প্রতিবেদন : দরদর করে ঘামতে ঘামতে দৌড়ে থানায় ঢুকলেন এক ব্যক্তি। মুখে-চোখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। ভয়ে চোখগুলো যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসছে। কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে হাতজোড় করে বললেন, স্যার তাড়াতাড়ি চলুন। ওরা যে গুলি করে একের পর এক মানুষকে মেরে ফেলছে। কিন্তু এই কথায় খুব একটা পাত্তা দিলেন না ওই পুলিশ আধিকারিক। পুলিশের উদাসীন ও নির্বিকার ভূমিকা দেখে ওই ব্যক্তি কাতর স্বরে বললেন, স্যর, ওরা যে সবাইকে মেরে ফেলবে। দয়া করে একবার চলুন।
ওই ব্যক্তির ঘ্যানঘ্যানিতে বিরক্তই হলেন দায়িত্বে থাকা ওই পুলিশ আধিকারিক। সাফ জানালেন, মরছে তো আমি কী করব? থানায় কোনও ফোর্স নেই। যারা মরছে তাদের মরতে দিন। পুলিশ আধিকারিকের এই উত্তর শুনে কার্যত স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এরপরেও বারবার অনুনয় বিনয় করায় ওই ব্যক্তিকে থানা থেকে রীতিমতো বের দেওয়া হয়েছিল। মানুষের নিরাপত্তার ভার পুলিশের। অথচ সেই পুলিশই যে তাঁকে এভাবে তাড়িয়ে দেবে সেটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি ওই ব্যক্তি। তাই পুলিশের কাছে কোনও রকম সাহায্য না পেয়ে বিফল হয়ে আবার গ্রামের উদ্দেশে হাঁটা লাগান তিনি। ওই ব্যক্তির বক্তব্য জানার পর বিজেপি শাসিত রাজ্যে পুলিশের ভূমিকা দেখে স্তম্ভিত গোটা দেশ। শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের (Madhya pradesh shooting) মোরেনার দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষে গুলি চালানোর ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। সকলেই ওই দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অধিকারিকের কড়া শাস্তির দাবি করেছে।
ওই ব্যক্তি গ্রামে ফিরে দেখেন তাঁর পরিবারের ৬ জন গুলিবিদ্ধ (Madhya pradesh shooting) হয়ে মারা গিয়েছেন। তাঁর আফসোস, পুলিশ যদি সময়মতো গ্রামে আসত তবে অকালে এতগুলি প্রাণ ঝরে যেত না। শুক্রবারের ঘটনায় কোনওভাবেই তিনি ওই পুলিশ কর্মীকে ক্ষমা করতে পারছেন না।
গজেন্দ্র সিং এবং ধীর সিংয়ের মধ্যে জমি নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে বিবাদ চলছে। ২০১৩ সালে ধীর সিংয়ের পরিবারের দুই সদস্যকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল গজেন্দ্রর বিরুদ্ধে। তার পর থেকে গ্রামছাড়া ছিলেন তাঁরা। স্থানীয় প্রশাসন দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করে। তার প্রেক্ষিতেই শুক্রবার গ্রামে ফেরেন গজেন্দ্র এবং তাঁর পরিবার। তাঁরা গ্রামে ফিরতেই ধীর সিংয়ের লোকেরা গজেন্দ্রর পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। একের পর এক গুলিতে লুটিয়ে পড়েন তিন মহিলা। কিছুক্ষণের মধ্যেই গজেন্দ্র, তাঁর ছেলে এবং নাতিরও মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন- নিকেশ দুই জঙ্গি