প্রতিবেদন : কলকাতা ও হাওড়া থেকে ছ’মাসের মধ্যে ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। দুই শহরেই চলবে না বিএস-৪ গাড়িও। বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত সব গাড়িতেই কার্যকর হবে ওই নির্দেশ। গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ মেনে দুই শহরকে দূষণমুক্ত করতেই এই পদক্ষেপ। কিন্তু গাড়ি বাতিলের রাস্তায় হাঁটলে কার্যত গাড়ি শূন্য হয়ে যাবে শহর। সেই শঙ্কার কারণে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্য। গ্রিন ট্রাইব্যুনালের গাইডলাইনকে মানা হলে দেখা যাচ্ছে রাজ্য থেকে বাতিল হতে পারে প্রায় ৬০ লক্ষ ব্যক্তিগত গাড়ি। আর শহর কলকাতায় সেই বাতিল গাড়ির সংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষেরও বেশি।
আরও পড়ুন-গাছে রাখি বেঁধে, নদীতে ভেলা ভাসিয়ে অভিনব উৎসব পালন
তবে আপাতত ঠিক হয়েছে চিঠি হাতে পাওয়ার পরেই গাড়ির মালিককে পরিবহণ দফতরের শুনানিতে অংশ নিতে বলা হবে। সেই শুনানিতে গাড়ির মালিককে জানাতে হবে, তাঁরা আর পুরনো গাড়ি রাস্তায় নামাবেন না। এরপরেই রাজ্য সরকার এই গাড়িগুলিকে ব্ল্যাক লিস্টেড করবেন। মালিকরা গাড়ি স্ক্র্যাপ করবেন। সেই স্ক্র্যাপ করার কাগজ পরিবহণ দফতরের কাছে জমা দেবেন। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি বাতিলের ক্ষেত্রেই বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কয়েক বছর আগেই কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যে বিএস-৪ গাড়ি চালানোর উপর বিধিনিষেধের কথা বলেছিল। হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও সাধারণের সচেতনতার অভাব এবং পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, অতিমারি-সহ একাধিক কারণে এই নির্দেশ কার্যকর করা যায়নি। এবার তিন দফায় চলবে পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিলের প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুন-কাজ না করলে পদ ছেড়ে দিন কড়া বার্তা জেলা সভাপতির
প্রথম দফায় বাতিল হবে ১ জানুয়ারি ১৯৭০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯ পর্যন্ত গাড়ি। দ্বিতীয় দফায় বাতিল হবে ১ জানুয়ারি ২০০০ সাল থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭ সাল পর্যন্ত গাড়ি। তৃতীয় দফায় ১ জানুয়ারি ২০০৮ সাল থেকে ১৫ বছর ধরে চলা গাড়ি বাতিল করা হবে। প্রথম দফায় বাতিল হওয়া গাড়ির সংখ্যা দাঁড়াবে ৮৪ হাজার। রাজ্য পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় মোটর ভেহিক্যালস আইন তথ্য তুলে ধরে আবেদন করা হবে। তবে আইনে বলা হয়েছে, ১৫ বছর পেরনোর পর গাড়ির হাল ঠিক থাকলে তা আরও পাঁচ বছরের জন্য পুনরায় রেজিস্টার্ড করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে অবশ্য গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং দূষণের মাত্রা ঠিক রাখতে হবে। এ-ছাড়া সম্প্রতি পরিবহণ দফতর তথ্য প্রকাশ করে আরও জানিয়েছে, শুধুমাত্র কলকাতা পুরসভা এলাকাতেই ২০০০ সাল পর্যন্ত রেজিস্টার্ড প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যা ২০ লক্ষ। প্রত্যেক জেলায় তা অন্তত আরও ২ লক্ষ করে বাড়বে। তাই রাজ্যে সব মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ৫০ লক্ষ হয়ে যাবে।