সামনেই পঞ্চায়েত (Panchayat) ভোট আর গতকাল ১লা জানুয়ারী ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস। সবমিলিয়ে রাজনীতির আবহাওয়া বেশ গরম। এর মধ্যেই আজ নজরুল মঞ্চে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের মেগা বৈঠক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক থেকে শুরু করে সব স্তরের নেতানেত্রীরা। এদিন সেই মঞ্চ থেকেই ‘দিদির দূত’ অ্যাপের কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেতন নেন না, দলের নেতা-কর্মীদের নির্লোভ হওয়ার বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এদিন মঞ্চ থেকে উপস্থিত সকলকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তারপর তিনি নিজের বক্তব্য রাখেন। বিরোধীদের আক্রমণ থেকে শুরু করে সরকারি প্রকল্পে সাধারণ মানুষের সুবিধা নিয়ে বার্তা দেন তিনি। “দিদির সুরক্ষা কবচ” নামক একটি বিশেষ কর্মসূচি নিয়েও স্পষ্ট করে বক্তব্য রাখেন তিনি। সেই প্রকল্পে পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনসংযোগে অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূলের সাড়ে ৩ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক ‘দিদির দূত’ হয়ে রাজ্যের ১০ কোটি মানুষের বাড়িতে যাবেন। মানুষকে জানাবেন মমতা সরকারের ১৫টি ‘ফ্ল্যাগশিপ’ প্রকল্পের বিষয়বস্তু । কোনও প্রকল্প পেতে অসুবিধা হচ্ছে কি না, তা-ও জানতে চাইবেন দিদির দূতেরা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কোনও পরামর্শ থাকলেও তা নথিভুক্ত করবেন দিদির দূতেরা। এরপরেই অ্যাপের মাধ্যমে সেটা চলে যাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। সেই সঙ্গে নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে। তিনি লেখেন,
আরও পড়ুন-দুয়ারে ‘দিদির দূত’,পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের মাস্টারস্ট্রোক
“আমি চেয়ে আছি তোমাদের সবাপানে।…
যেথা ভেদ নাই মানে আর অপমানে
স্থান দাও সেথা সকলের মাঝখানে।”
আপনাদের সকলকে ইংরেজি নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা। এই নতুন বছরের প্রত্যেকটি দিন হোক আপনাদের কলুষ মুক্ত।
আমার প্রিয় মাতৃভূমির জন্য আমি নিজের গোটা জীবন উৎসর্গ করেছি। এই বাংলাকে সর্বক্ষেত্রে শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার ব্রত নিয়ে আমি নিরলস পরিশ্রম করে চলেছি। মানুষের মাঝে পৌঁছে গিয়ে তাঁদের বিবিধ সমস্যার সমাধান করতে আমি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছি যাতে তাঁদের মুখের হাসি কোনোদিন মলিন না হয়।
আজ সেই লক্ষ্যে আরো এক ধাপ এগোলাম আমরা। আমাদের দায়বদ্ধতা মানুষের কাছে। তাই সাধারণ মানুষের ক্ষুদ্রতর সমস্যা দূর করতে আমরা নিয়ে এসেছি, “দিদির সুরক্ষা কবচ” নামক একটি বিশেষ কর্মসূচি। এই নবতম উদ্যোগের মাধ্যমে, আপনাদের বাড়ির দুয়ারে পৌঁছে যাবে আমার দূতেরা এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ১৫টি প্রকল্পের বিষয়ে আপনাদের সমস্যা, মতামত জানবেন। আপনাদের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত অক্লান্ত প্রয়াস অব্যাহত রাখবো।
আরও পড়ুন-‘বিজেপি কংগ্রেসের বি টিম, সিপিএমের সি টিম’ তোপ মুখ্যমন্ত্রীর
আপনারা আছেন তাই আমি আছি। আমার রাজ্যবাসীই, আমার জীবনের চালিকাশক্তি। আপনাদের বিন্দুমাত্র সমস্যা, আমার বেদনার কারণ। আমি সারাজীবন শুধু আমার গণদেবতার কাছেই মাথা নত করেছি। তাই আমি বারবার বলি,
“আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণধুলার তলে। সকল অহংকার হে আমার ডুবাও চোখের জলে॥”
মা-মাটি-মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তাঁরাই আমার প্রাত্যহিক জীবনের চরৈবেতির মন্ত্র।
সকলে ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।