পুজোর লেখালেখি

আসছে পুজো। প্রকাশিত হচ্ছে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার শারদ সংখ্যা। সেইসব শারদ সংখ্যায় কী লিখলেন এই সময়ের বিশিষ্ট সাহিত্যিকরা? জেনে নিলেন অংশুমান চক্রবর্তী

Must read

এবার উপন্যাস লিখিনি
আবুল বাশার
গতবছর অনেক লেখাই লিখেছি। তুলনায় এবার অনেক কম। বিভিন্ন কারণে। কোথাও কোনও উপন্যাস লিখিনি। কারণ উপন্যাস লিখতে প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে হয়। সেটা এবার আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে গল্প লিখেছি কয়েকটা। বড় এবং ছোট গল্প। লিখেছি প্রবন্ধও। আমার মনে হচ্ছে, কিছুদিন কম লেখাই ভাল। নিজেকে লেখার বাইরে নিয়ে গিয়ে সমাজকে বোঝার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি করছি পড়াশোনা। পড়াশোনার মধ্যে দিয়ে নতুনভাবে শিল্প-সাহিত্যকে ভাবতে চাইছি। কিছুদিন কম লিখলে লেখার উত্তরণ ঘটে। এটা আমার উপলব্ধি। এর আগেও আমি এমনটা করেছি। মাঝে আট-নয় বছর লেখা প্রায় বন্ধ রেখেছিলাম। এগুলো হয়েছে নানা কারণে। এই মুহূর্তে আমি অধ্যয়ন করছি ব্রাত্য বসুর ইতিহাস ভাবনা নিয়ে। জানার চেষ্টা করছি তিনি ইতিহাসকে কেমন করে দেখেছেন। কিনেছি কিছু বইপত্র। তাঁর নাট্যসাহিত্য এবং নাট্যচিন্তা বিষয়েও গভীরভাবে জানার চেষ্টা করছি। জানি না কতটা পারব। আসলে তাঁকে বুঝতে গিয়ে আমি আমার শিল্প-সাহিত্যকে নতুন করে বোঝার চেষ্টা করছি। আখেরে এই জ্ঞান আমার সাহিত্যের একটা উত্তরণ ঘটাবে।

সিরিয়াস বিষয়ে উপন্যাস
প্রচেত গুপ্ত
একটা বড় উপন্যাস লিখেছি একটি পত্রিকার শারদীয়া সংখ্যায়। সিরিয়াস বিষয়ে। ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। এর পাশাপাশি রূপকথা লিখেছি সাগরকে নিয়ে। এটা আমার খুব প্রিয় কাজ। লিখে আনন্দ পেয়েছি। গল্পও নয়, বাস্তবও নয়, একটা রূপকথা। ছোটদের জন্য লিখতে ভালবাসি। প্রতি বছর লেখার চেষ্টা করি। এইবছর লিখেছি ছোটদের বড় গল্প। নাম ‘ডিহিপুরের কাণ্ড’। এটা লিখে আমি প্রাণ পেয়েছি। এবার প্রথম প্রকাশিত হচ্ছে আমার একটি দীর্ঘ ছড়া। গল্প-উপন্যাসে ছোট ছোট ছড়া লিখলেও, আলাদাভাবে কখনও কোনও ছড়া প্রকাশ করিনি। এছাড়াও একটি নিবন্ধ লিখেছি। আমার পাঠক-পাঠিকাদের নিয়ে। সুকুমার রায়ের মণ্ডা ক্লাব নিয়েও একটা গদ্য লিখেছি। বলতে চেয়েছি, মণ্ডা ক্লাবের চর্চা এখনও নতুন করে হওয়া উচিত। তার কারণ বাতলেছি। মনন চিন্তনের এই আড্ডা এই ভাবনাটা আবার ফিরে আসা উচিত। নিজে লেখার পাশাপাশি আমি অন্যদের লেখাও মন দিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। উপন্যাস, গল্প, কবিতা, ছড়া ইত্যাদি। যদিও সব পড়তে পারি না। বেশকিছু লিটল ম্যাগাজিন খুব ভাল ভাল পুজো সংখ্যা প্রকাশ করে। পুজোকে কেন্দ্র করে এত রকমের সিরিয়াস কাজ হয়, দেখে অবাক হই। লিটল ম্যাগাজিন মেলায় হাতে আসে। পড়তে ভাল লাগে।

বিভিন্ন বিষয়ে চারটি উপন্যাস
নলিনী বেরা
এইবছর বেশ কয়েকটি বড় গল্প লিখেছি। পাশাপাশি লিখেছি ছোট গল্প। সবমিলিয়ে এবার পুজোয় আমার প্রায় কুড়ি-পঁচিশটা গল্প প্রকাশিত হচ্ছে। এছাড়াও লিখেছি উপন্যাস। চারটি। বিভিন্ন বিষয়ে। প্রবন্ধও লিখেছি একটি পত্রিকায়। আমি সারা বছর ধরেই পুজোর লেখা লিখি। পাশাপাশি পড়াশোনা করি। সমসাময়িক এবং নতুনরা কী লিখছেন খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করি।

উপন্যাসে একদল মায়ের গল্প
জয়ন্ত দে
এবার পুজোয় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লিখেছি একটি বড় উপন্যাস। নাম ‘মাতৃপক্ষ’। একদল মায়ের গল্প। এছাড়াও বড়দের জন্য গল্প লিখেছি কয়েকটি পত্রিকায়। ছোটদের উপন্যাস লিখেছি তিনটি পত্রিকা ও বার্ষিকীতে। ছোটদের জন্য লিখেছি গল্পও। মজার গল্প। কিছুটা বিজ্ঞান, কিছুটা আধিভৌতিক। আশা করি ছোটদের ভাল লাগবে। কিছু পুজোসংখ্যা ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। পাঠকের প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। বাকি পত্রিকাগুলোও এর মধ্যেই বেরিয়ে যাবে।

ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখেছি
দেবারতি মুখোপাধ্যায়
এইবছর পুজোয় লিখেছি দুটি বড় উপন্যাস। তার মধ্যে একটি ঐতিহাসিক। লক্ষ্মণ সেনের সময়ের সমাজের উপর। এর পাশাপাশি লিখেছি কয়েকটি গল্প। ছোট এবং বড়। সত্যি ঘটনা অবলম্বনে এবং সামাজিক গল্প। এগুলো সবই বড়দের কথা ভেবে লেখা। ছোটদের জন্যেও লিখেছি। একটি উপন্যাস। মহাভারতের কর্ণকে নিয়ে। এছাড়াও লিখেছি ছোটদের গল্প। আশা করি পাঠকদের ভাল লাগবে।

Latest article