প্রতিবেদন : যোগী প্রশাসনের অপদার্থতা বেআব্রু হয়ে গেল আরও একবার। প্রমাণিত হল, সে-রাজ্যে পড়তে আসা ভিনরাজ্যের ছাত্রীদেরও জীবনরক্ষায় ব্যর্থ ডবল ইঞ্জিন সরকারের গেরুয়া প্রশাসন। শুধু তাই নয়, নিজেদের অপদার্থতা ঢাকতে খুনকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতেও দ্বিধা করল না গেরুয়া পুলিশ। নিট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে বারাণসীতে এসেছিলেন বিহারের সাসারামের ১৭ বছরের এক তরুণী। কিন্তু রহস্যজনকভাবে খুন হতে হল তাঁকে। খুনের আগে তাঁকে ধর্ষণও করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ।
আরও পড়ুন-‘যথাযথ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা কতটা জরুরি’, দিল্লির পদপিষ্টের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর শোকপ্রকাশ
দিনপাঁচেক আগে হস্টেলের ঘরে পাওয়া গেল তরুণীর ঝুলন্ত দেহ। সবচেয়ে রহস্যজনক বিষয় হল, বাড়ির লোকেদের খবর না দিয়েই ছাত্রীর দেহ দ্রুত দাহ করে ফেলতেও দৃষ্টিকটুভাবে তৎপর হয়ে উঠল প্রশাসন। চেষ্টা করা হল দেহ লোপাটেরও। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিন্দা এবং ধিক্কারের ঝড় উঠেছে ডবল ইঞ্জিন ২ প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে। বিরোধী দলগুলো তো বটেই, বিহারের শাসক বিজেপি ও তার বন্ধুরাও যোগীরাজ্যের এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছে। দাবি জানিয়েছে নিরপেক্ষ তদন্তের। কিন্তু অবাক কাণ্ড, এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর নিন্দায় একটি বাক্যও খরচ করেনি সিপিএম। কারণটা কী? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন রাম-বাম আঁতাতের এ এক নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। রাম-বামের এই পরিকল্পিত নাটক নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, বিহারের ছাত্রী মারা গেল উত্তরপ্রদেশে। আর পরিবারকে না জানিয়ে ময়না তদন্ত করে তড়িঘড়ি দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হল। এখানে যারা গোপনে পোস্টমর্টেমে সই করে সব ঠিক আছে বলেও নাটক দেখাতেন, সেই বিজেপি-সিপিএমের নেতা, অভিনেতা-অভিনেত্রী, চিত্রপরিচালকরা এখন কী বলবেন এই ঘটনা নিয়ে? কয়েকদিন আগেই যোগীরাজ্যের সাহারানপুরে পণের দাবিতে এক গৃহবধূকে এইচআইভি ইঞ্জেকশন দিয়েছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তখনও চুপ সিপিএম। যে সিপিএম বাংলায় কথায় কথায় তিলকে তাল করে বিভ্রান্ত করে মানুষকে। অস্তিত্বরক্ষায় মরিয়া হয়ে মিথ্যাচার করে চলে লাগামহীনভাবে। যে সিপিএম শাসিত কেরলের মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের যৌনাঙ্গে ডাম্বেল ঝুলিয়ে র্যা গিং করা হয়। যোগীরাজ্যের ব্যাপারে তাদের অদ্ভুত মৌনতার নেপথ্যে যে রাম-বামের অশুভ আঁতাত তা আজ দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট।
এটা ঘটনা, যোগী প্রশাসনের অপদার্থতার কারণেই নিট পরীক্ষা দেওয়া আর হল না বিহারের সাসারামের মেধাবী তরুণীর। তার আগেই বারাণসীতে রহস্যজনকভাবে খুন হতে হল বিহারের সাসারাম থেকে আসা ১৭ বছরের এক ছাত্রীকে। রহস্যজনকভাবে হস্টেলে মিলল ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ। তড়িঘড়ি দেহ সৎকারের চেষ্টা হল ডবল ইঞ্জিন উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে। সঙ্গত কারণেই বিহারের ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে প্রশ্নের মুখে যোগী সরকার। পরিবারের অভিযোগ, প্রথমেই ঘটনাটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তবে পরিবারের জোরালো দাবির পরে অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্তে বাধ্য হয় যোগীর পুলিশ। বিহারের ছাত্রীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে বিহারের বিজেপি-সহযোগী নেতারা এবার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতেও সরব।
বিহারের সাসারামের বাসিন্দা ওই ছাত্রী নিট পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বারাণসীর একটি মহিলা হস্টেলে থাকতেন। সোমবার রাতে ১৭ বছরের পড়ুয়ার সঙ্গে বাড়িতে ফোনে কথা হয় মায়ের। এমনকী ভিডিও কলে নিজের খাবারও দেখান ওই ছাত্রী। এরপরই সকালে বিহারের বাড়িতে খবর পৌঁছায়, তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে।
আরও পড়ুন-দশদিন পর বন দফতরের ফাঁদে প্রধানপাড়ার ত্রাস
পুলিশ মৃত্যুর খবরও তাঁদের জানায়নি বলে দাবি পরিবারের। স্থানীয় এক পরিচিতের থেকে খবর পেয়ে তাঁরা ছুটে আসেন। সুস্থ, স্বাভাবিক মেয়ে, যাকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন বাবা-মা, সেই মেয়ের আচমকা এই পরিণতিতে প্রথমে খানিকটা দিশাহারা হয়ে পড়ে পরিবার। পরে তাঁরা বারাণসী পৌঁছন ও দাবি করেন তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে। চাপে পড়ে খুনের অভিযোগ নিতে বাধ্য হয় বারাণসী পুলিশ। দ্রুত ময়নাতদন্ত শেষ করে দেহ সৎকারের জন্যও চাপ দেয় পুলিশ, অভিযোগ পরিবারের।
এরপরই এই রহস্য-মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। মোমবাতি মিছিল করে জানানো হয় তীব্র ধিক্কার। সাংসদ উপেন্দ্র কুশওয়াহা যোগী প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত ও সরাসরি যোগী আদিত্যনাথের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। আসলে যোগীর গেরুয়া প্রশাসনের উপরে আর ভরসা রাখতে পারছে না বিজেপির বন্ধু দলগুলোও।