বন্দেশৈল সুতাসুতং গণপতিং

বিদ্যাবুদ্ধি দৌড়ে দেবকুলের সর্বশ্রেষ্ঠ গৌরীপুত্র। অষ্টাবতার রূপে তিনি বধ করেছিলেন অসুরদের। তিনি গজেন্দ্রবদন, গজানন। ভাদ্র মাসে শুক্লা চতুর্থী তিথিকে গণেশ চতুর্থী বা বরদা চতুর্থী বলা হয়। এইদিন দেশ জুড়ে পূজিত হন গণপতি? কে তিনি ? কেন পালিত হয় গণেশ চতুর্থী? লিখলেন তনুশ্রী কাঞ্জিলাল মাশ্চরক

Must read

ঔং খর্বং স্থুলং তনু গজেন্দ্র বদনং লম্বোদরং….
গণেশ বন্দনার শুরুতেই যে মন্ত্রটি বলা হয়। গণেশের প্রায় একশো আটটিটি নাম আছে। এর মধ্যে গজানন, বিনায়ক, গণপতি, সিদ্ধিদাতা, একদন্ত, মহাকায়, গজেন্দ্রবদন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এখন প্রশ্ন হল, বাকি সবের অর্থ বোঝা গেলেও গজেন্দ্রবদন নাম হল কেন? গজেন্দ্রবদন অর্থাৎ হাতির মুখ। হাতির মুখ সত্যিই গণেশের আছে। কিন্তু কেন? এর পেছনে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি।
মহেশ্বর-পত্নী পার্বতী একদিন হলুদ দিয়ে নিজের হাতে একটি পুতুল তৈরি করেন (মতান্তরে চন্দন)। পুরো পুতুল তৈরির পর অপরূপ রূপ নেয় সেই নির্মাণ। পার্বতী বলেন ওই পুতুলই তাঁর সন্তান। নিজের প্রথম সন্তান ভেবে প্রাণ প্রতিষ্ঠাও করেন শিবজায়া। এরপর স্নানে যান তিনি। ছেলেকে তিনি নির্দেশ দিয়ে যান যে, ঘরে যেন কেউ না ঢোকে। ঘর পাহারায় থাকা ছোট্ট ছেলেটি মায়ের আদেশ শিরোধার্য করে কাউকে ঢুকতে দেয় না। এমনকী মহেশ্বরকেও সেই ঘরে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করে। বাধাপ্রাপ্ত হয়ে প্রচণ্ড রেগে মহাদেব, ছেলেটিকে ত্রিশূল দিয়ে আঘাত করেন। তাতে মাথা কেটে উড়ে যায়। স্নান সেরে বেরিয়ে মুণ্ডহীন সন্তানকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন পার্বতী।
পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে মহাদেব দেবতাদের নির্দেশ দেন পথে যাকে সামনে চোখে পড়বে সেই মাথা কেটে এনে গণেশের মাথায় বসিয়ে দিতে। দেবতারা ছুটে গিয়ে প্রথমেই পথে হস্তিশাবকের মাথা দেখতে পান। সেটা নিয়ে এসে মহেশ্বরের হাতে দিলে তিনি সেটা গণেশের মাথায় বসিয়ে দেন।
এবং মহাদেব তাঁকে আশীর্বাদ করে বলেন, সব দেবতার আগে গণেশ পূজিত হবেন। আজও সব পুজোর আগে গণেশ পুজোর বিধি।
এই কারণেই তিনি গজেন্দ্র বদনং লম্বোদরং…

বন্দে দেব গজানন বিঘ্ন বিনাশন
নমঃ প্রভু মহাকায় মহেশ নন্দন।

আরও পড়ুন: জনগণের অর্থে কাদের নিরাপত্তা, কী কারণে বিশেষ ব্যবস্থা

পুরাণমতে, একদিন পার্বতী কার্তিক ও গণেশকে ত্রিভুবন পরিক্রমার কথা বলেন। সঙ্গে তিনি এও বলেন ত্রিভুবন পরিক্রমা শেষ করে যে আগে আসবে তাকে পুরস্কার হিসেবে অমরত্ব এবং জ্ঞানভাণ্ডার দেওয়া হবে। কার্তিক কথা শোনামাত্রই বাহন ময়ূরকে নিয়ে পরিক্রমায় পাড়ি দেন। আর গণেশ শিব-পার্বতীকে পরিক্রমা করেন। মা-বাবা তাঁর কাছে ত্রিভুবনসম। ছেলের ভক্তি-ভালবাসায় মুগ্ধ বাবা-মা আশীর্বাদ করেন এই বলে যে, সব দেবতার আরাধনার আগে গণেশের আরাধনা হবে। বিদ্যাবুদ্ধির দৌড়ে দেবকুলের সর্বশ্রেষ্ঠ গৌরীপুত্র। তাই গজাননের স্থান সবার আগে।
নমো নমো লম্বোদর নমঃ গণপতি
মাতা যার আদ্যাশক্তি দেবী ভগবতী।
শ্রীগণেশের রয়েছে একশো আটটি নাম। গণেশ, গণধিপ, গণ, গণাগ্রহী, গণাধ্যক্ষ, গণেশ্বর, গণনাথ, গণদেবেশ্বর, গণচলাবাসী, গণনায়ক, গণরাজ, গণকর্তা, গণপতি, গজানন, গৌরীসূত, গজকর্ণ, গজবক্ত্র, গজরাজ, গুহাগ্রজ, গজমুখ, সুমুখ, বিঘ্নবিনাশন, বিঘ্নরাজ, বিঘ্নহারী, বিঘ্নবিনায়ক, বিঘ্নশাসক, লম্বকর্ণ, বিঘ্নবিনাশক, বিঘ্নহর্তা, মহাবল, হরপুত্র, হেরম্ব, স্থূলোদর, মহোদর, বিনায়ক, মহাকায়, প্রিয়ঙ্কর, গণাধীশ, রুদ্রপ্রিয়, দেবপুজ্য, কৃষ্ণ পিঙ্গাক্ষ, সুলেখক, ভাল চন্দ্র, ভারত লেখক, লম্বোদর, মূষিকবাহন, বজ্রতুণ্ড, সদাদান, পাশহস্ত, শুভদাতা, সিদ্ধিপতি, চতুর্ভুজ, একদন্ত, বিকট, বুদ্ধিপতি, সিদ্ধিসেনাগ্রজ, সিদ্ধিদাতা, সিদ্ধিবিনায়ক, সিদ্ধযোগী, হর্ষগ্রীবা, মহাবীর, সিদ্ধিরূপ, বক্রতুণ্ড, যজ্ঞসিদ্ধি, বিঘ্ন রাজেন্দ্র, ধূম্রবর্ণ, দিব্যাঙ্গ, দান, কর্মসিদ্ধি, মোদক প্রিয়, তপঃসিদ্ধি, সর্বজ্ঞ, স্বস্তিদ, ঋদ্ধিদ, ঋতজ্ঞান, ঋতধাম, ঋতম্ভরা, সত্যম, গুণাতীতম, পুরুষ, ত্রিলোচন, শুদ্ধাত্মা, দ্বিমুখ, ভক্ত বৎসল, শৈলসুতাসুত, ঋতম, অগ্রপূজ্য, বিশ্বনেতর, শুভানন, সর্বশুভঙ্কর, বিকোটোদর, দ্বৈমাতুর, বরেণ্য, ভর্গ, অক্ষর, বিরাটপতি, ব্রক্ষবচ্চর্স, ব্রক্ষভূয়, ব্রক্ষ্মযোগ, গণশ্রেষ্ঠ, সুব্রহ্মণ্যাগ্রজ, প্রণব, অদ্বৈতস্বরূপ, অষ্টবিনায়ক, জ্যোতিস্বরূপ, প্রমোদ।
“মাসি ভাদ্রপদে চাপি চতুর্থীকৃচ্ছিবং ব্রজেৎ”
হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী ভাদ্র মাসের শুক্লা চতুর্থী তিথিকে গণেশ চতুর্থী বা বরদা চতুর্থী বলে। অগ্নি পুরাণে বলা হয়েছে, অত্যন্ত মাহাত্ম্যপূর্ণ ভাদ্র মাসে চতুর্থী বা গণেশ চতুর্থী। দেব পূজ্য গজানন নানা জায়গায় বিভিন্ন নামে পূজিত হন।
সংস্কৃত, কন্নড়, তামিল ও তেলুগু ভাষায় এই উৎসব বিনায়ক চতুর্থী বা বিনায়ক চবিথি নামে পরিচিত। কোঙ্কণি ভাষায় এই উৎসবের নাম চবথ। অন্যদিকে নেপালি ভাষায় উৎসবকে বলে চথা। দশ দিন ব্যাপী এই উৎসবের সমাপ্তি হয় অনন্ত চতুর্দশীর দিন। মহারাষ্ট্রে হিন্দুদের অন্যতম প্রধান উৎসব গণেশ চতুর্থী। গণেশ বুদ্ধি, সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের দেবতা। তিনি বিঘ্ন নাশ করেন।
ইতিহাসের পুজো
মহারাষ্ট্রে গণেশ চতুর্থীর সবচেয়ে বড় উৎসব হয়ে ওঠে শিবাজির আমলে। পেশোয়ারা কুলদেবতা হিসেবে গণেশের পুজো করতেন। ১৮৯৩ সালে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় পুনের বাসুদেব লক্ষ্মণ জাভালে ব্রিটিশদের বিরোধিতার পথিক হিসেবে সর্বজনীনভাবে গণেশ চতুর্থী পালন করেন।
অষ্টাবতার রূপ
ভক্তদের বিশ্বাস, মনোবাঞ্ছাপূর্ণ করতে গণেশ মর্ত্যে এদিন আসেন। ভগবান গণেশ বেশ কয়েকটি দুষ্ট অসুরকে ধ্বংস করার জন্য বিভিন্ন অবতার রূপ গ্রহণ করেছিলেন। তাঁরা হলেন অহন্তাসুর (অহমিকার প্রতীক), মায়াসুর (মায়ার প্রতীক), লোভাসুর (লোভের প্রতীক), কামাসুর (কামের প্রতীক), ক্রোধাসুর (ক্রোধের প্রতীক), মোহসুনা (মোহরূপ সুর), মৎস্যরাসুর (ঈর্ষা) এবং মামসুর।
একদন্ত অবতার
ভগবান গণেশের একটি দাঁত সম্পূর্ণ। তাই তাঁকে একদন্ত বলা হয়।
এই অবতার রূপে গণেশ মদাসুর বধ করেন অর্থাৎ দেবতাদের মদাসুরের ক্রোধ থেকে মুক্তি দেন। এই অবতার আমাদের শিক্ষা দেয় যে আমাদের যেকোনও ধরনের নেশা থেকে দূরে থাকা উচিত।
ধূম্র অবতার
অহন্তাসুরকে ধ্বংস করার জন্য ভগবান গণেশ অবতার গ্রহণ করেছিলেন। ভগবান গণেশের রং ধোঁয়ার মতো ছিল তাই এঁকে ধূম্রবর্ণ অবতার বলা হয়। কুন্তাসুর অর্থাৎ অহংকারের প্রতীক। এমন পরিস্থিতিতে ভগবান গণেশের এই অবতার অহম থেকে মুক্তির পথ দেখায়।
লম্বোদর অবতার
লম্বোদরের আক্ষরিক অর্থ হল লম্বা বা বড় পেট বিশিষ্ট। ভগবান গণেশ ক্রোধাসুরকে বধ করার জন্য লম্বোদর অবতার গ্রহণ করেছিলেন। গণেশের আরাধনা করে যেকোনও ব্যক্তি রাগের রাক্ষস থেকে মুক্তি পেতে পারে।
মহোদর অবতার
মোহসুনা নামক এক অসুর যখন দেবতাদের পরাজিত করে স্বর্গের অধিকারী হয় তখন ব্রজতুণ্ড ভগবান গণেশকে মহোদর অবতার ধারণ করতে হয়। ভগবান গণেশ এই রূপে মোহসুনাকে বধ করেন। এখানে মোহসুনা হত্যা হচ্ছে আসক্তি থেকে মুক্তির প্রতীক।
বক্রতুণ্ডা অবতার
মৎসরাসুর অসুরকে বধ করার জন্য ভগবান শ্রীগণেশ বক্রতুণ্ডা অবতার গ্রহণ করেন। এখানে মৎসরা মানে অন্যের সুখ দেখে হিংসা করা। এমন পরিস্থিতিতে ভগবান গণেশের বক্রতুণ্ডা অবতার এই দোষ থেকে মুক্তির বার্তা দেয়।
গ্রিম অবতার
এই অবতারে গণেশ বিকট রূপ ধারণ করে কামাশন নামক অসুরকে বধ করেছিলেন। এই রূপে ভগবান গণেশ একটি ময়ূরের উপর উপবিষ্ট। তাঁর শক্তিশালী অবতার আমাদের লালসা থেকে মুক্তির পথ দেখায়।
গজানন অবতার
এই অবতারে ভগবান গণেশ লোভাসন নামক অসুরকে বধ করেছিলেন। লোভাসুর অর্থাৎ লোভ। লোভের বসে মানুষ নিজের ক্ষতি করে এটা বোঝাতেই তিনি গজানন।
বিঘ্নরাজ অবতার
মামাসুরকে ধ্বংস করার জন্য ভগবান গানের বিঘ্নরাজ অবতার ধারণ করেছিলেন। এই রূপে মামাসুর আর তার দলকে কমল পুষ্প নিক্ষেপ করেছিলেন বিঘ্নহর্তা।
গজাননের রূপ বর্ণনায় বলা হয়েছে—
বিদ্যুৎবর্ণ গজানন, শ্বেতবস্ত্র পরিহিত, শ্বেতপদ্মে অবস্থিত, মাথায় স্বর্ণমুকুট শোভাস্থিত, যার বামচরণ শ্বেত মূষিকের পৃষ্ঠে রাখা এবং বাম পা হাঁটুর ওপর অবস্থিত। বামদিকে দুই হাতে শঙ্খ ও চক্র, ডান দুই হাতে পুস্তক ও লেখনী ধারণকারী সেই সিদ্ধিপতি।
জনপ্রিয় মন্দির
সারাদেশে পাঁচটি জাগ্রত গণেশ মন্দিরের রয়েছে ভক্তদের বিশ্বাস, এইসব মন্দির পরিদর্শন করে মনোকামনা জানালে সিদ্ধিদাতা তা পূরণ করবেনই।
রণথম্বোর গণেশ মন্দির
দেশের সুপ্রাচীন গণেশ মন্দির। রাজস্থানে অবস্থিত এই মন্দিরটি সম্ভবত পৃথিবীর সর্বপ্রথম গণেশ মন্দির। ত্রিনেত্র গণেশ মন্দির নামেও একটি পরিচিত। এই মন্দিরে উঠতে গেলে দুশো পঞ্চাশটি সিঁড়ি পেরিয়ে উঠতে হয়।
সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির
মুম্বইয়ে রয়েছে সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির। পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুজোর মতোই মুম্বইয়েও গণেশ চতুর্থীতে গণপতি বাপ্পার পুজো মহাসমারোহে হয়। প্রচলিত বিশ্বাস এই যে, এই মন্দিরে পুজো দিলে মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন বিরাটপতি।
সিথলাপথি মুক্তিশ্বর মন্দির
তামিলনাড়ুর তিরুবারু জেলার সিথলা পথি মুক্তেশ্বর মন্দিরও ভীষণ জাগ্রত। এই মন্দির আদি বিনায়ক নামেও পরিচিত।
দাগদুশেঠ হালওয়াই মন্দির
মহারাষ্ট্রের পুণেতে অবস্থিত শ্রীমান দাগদুশেঠ হাল ওয়াই গণপতি মন্দির খুব বিখ্যাত। অপূর্ব সুন্দর মার্বেলের তৈরি গণপতির মূর্তি দেখলেই মন এক অদ্ভুত প্রশান্তিতে ভরে যায়।

সিকিমের গণেশ মন্দির
৬,৫০০ মিটার উচ্চতায় এই মন্দিরটি অবস্থিত। স্থানীয় ভাষায় এই মন্দিরটি গণেশ টক বলেও পরিচিত। সুন্দর সবুজ পাহাড়ি পরিবেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে এই মন্দিরে উপস্থিত হলে মন ভাল হবেই।
গণাধ্যক্ষ গণনায়কের ভোগ
নামের ভূমিকাতেই যাঁর স্থূলোদর বলা হয়েছে তিনি খেতে ভালবাসবেন— এ আর এমন কী কথা! ভক্তরা ভালবেসে গজরাজকে একাধিক ভোগ উৎসর্গ করেন। গণেশ চতুর্থীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কিছু প্রচলিত ভোগ। যা গৌরীসুতের অত্যন্ত প্রিয়।

মোদক
মোদকপ্রিয় গণেশের আরেক নাম। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি। একবার স্বর্গে দেবী পার্বতী একটি মোদক উপহারস্বরূপ পান। কিন্তু সেই মোদক নিয়ে কার্তিক ও গণেশের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। কে খাবে সেই মোদক— এই নিয়ে দুই ভাইয়ের ঝগড়া।
শেষমেশ দেবী বলেন, যে তিনবার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে আগে আসবে সে এই মোদকটি পাবে।
কার্তিক গোটা পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে শুরু করেন। অন্যদিকে গণেশ পার্বতীকে প্রদক্ষিণ করে বলেন তুমি আমার পৃথিবী। সন্তুষ্ট হয়ে দেবী গণেশের হাতেই মোদকটি দেন।
নারকেলের সুস্বাদু মোদক গণেশকে উৎসর্গ করা হয় তবে ক্ষীরের মোদকও যথেষ্ট জনপ্রিয়।
লাড্ডু
লাড্ডু গণেশের অত্যন্ত প্রিয় খাবার। বোঁদের ও বেসনের লাড্ডু মূলত সেই প্রিয় তালিকায় সবার প্রথমে আসে।
পায়েস
গোবিন্দভোগ চালের পায়েস গণেশের খুব পছন্দ। পুরাণ কাহিনি অনুযায়ী, দেবী পরমান্ন রেঁধে দিতেন মহাদেবকে। তখন গণেশও আবদার করে খেতেন সেখান থেকে। তাই গণেশ চতুর্থীতে পরমান্ন ভোগ থাকেই।
মুড়ির মোয়া
গণপতি দরিদ্রদের ভালবাসেন। তাঁদের প্রার্থনায় সাড়া দেন। তিনি সিদ্ধিদাতা তাই গুড় ও মুড়ি দিয়ে তৈরি মোওয়া তাঁর অত্যন্ত পছন্দের।
নারকেল
যেকোনও পুজোতেই নারকলকে অত্যন্ত শুভ বলে মানা হয়। গণেশ পুজোও তার ব্যতিক্রম নয়। গণেশ চতুর্থীতে তাই নারকেলকে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়।
কলা
সনাতন ধর্মে কলাকে নৈবেদ্য হিসেবে মনে করা হয়। গণেশ পুজোতেও কলা ভোগ হিসেবে দেওয়ার চল আছে। এছাড়া কলা গণপতির অত্যন্ত প্রিয়।
হলুদ রঙের মিষ্টি
হলুদ রং গণেশের সবচেয়ে প্রিয়। তাই এদিন যেকোনও হলুদ রঙের মিষ্টি সিদ্ধিদাতাকে উৎসর্গ করা শুভ বলে মানা হয়।
প্রায় সারা দেশ জুড়ে মহাসমারোহে চলে গণেশ চতুর্থীর উদযাপন। পশ্চিমে মহারাষ্ট্র ছাড়াও, গোয়া, কর্নাটক, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, অন্ধপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা, গুজরাট, ছত্তিশগড় ও পশ্চিমবঙ্গেও পালিত হয় বিশেষ উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে। গণেশের প্রিয় রং উজ্জ্বল লাল এবং হলুদ। এই বিশেষ দিনে এই রংকেই বাছেন ভক্তরা।
বিঘ্নবিনাশকং দেবং হেরম্বং প্রণামাম্যহম্।

Latest article