প্রতিবেদন : আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন নিয়ে সিবিআইয়ের চার্জশিট জমা পড়ার পর সামনে আসছে একের পর এক এমন তথ্য যা ফুটো করে দিচ্ছে এতদিনকার ষড়যন্ত্রের ফানুস। ভেঙেচুরে যাচ্ছে মনগড়া সব বিকৃত তথ্যের দেওয়াল। মিথ্যাচারের বেসাতি। দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে তৈরি করা একটার পর একটা ভয়ঙ্কর ন্যারেটিভ আসলে জাল। এমনকী সিবিআইয়ের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে যেসব গালগল্প শুনিয়েছিলেন, তার একটি লাইনও সিবিআই তাদের পেশ করা চার্জশিটে দেয়নি। বরং তারা সেখানে স্পষ্ট লিখেছে, কলকাতা পুলিশের করা ময়নাতদন্ত, সুরতহাল এবং ভিডিওগ্রাফি সব নিয়ম মেনেই হয়েছে। এই একই কথা তাদের জানিয়েছেন দিল্লি এইমসের ডাক্তাররা।
আরও পড়ুন-রোগী পরিষেবায় খামতি নয়, মুখ্যসচিবের নির্দেশ মেডিক্যাল কলেজগুলিকে
এখানেই শেষ নয়, চার্জশিটের ১৬.২২ অনুচ্ছেদ, ১৭ নম্বর পাতার ১৬.২৪ অনুচ্ছেদ এবং ২০ নম্বর পাতা-সহ গোটা রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে লেখা হয়েছে কলকাতা পুলিশের করা তদন্ত প্রক্রিয়া একদম সঠিক ছিল। তাদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ১২৮ জনের বয়ান নিয়ে নতুন করে তদন্ত করে যা পাওয়া গিয়েছে তার সঙ্গে কলকাতা পুলিশের তদন্ত রিপোর্টের বিশেষ কোনও ফারাক নেই। এ-বিষয়ে চার্জশিটে সিবিআই লিখেছে, দিল্লির সিএফএসএল টিমের দেওয়া রিপোর্টেও সেকথা প্রমাণিত। এছাড়া অকুস্থলের যে থ্রিডি ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে এবং সিপিডব্লুডি টিম যে পর্যবেক্ষণ করেছে তার রিপোর্টও সন্তোষজনক বলে উল্লেখ রয়েছে। মঙ্গলবার তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ চার্জশিটের নথি তুলে দেখিয়ে এই সব ক’টি বিষয় ব্যাখ্যা করে বলেন, বিরোধী দল-সহ একশ্রেণির ডাক্তার এবং আরও বোদ্ধা যেভাবে সবটা কলুষিত করতে মাঠে নামলেন এবার তাঁরা কী বলবেন?
আরও পড়ুন-জনস্রোতে উৎসবের জনকল্লোল
প্রসঙ্গত, ৫৮ দিনের মাথায় যখন সিবিআই প্রথম চার্জশিট জমা দেয় তখন দেখা যায় কলকাতা পুলিশ যে গ্রেফতারি করেছিল সেটাই সঠিক। ময়নাতদন্তে কোনও গাফিলতি নেই। কারচুপির কোনও প্রমাণ মেলেনি। শুধু তাই নয়, এই ধর্ষণ-খুনে এখনও ধৃত সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। সুতরাং, কলকাতা পুলিশ যে একজনকে গ্রেফতার করে তদন্ত এগিয়ে ছিল তা সঠিক পথেই এগোচ্ছিল।
২১৩ পাতার চার্জশিটে ঘটনার ও তদন্তের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা রয়েছে। তরুণীর ধর্ষণ-খুনের পরে বারবার উঠছিল গণধর্ষণ, খুনের পরে ধর্ষণের গুজব। কিন্তু ময়নাতদন্তের নথি বলছে অভিযুক্ত সঞ্জয় প্রথমে ঘুমন্ত অবস্থায় তরুণীকে মারধর করায় তাঁর থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের হাড় ভেঙে যায়। তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়লে ধর্ষণ করা হয়। এর পরে মৃত্যু সুনিশ্চিত করতে শ্বাসরোধ করা হয়। নিহত চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের সময়ে উপস্থিত ছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররাও। রিপোর্টে তাঁরা সইও করেন। তার পরেও কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কুণাল বলেন, চার্জশিটে দেখা যাচ্ছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোনও গরমিল করা হয়নি।