প্রতিবেদন : বিধানসভার অধিবেশন-কক্ষের ভিতরে সেচমন্ত্রীকে ‘‘একমাসের মধ্যে জেলে ঢুকিয়ে দেব’’ এই হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বিজেপির অন্দরেই একঘরে হয়ে পড়েছে দলবদলু শুভেন্দু। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও বিজেপির বেশিরভাগ বিধায়কই বিরোধী দলনেতার এই অপরিণত আচরণে ক্ষুব্ধ। তাঁরা কেউই রাজ্যের একজন মন্ত্রীকে বিধানসভার ভিতরে এভাবে জেলে ঢোকানোর হুমকি দেওয়াকে ভাল চোখে দেখছেন না। এতে আদতে জনসমক্ষে এটা প্রমাণিত হচ্ছে যে, ইডি-সিবিআই বিজেপির কথা অনুযায়ী চলছে— আর এ-রাজ্যে শুভেন্দুর অঙ্গুলিহেলনেই কাজ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি।
আরও পড়ুন-অবৈজ্ঞানিক-অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত রেলকর্তাদের, ইন্টারলকিংয়ে লক্ড জনজীবন
শুক্রবার বিধানসভায় সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে হুমকি দেওয়ার পর বেশ কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক-সাংসদ ফোন করেন পার্থ ভৌমিককে। হোয়াটসঅ্যাপও করেছেন কয়েকজন বিধায়ক। পার্থ ভৌমিককে বিজেপির বিধায়ক-সাংসদরা পরিষ্কার জানিয়েছেন, বিরোধী দলনেতার আচরণে ও ‘‘জেলে ঢুকিয়ে দেব” মন্তব্য তাঁরা মোটেই সমর্থন করেন না। এ-বিষয়ে তাঁরা শুভেন্দুর সঙ্গে নেই। দলের ওপরমহলেও তাঁরা বিষয়টি জানিয়েছেন। এই ঘটনার ফলে বিজেপির যে মুখ পুড়েছে তাও জানিয়েছেন ওই বিধায়ক-সাংসদরা। শনিবার বিধানসভায় সেচমন্ত্রীর আনা স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ গৃহীত হয়েছে। তা প্রিভিলেজ কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। এরপর নিয়মমাফিক যা হওয়ার তা হবে।
আরও পড়ুন-ধর্মঘটে কেন এলেন না? অভিভাবক বিক্ষোভে শিক্ষকরা
শুক্রবার বিধানসভা থেকে বেরোনোর পর পার্থর মোবাইলে প্রথম ফোন আসে উত্তরের এক সাংসদের। তার পরের ফোনটাই আসে বিজেপির এক পরিষদীয় নেতা-বিধায়কের। তাঁরা দু’জনেই বলেন, আজ লজ্জায় আমাদের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে সদনে। এই ধরনের নোংরা রাজনীতি আমরা সমর্থন করছি না। যদি আপনাকে জেলে ঢোকায়ও আমরা যাব আপনার সঙ্গে দেখা করতে। হোয়াটসঅ্যাপ করেও একাধিক বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। এই ঘটনায় বিরোধী দলনেতা যে কার্যত বিজেপির পরিষদীয় দলেই একঘরে হয়ে গিয়েছেন তা স্পষ্ট।
আরও পড়ুন-ধর্মঘটে কেন এলেন না? অভিভাবক বিক্ষোভে শিক্ষকরা
যদিও সেচমন্ত্রী এ-বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তিনি শুধু বলেন, আমি স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ দিয়েছি। এরপর অধ্যক্ষ যা করার করবেন। শুক্রবারের ঘটনার পর তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁকে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য বলা হলেও সেচমন্ত্রী তা নিতে চাননি। ঘনিষ্ঠ মহলে পার্থ বলেছেন, আমি এমন কোনও কাজ করিনি যে শুভেন্দুর হুমকিতে ভয় পেতে হবে। ফলে আমি আমার কাজ করে যাব। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার পাশে আছেন। তাঁরা আমায় ভাল করে জানেন। আমি হুমকিটুমকি নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত নই।