গ্রামের মহিলাদের মাশরুম প্রশিক্ষণ দিয়ে আয়ের উৎস গড়ে দিচ্ছে রাজ্য

এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তরফে গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর করতে একাধিক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Must read

তুহিনশুভ্র আগুয়ান, তমলুক: ১০০ দিনের কাজের টাকায় কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তরফে গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর করতে একাধিক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের সিএডিসি প্রজেক্টের মধ্যে গ্রামীণ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ইতিমধ্যে মাশরুম তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া চলছে। যাকে ঘিরে স্বনির্ভর হচ্ছেন জেলার হাজার হাজার গ্রামীণ মহিলা। ইতিমধ্যে জেলার প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার মহিলা এই প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বনির্ভরতার মুখ দেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মাশরুম তৈরি করে আয়ের উৎস দেখছেন তাঁরা। কোনও আচার-অনুষ্ঠান কিংবা হোটেল- রেস্টুরেন্টে নিরামিষ খাদ্য তালিকায় মাশরুম (Mushroom) অন্যতম উপকরণ।

আরও পড়ুন-পর্যটকদের জন্য বিশেষ ভাবনা জেলা পরিষদের, প্রকল্পে ব্যয় ১৫ লক্ষ, রসিকবিলে জলপ্রকল্পের শিলান্যাস

মাশরুম দিয়ে নানা ধরনের সুস্বাদু, এমনকি পুষ্টিকর পদ রান্না করা হয়। তাই রাজ্য জুড়ে মাশরুমের চাহিদা ব্যাপক বলা চলে। এমনকী রাজ্যের বাইরেও রফতানি হয় মাশরুম। ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সিএডিসি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে বহু গ্রামের মহিলা স্বনির্ভর হয়েছেন। মূলত গ্রাম বাংলার মহিলারা বাড়িতেই খড় এবং মাশরুমের বীজ দিয়ে অল্প খরচে তৈরি করছেন মাশরুম। অক্টোবর থেকে শুরু হয় মাশরুমের বেড তৈরির কাজ। চলে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রথমে খড় কেটে চুন জলে ডুবিয়ে রাখা হয় সারা রাত। এরপর খড় তুলে রোদে শুকনো করার পর তা বেডে লাগানো হয়। সেখানেই মাশরুমের বীজ দিয়ে তৈরি করা হয় মাশরুম। চাল কিংবা গম দিয়ে মাশরুম তৈরি হয়। এক একটি বেড তৈরির জন্য খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এক একটি বেডে মাশরুম উৎপাদন হয় এক থেকে দেড় কেজি। ফলে বেড প্রতি ৩৫ টাকা খরচ করে আয় হয় ৩০০ টাকা পর্যন্ত। ইতিমধ্যে তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী, রামনগর, মহিষাদল-সহ জেলার একাধিক ব্লকে এই প্রশিক্ষণে বিশেষ সাড়া মিলেছে। ফলে মাশরুম থেকে এক একজন মহিলা গড়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করছেন মরশুমে। চার বছর আগে সিএডিসি প্রকল্পের মাধ্যমে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন রিঙ্কু জানা। তা থেকে আজ স্বনির্ভর হয়েছেন তিনি। রিঙ্কু জানান, ‘তমলুকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। গত বছর একশোটি বেড তৈরি করেছিলাম। এ বছর দেড়শো বেড তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্বনির্ভর হতে পেরে ভালই লাগছে।’ তমলুকের সিএডিসি প্রজেক্টের ডেপুটি প্রজেক্ট অফিসার উত্তমকুমার লাহা জানান, ‘আমরা ইতিমধ্যে ৬ থেকে ৭ হাজার গ্রামীণ মহিলাকে এই প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ১০০ দিনের কাজ না থাকায় সেই পরিমাণ অর্থ গ্রামীণ মহিলারা মাশরুম চাষ করে আয় করতে পারছেন। খুবই স্বল্পমূল্যে মাশরুম তৈরি করে তা বাজারে ভাল দামে বিক্রি করে এক একজন মাসে ১৫-১৮ হাজার টাকা রোজগার করতে পারবেন।’

Latest article