তিগিরদের পাশে থাকবে সরকার। বাংলার কুস্তিও এগিয়ে যাবে।’’
আরও পড়ুন-উত্তরপ্রদেশে গণধর্ষণে মৃত কিশোরী অভিযুক্ত এক বিজেপি নেতা
ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বললেন, ‘‘দেশে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ সরকারই প্রতি বছর রাজ্যের ৩৬টি ক্রীড়া সংস্থাকে ৫ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেয়। যখন তারা জাতীয় শিবির আয়োজন করে, তখনও সংস্থাগুলিকে সাহায্য করা হয়। আগে রাজ্য সরকারের চারটে অ্যাকাডেমি ছিল। খড়দায় ফুটবল অ্যাকাডেমির পাশাপাশি ঝাড়গ্রামে আর্চারি অ্যাকাডেমি, যুবভারতীতে অত্যাধুনিক টেবল টেনিস অ্যাকাডেমি এবং সল্টলেকে টেনিস অ্যাকাডেমি শুরু হয়েছে আগেই। আরও চারটি অ্যাকাডেমি দ্রুত চালু হবে। আমরা পুরুলিয়ায় মহিলা ফুটবলের অ্যাকাডেমি, দমদম সুরের মাঠে শ্যুটিং এবং ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমি এবং সুভাষ সরোবরে সাঁতার অ্যাকাডেমি শুরু করছি। আগামী তিন মাসের মধ্যে সরকারের ৮টি অ্যাকাডেমি পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে।’’