যাবতীয় বিতর্কর অবসান ঘটিয়ে এবার সুষ্ঠুভাবে পৌষ মেলা শুরু হতে চলেছে এমনটাই দাবি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। অতীতের উপাচার্যের করে যাওয়া ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলাকে (Poush Mela) বিতর্কমুক্ত রাখতে সচেষ্ট সব পক্ষ।
আসন্ন পৌষ মেলা (Poush Mela) নিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পাঠাগারে বাংলার চন্দ্রনাথ সিনহা ও বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর প্রবীর কুমার ঘোষের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হল বৃহস্পতিবার। দীর্ঘ ম্যারাথন বৈঠকের পর বিশ্বভারতী রূপাচার্য ডক্টর প্রবীর কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, এবার থেকেই প্রথম ১০০ শতাংশ স্টল বন্টনের ব্যবস্থা করা হয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে। শেষবার এই স্টল বন্টন নিয়ে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ আসায় সর্বসম্মতভাবে বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে কোনভাবেই অনলাইন ছাড়া স্টল বন্টন করা যাবেনা। বোলপুর পুরসভা এই পৌষ মেলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মেলার মাঠ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য। পৌষ মেলায় আগত কয়েক লক্ষ পর্যটকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বীরভূম জেলা পুলিশ তাদের সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন করেন।
এবারেও পৌষ মেলা ছয় দিন পুলিশের ক্যাম্প থাকবে পৌষ মেলার মাঠে। শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পরিষদ পৌষ মেলায় আঙ্গিকভাবে জড়িত। আগামী সপ্তাহের প্রথম থেকেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের স্টল বন্টন শুরু করে দেওয়া হবে। ৭৫ শতাংশ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মেলার মাঠে জায়গা দেওয়া হবে, বাকি ২৫ শতাংশ প্রত্যেকের জন্য অনলাইনে আবেদন করার ব্যবস্থা করা হবে। এবারে স্টল বন্টনের ক্ষেত্রে কোন রকমের নগদ লেনদেন করা হবে না। যদি কোন ব্যবসায়ী স্টল নেওয়ার পরে কোনো কারণে স্টল ফেরত দিয়ে দেয় তাহলে তার জমা রাখা অর্থ একদিনের মধ্যে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অনলাইনের মাধ্যমে ফেরত দেওয়া হবে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং বীরভূম জেলা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, যে কমিটি মেলা শুরুর তিনদিন আগে গিয়ে যাচাই করে দেখবে, যে ব্যবসায়ী অনলাইনে আবেদন করেছিলেন স্টল নেওয়ার জন্য তিনিই প্রকৃত নিয়েছেন কিনা।
আরও পড়ুন-BLO-দের SIR-এর কাজ দেখতে এসে মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক
এবারে স্টলের সংখ্যা বাড়বে গতবারের তুলনায়। তবে এবার স্টল ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে না। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার জানিয়েছেন, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনেই মেলা হবে ছয় দিন। রাজ্যের মন্ত্রী ও শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, অতীতের উপাচার্যের মতো এক ভুলের পুনরাবৃত্তি না করে অত্যন্ত সাবলীল এবং দক্ষতা এবং পৌষ মেলা করার সদিচ্ছা নিয়ে বৈঠক করেছেন বর্তমান উপাচার্য। সভাধিপতি কাজল শেখ প্রত্যেকবারের মতো দায়িত্ব পালন করবে। রাজ্য সরকারের প্রশাসন অতীতে পৌষমেলায় যে ভাবে দায়িত্ব পালন করে এসেছে এবারেও তার অন্যথা হবে না। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ব্যবসায়ী যারা পৌষ মেলায় ব্যবসার জন্য আসবেন তাদের কাছে বিশ্বভারতী কোনরকম ভাড়া নেবে না। তবে তাদেরকে একটি বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হবে সরকারিভাবে। এদিনের বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে বীরভূমের জেলাশাসক ধবল জৈন ও বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ।

