তুহিনশুভ্র আগুয়ান, মহিষাদল: খোকা ঘুমলো পাড়া জুড়লো বর্গি এল দেশে— সেই বিখ্যাত ছড়া এখনও মনে পড়ে সকলের। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের মীরপুর গ্রামের পর্তুগিজদের কাহিনি কিছুটা এই কবিতার লাইনের মতো। ১৭ শতাব্দীর মাঝের দিকে বাংলায় বর্গিহানার আতঙ্ক প্রবল। সেই সময় মহিষাদলে বাণিজ্য রমরমা পর্যায়ে। তাই বর্গিহানা থেকে মহিষাদলকে রক্ষা করতে সুদূর গোয়া থেকে পর্তুগিজদের বাংলায় নিয়ে আসেন স্থানীয় মহিষাদল রাজপরিবার। গোয়া থেকেই ১২টি উপজাতি পর্তুগিজের বসবাস গেঁওখালির মীরপুরে। তাঁদের সূত্রেই পর্তুগিজপাড়ায় গড়ে উঠেছে ঐতিহাসিক গির্জা।
আরও পড়ুন-সেতু তৈরির জমি-ভিক্ষায় দাতাদের দুয়ারে ড. হুমায়ুন
সেই পর্তুগিজরা বর্তমানে বাঙালি সংস্কৃতিতে মিলেমিশে একাকার। তবু তাঁদের রক্তে পূর্বপুরুষদের ছোঁয়া। সেই নিয়েই আজও গেঁওখালি মীরপুরে পেডেরা, লঘু, ডিক্রস, রোজারিও, তেসরা প্রমুখ বড়দিন এলেই মেতে ওঠেন নতুন উন্মাদনায়। গির্জায় হয় প্রভু যিশুর নামে প্রার্থনা। মীরপুরে বড়দিনকে কেন্দ্র করে চলছে জোর প্রস্তুতি। দেওয়ালে পড়েছে নতুন রঙের প্রলেপ, রাস্তা জুড়ে রাঙিয়ে তুলছে রংবাহারি আলো। বড়দিনের আগের দিন রাতে বারোটা বাজলেই খ্রিস্টীয় অধিবাসীরা চার্চে গিয়ে শুরু করেন প্রভু যিশুর উপাসনা। শুরু হয় বাইবেলপাঠ। মধ্যরাতের এই অনুষ্ঠানকে বলা হয় ‘খ্রিস্টের জাগরণ’।