বাংলা আর বাঙালির প্রাচীনত্বের সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দোলযাত্রা বা হোলি। শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা রঙের উৎসবে সরাসরি যুক্ত রাধার নাম আর হোলিকে নিয়ন্ত্রণ করে গিয়েছেন হোলিকা (Holika)। ফাল্গুনের এই মাতাল সমীরণে সদা জাগ্রত বসন্তের উৎসব এবং প্রেমের উৎসব নামেও পরিচিত এই ফাগুয়ার দিন। হিন্দুধর্মের অন্যতম জনপ্রিয় আর উল্লেখযোগ্য উৎসব হল দোল, হোলি৷ হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, বৃন্দাবনে রাধা-কৃষ্ণের দ্বারা হোলি খেলা উৎসব পালিত হয়েছিল, সেই কবে। হোলিকা দহন কিংবদন্তি অশুভ শক্তির বিপরীতে শুভের জয় নির্দেশিত করে। আর তার চালিকা শক্তি ছিলেন শ্রীমতী হোলিকা (Holika)। জীবনের পরিবৃত চক্রবৎ পরিবর্তনের ধারায় দোল আমাদের ঋতুচক্রের শেষ উৎসব। পাতাঝরার সময়, মনের মর্মর ধ্বনিতে বৈশাখের প্রতীক্ষা যেন নতুনের আগমন জানাই। এই সময় পড়ে থাকা গাছের শুকনো পাতা, তার ডালপালার মর্মরধ্বনি একত্রিত করে জ্বালিয়ে দেওয়ার মধ্যে, আত্মদহনের এক সামাজিক তাৎপর্য রয়েছে জীবন যাপনকে ঘিরে।
দোল পূর্ণিমা এবং রাধা-কৃষ্ণের দোল যাত্রা, সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের একটি। বর্ণিল রঙিন এই উৎসব। আমাদের বাংলা এবং ওড়িশা ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন স্থানে দোল উৎসব আজও মহাসমারোহে পালিত হয়। দেশের বিশেষ করে উত্তর ভারতে দোলযাত্রা এখনও হোলি নামে পরিচিত। দোল, হোলি তবে দুটি নাম হলেও, এরা এক। তবে এর পিছনে রয়েছে অন্য কারণ। ফাল্গুনের দোল উৎসবের অপর নাম হল বসন্তোৎসব। তবে এই বসন্ত উৎসব আসলে যা শান্তিনিকেতনে এর সুনাম এখনও বিশ্ববিখ্যাত। যদিও বর্তমানে উৎসবটি সম্পূর্ণ বন্ধ। ফাল্গুন মাসের পূ্র্ণিমা তিথিতে প্রতিবছর দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শ্রীরাধা আর হোলিকা এই দুই নারীর জীবনবেলার আখ্যানই জড়িয়ে রয়েছে সময়ের স্মৃতিতে।
ছোট থেকে শুরু করে বড়, সবাই রঙের এই উৎসবে মেতে ওঠে আনন্দের সঙ্গে। রং খেলার পর মিষ্টি মুখ করে এই আনন্দের সমাপ্তি ঘটে। বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে হোলি উৎসব পালন হয়, পালিত হয় দোলও। তাই নয় দেশের বাইরে বিদেশিদের মধ্যেও এই উৎসবের প্রচলন দেখা যায়।
দোল পূর্ণিমার দিন হোলির রঙে সবাই নিজেদের রাঙিয়ে তোলে। সমস্ত বিভেদ ভুলে এক হয়ে যায় দুই নারী। দোল বা হোলির অর্থ এক হলেও দুটিই কিন্তু ভিন্ন অনুষ্ঠান। তাদের ইতিহাসগত মিলও নেই। দোল ও হোলি কখনওই এক দিনে পড়ে না আজও। দোল যাত্রা বা বসন্তোৎসব একান্তই বাঙালিদের রঙিন উৎসব হলেও এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে পৌরাণিক ইতিহাস। শ্রীমতী হোলিকার (Holika) হোলি হল অবাঙালিদের উৎসব। বাঙালিদের মধ্যে দোলযাত্রাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। শ্রীমতী রাধিকা সেখানে কৃষ্ণের সহচরী হিসেবে পূজিতা হন। আমরা লক্ষ্য করি এছাড়া হিন্দু পুরাণে প্রায় তিন হাজার বছর আগে, ইন্দ্রদ্যুম্নের দ্বারা গোকুলে প্রথম হোলি খেলার প্রচলনের উল্লেখ পাওয়া যায়। অন্যদিকে, ইতিহাস বলছে প্রাচীন ভারতে ইন্দ্রদ্যুম্নের নাম একাধিকবার উল্লেখ রয়েছে। এই ইন্দ্রদ্যুম্ন আদতে কে ছিলেন, সেই নিয়ে বিতর্কও রয়েছে বিস্তর। বসন্ত পূর্ণিমার দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, কেশি নামে একজন অসুরকে বধ করে ছিলেন। কেশি একজন অত্যাচারী এবং নিষ্ঠুর অসুর ছিলেন। এই অত্যাচারী অসুরকে দমন করার জন্য এবং অন্যায় ভাবে শক্তি ধ্বংস হওয়ার জন্য আনন্দ উৎসবে এই দিনটিকে পালন করা শুরু হয়েছিল। এটি খুবই প্রাচীন উৎসব।
দোল বা হোলির অর্থ এক হলেও দুটি ভিন্ন অনুষ্ঠানে দুই নারী আজও স্মৃতিতে এসে দাঁড়ায়। অতীতের বাংলার, বাঙালিদের দোল যাত্রা বা বসন্তোৎসব এখন সর্বজনীন প্রেমের রঙিন উৎসব। তবে শ্রীমতী হোলিকার (Holika) এই হোলি হল অবাঙালিদের কাছে বর্তমানে এক জনপ্রিয় উৎসব। বাঙালিদের মধ্যে দোলযাত্রাকে বসন্তের আগমন হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। ভাবের সাধকরা বলেন, সেইসঙ্গে বৈষ্ণবদের মতেও, দোল পূর্ণিমার দিন শ্রীকৃষ্ণ আবির নিয়ে শ্রীরাধা আর তাঁর অন্যান্য গোপীদের সঙ্গে রং খেলায় মত্ত হয়ে ছিলেন। সেখান থেকেই বাংলার এই দোলযাত্রার শুরু। অন্যদিকে, বাংলার প্রেমের কারিগর, ধর্মীয় নবজাগরণের পথিক ১৪৮৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, দোল পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মগ্রহণকে কেন্দ্র করেও এই মহোৎসব আজও প্রাণ পেয়েছে। তাই এই তিথিকে গৌর পূর্ণিমাও বলা হয়। শ্রীকৃষ্ণ আর তাঁর সঙ্গী-সাথীরা, গোপী-গোপিনীদের সঙ্গে রং খেলার অনুষ্ঠানই হল এই দোলযাত্রার মূল কেন্দ্রবিন্দু। ভাব ও প্রেমের সাধক শ্রীকৃষ্ণের লীলা কবে থেকে শুরু হয়েছিল, তা জানা না গেলেও বিভিন্ন পুরাণ আর গ্রন্থে সেই মধুর রঙিন কাহিনির উল্লেখ রয়েছে।
আমরা সকলেই জানি প্রহ্লাদ ছিলেন ধার্মিক। তাই তাঁকে হত্যা করা সহজ ছিল না হিরণ্যকশিপুরের কাছে। কোনওভাবেই তাঁকে হত্যা করতে পারছিলেন না তিনি। তখন হিরণ্যকশিপু তাঁর ছেলে প্রহ্লাদকে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে, আগুনে কোনও দিনই ক্ষতি হবে না এই বর পেয়েছিল হোলিকা (Holika)। তাই প্রহ্লাদকে হত্যা করার জন্য হোলিকা সিদ্ধান্ত নেয় সে তাঁকে নিয়ে স্বয়ং আগুনে ঝাঁপ দেবে। এবং সেইমতো সে প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে একদিন আগুনে স্বয়ং ঝাঁপ দেয়।
আরও পড়ুন- প্রয়াত অভিনেতা পার্থসারথি দেব
কিন্তু হোলিকা (Holika) বর পাওয়া সত্ত্বেও সেদিন শেষরক্ষা হয়নি। প্রহ্লাদ তো বিষ্ণুর আশীর্বাদে বেঁচে যায় শেষপর্যন্ত। আগুনে ভস্ম হয়ে যায় হোলিকা। সে তার বরের অপব্যবহার করায় আগুনে ঝাঁপ দেওয়ার সময় তার বর নষ্ট হয়ে যায়। আর সে কারণে সেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই দিনটি থেকে পালন করা হয় হোলি বা দোল উৎসব বলেই জানা যায়। হোলিকার আত্মদহনই হোলি! হোলিকার এই কাহিনি চাঁচর বা হোলিকা দহন নামে পরিচিত, যা দোলের আগের দিন পালন করা হয় গোটা বাংলায়। এক বীর নারীর আত্মত্যাগের কাহিনি। এই কাহিনিকেই সাধারণত নেড়াপোড়া বলে অভিহিত করা হয়েছে ইতিহাসের পাতায়। নেড়াপোড়ার দিন শুকনো ডালপালা, গাছের শুকনো পাতা দিয়ে, খড় দিয়ে বুড়ির ঘর তৈরি করা হয়। সেই ঘরে শ্রীমতী হোলিকার পুজো করে হোলিকার উদ্দেশ্যে সেই ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হোলিকাদহন পালন করা হয় এখনও। আমাদের এই রাঢ় বাংলায় সেই হোলিকা দহন আজও বেশ জনপ্রিয়। এই সময় অনেকে আবার হোলিকার উদ্দেশ্যে মাটির পুতুল বানিয়ে তা ওই শুকনো ডালপালার ঘরে রেখে জ্বালিয়ে দেয়।
বৃন্দাবন বরাবরই উদার পরিবেশ। প্রেমের আহ্বান থাকে সেখানে বরাবরই। গোঁড়ামির বাতাস তেমন হালে পানি পায় না এই প্রেমের ভূমিতে। এমন এক সময় সংকেত কুঞ্জে দেখা হয়েছে রাধা-কৃষ্ণের। দিনটা ছিল ঠিক বসন্ত পঞ্চমীর দিন।
আচমকাই শ্রীমতী খেয়াল করলেন উপর থেকে তাঁদের উপর কিছু ফুলের পাপড়ি ঝরে পড়ল যেন। অনুভবী রাধা, এই রঙিন পাপড়ি পড়া ব্যাপারটিতে কৃষ্ণ-যোগ আছে বলে মনে করলেন। দেবতারা স্বর্গে রঙের উৎসব পালন করছেন এমনও মনে হল। শ্রীমতীও তখন বায়না ধরলেন রং খেলার জন্য। শ্রীকৃষ্ণও পরিশেষে জানালেন, সেদিনটা দেবতাদের জন্যই থাক, অন্য একদিন রং-এ রেঙে ওঠা যাবে’খন। শ্রীমতীর সেই প্রেমের আবদারই পূরণ হল ফাল্গুনি পূর্ণিমা তিথিতে। আবার অনেকে মনে করেন, ছোট্ট কৃষ্ণ পুতনার বিষ-স্তন পান করার পর থেকেই কালোবরণ হয়ে যান। এদিকে রাধা আর তাঁর সখীরা সকলেই গৌরবরণী। তাই দেখে মা যশোদার কাছে অনুযোগ করলেন শ্রীকৃষ্ণ। মা তাঁকে বলল, কোনও একদিন গিয়ে কৃষ্ণও যেন গোপীদের রঙে রাঙিয়ে দেয়। করে দেয় ভূত। তাহলেই সব এক। সবই একাকার। কোনও ভেদ নেই। সেই থেকেই রঙের উৎসবের সূচনা হয়েছিল। কৃষ্ণ আর তাঁর দলবল গিয়ে সেদিনই রাধাকে রং মাখিয়ে এসেছিলেন বরসানায়। প্রত্যুত্তরে গোপীরা লাঠি হাতে তেড়ে এসেছিল নন্দগাঁওতেও। চলে প্রেমের লড়াই। আর প্রেমের সেই আগুন লড়াইয়ে কৃষ্ণের আত্মরক্ষা করেছিল কৃষ্ণের সখাদল। এই হল লাঠমার হোলি। ধর্মের বাইরে, হত্যালীলার বাইরে এই রং প্রেমের! এই রং নিবেদনের! এই রং ত্যাগের। প্রতিটি রঙের আলাদা অর্থ রয়েছে যেন। আর যাপিত জীবন অনুষঙ্গে সেই রঙের বাসনা তৃপ্তি উজ্জ্বল করেছে, মধুময় করেছে আমাদের। পরমাপ্রকৃতির সঙ্গে নারী আর রং যেন মিলেছে প্রেম আর মিলনের সুরে। হোলির লাল রং প্রেম এবং ঊর্বরতার প্রতীক; হলুদ হল হলুদের রং, একটি পাউডার যা ভারতের স্থানীয় এবং দক্ষিণ এশীয় রন্ধনশৈলী এবং সংস্কৃতি উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করে; নীল হিন্দু দেবতা কৃষ্ণকে প্রতিনিধিত্ব করে যে রং, সুরক্ষা, করুণা এবং প্রেমের দেবতা; এবং সবুজ নতুন শুরুর প্রতীক হিসেবেই আলোকিত করে জীবনকে ধরে।
সেই রঙের বসন্তোৎসব এককালে ছিল মদনোৎসব। প্রেমের আহ্বানে নিবেদনের উৎসব। পরবর্তীকালে বিষ্ণুর জায়গা যেভাবে নিয়েছিলেন কৃষ্ণ, সেভাবেই মদনের জায়গাও নিলেন তিনিই। শরীরের প্রেম নারীতে এল এক অন্যরকমের অনুভূতি নিয়ে। এই কথা মনে করতেন স্বামীজিও। আসলে মদনের সঙ্গে বসন্তের যোগাযোগ ছিল নিবিড় ভাবে। তাই কুমারসম্ভবের কবি শিব-পার্বতীর মিলন ঘটাতে ডেকে এনেছিলেন বসন্তসখাকে। মদনের পরিবর্তে কৃষ্ণের জায়গা নেওয়া আসলে প্রেমের শিরোমণি হিসেবে কৃষ্ণের প্রতিষ্ঠার প্রতিই ইঙ্গিত দেয় যেন। বাতাসে ধ্বনিত হয় প্রেমের মন্দিরা। রাধা-কৃষ্ণের সঙ্গে দোলের যোগাযোগ এইভাবেই। প্রকৃতিযাপনে। নিশ্চয়ই এমনই কোনও ফাল্গুনী পূর্ণিমাতে গোপীশ্রেষ্ঠাকে নিয়ে রং খেলার সময় সুসজ্জিত ফুলের লতাপাতার দোলনাতেও দুলেছিলেন, সেই থেকে দোলে লেগেছে। বাসরলতার দোল। যাই হোক বসন্তের এই উৎসব একদিনের নয়, বেশ প্রলম্বিতই ছিল আগুনে বাতাসে। তাই কোথাও কোথাও পঞ্চম দোল বা ষষ্ঠ দোল পালন করা হয় আজও। মহাকবি হালের রচনা থেকে জানা যায়, দোলে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িও হত প্রাচীন কাল থেকেই। মাটি তো ধারণার প্রতীক। যা এখনও ‘মেটে হোলি’ নামে চালু রয়েছে। কৃষ্ণবর্ণা করার জন্য কালোমাটির ব্যবহার এসেছিল হয়তো, কৃষ্ণের নির্দেশে। দোলের সঙ্গে মদ্যপানের যোগাযোগও বহু কালের প্রাচীনত্বের সঙ্গে জড়িয়ে। ভাসের রচনায় জানা যায়, এই রঙের উৎসবেই বলরাম বৃন্দাবনের বারুণি মদ পান করে এত উতলা হয়েছিলেন যে, যমুনাকে কাছে ডেকেছিলেন অবগাহন করবেন বলে। ইতিহাস সাক্ষী, যমুনা নদীর সেই গতিপথ পরিবর্তনের ভাবটি আজও। এই যে কলহ, কাদা-ছোঁড়াছুঁড়ি, মদ্যপান— এই সবই জানায় যে, দোল মোটেও শৌখিন উৎসব ছিল না। ভাবকে বিসর্জন দিয়ে প্রেমকে ডেকেছিল পাগলতার আহ্বানে। হোলিকা (Holika), গোপিনীদল আর শ্রীরাধা সেখান থেকে বাদ যাননি। বরং উদ্দামতা, উচ্ছ্বাস ছিল অনেক বেশি দোলকে ঘিরে।
তবে সারা ভারতবর্ষে যা পরিচিত হোলি নামে, পশ্চিমবঙ্গে তা কেনই-বা দোল পূর্ণিমাকে ঘিরে আয়োজিত হয়! কেনই বা এই সময়ে বাড়িতে বাড়িতে শুরু হয় সত্যনারায়ণ পুজোর আয়োজন!
কথিত রয়েছে, এই পূর্ণিমা লগ্নেই জন্ম হয় চৈতন্য মহাপ্রভুর। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে দোল পূর্ণিমার আয়োজন। নবদ্বীপের বৈষ্ণব ধর্মের এই প্রবক্তার রাধা-কৃষ্ণের প্রতি প্রেম ধর্মীয় গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছিল আত্মিক পর্যায়ে। দেহাতীত পরিধির বাইরে।
জগৎ কৃষ্ণ ব্যতীত আবার হোলি অসম্পূর্ণ। দ্বারকা, শ্রীকৃষ্ণের অন্যতম লীলাভূমিতে হোলি পালন করা হয় প্রায় ১৬ দিন ধরে। বঙ্গদেশে প্রথম দিন দোল পূর্ণিমা, তারপরের দিনেই অনুষ্ঠিত হয় হোলি। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, শ্রীরাধা ও তাঁর গোপিনীদের সঙ্গে রং খেলা শুরু করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ এই তিথিতেই। তাঁর ভালবাসার নিদর্শন হিসেবেই। একদিকে রাধার দোল অন্যদিকে হোলিকার (Holika) হোলি যা আত্মত্যাগের গল্প শোনায়। কোথাও তিনি অশুভ রাক্ষসী হলেও কোথাও পবিত্র নারী। কথিত আছে, হোলিকার পোশাকের কারণে তাকে আগুনে পোড়ানো সম্ভব ছিল না। প্রহ্লাদকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হবে এটা জেনে তিনি তাঁর পোশাক প্রহ্লাদকে দিয়ে দেন এবং নিজে আগুনে পুড়ে নাকি আত্মত্যাগ করেন। দুটোই প্রেম। ঈশ্বরের প্রতিই সেই প্রেমেই চির অমর আজও দুই নারী।