আবার পর্দায় হাজির হচ্ছেন বাজিরাও সিংহম (Singham Again)। আজ মুক্তি পাচ্ছে পরিচালক রোহিত শেট্টির বহু প্রতীক্ষিত পুলিশ ব্রহ্মাণ্ডের পঞ্চম ছবি ‘সিংহম এগেইন’ (Singham Again)। রোহিতের ‘সিংহম’ সিরিজের তৃতীয় ছবি এটি। রোহিত শেট্টির অন্যতম সফল ও জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি হল ‘সিংহম’। অভিনেতা অজয় দেবগণের হাত ধরে পরিচালক রোহিত শেট্টির এই ‘কপ ইউনিভার্স’ বা পুলিশ ব্রহ্মাণ্ডের সূত্রপাত। ২০১১ সালে এই কপ ইউনিভার্সের ব্যানারেই মুক্তি পায় ‘সিংহম’। বক্স অফিসে সাফল্যের পর ২০১৪ সালে আসে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় ছবি ‘সিংহম রিটার্নস’। ওই দুই ছবির সাফল্যের পর ‘সিম্বা’, ‘সূর্যবংশী’-র মাধ্যমে ‘কপ ইউনিভার্স’-কে আরও এগিয়েছেন রোহিত। এবার দশ বছর বাদে আজ মুক্তি পেতে চলেছে ‘সিংহম ৩’ তথা ‘সিংহম এগেইন’। প্রথম সিংহমের মাধ্যমেই অজয় দেবগণের অ্যাকশন ঘরানার ছবিতে প্রত্যাবর্তন হয়েছিল। সেই দিন থেকে এই ছবির সাফল্য ‘সিংহম’কে বারবার বড় পর্দায় ফিরিয়ে আনতে বাধ্য করেছে।
২০১১-এ ‘সিংহম’ মুক্তির প্রথমদিনেই প্রায় ৮৭৬ মিলিয়ন আয় করেছিল এই ছবি। সেই অভাবনীয় সাফল্যের কারণেই ২০১৪ সালে রোহিত শেট্টি, অজয় দেবগণ জুটি সিংহম-এর সিক্যুইল তৈরি করেন। যার নাম ‘সিংহম রিটার্ন’। সেই ছবির সাফল্যের পরে বেশ কিছুদিন বিরতি তারপরেই রোহিত শেট্টি নিজে ঘোষণা করেছিলেন সিংহম-এর তৃতীয় ফ্রাঞ্চাইজির কথা। বিগ বাজেটের এই ছবি নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩৫০ থেকে ৩৭৫ কোটি টাকা।
রামায়ণী ফর্মুলা
লকডাউনের পর থেকেই রামায়ণের গল্প নিয়ে ছবি করার যেন একটা ধুম পড়ে গেছে। ভারতবর্ষের সবচেয়ে লোকপ্রিয় প্রাচীন মহাকাব্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ স্বাভাবিক কিন্তু সব সময় সেই রামায়ণী ফর্মুলা, সেই লোকপ্রিয়তা ছবির কনটেন্ট হিসেবে দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। তার ভূরি ভূরি প্রমাণ রয়েছে। একদিকে পরিচালক নীতেশ তিওয়ারি দীর্ঘদিন যাবৎ ‘রামায়ণ’কে বড়পর্দায় আনার চেষ্টা করে চলেছেন। অনেকের মতে নীতেশ তিওয়ারির এই ছবি নাকি প্রাচীন ভারতীয় মহাকাব্যের এক দুর্দান্ত সিনেম্যাটিক রূপান্তর হবে। তবে না আঁচালে বিশ্বাস নেই কিছু। কারণ, অন্যদিকেই রামায়ণের ওপর তৈরি বিগ বাজেট ছবি ‘আদিপুরুষ’ সুপার ফ্লপ হয়েছে ইতিমধ্যেই। অক্ষয়কুমারের ‘রামসেতু’ গল্প সেই রামায়ণের অলৌকিকতার ওপরেই আধারিত ছিল। অস্কারে যাওয়া ছবি ‘আর আর আর’-এর ক্লাইম্যাক্সে সেই তির-ধনুকের বিপরীতে বন্দুকের লড়াই রাম-রাবণের যুদ্ধকেই মনে করিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, প্যান ইন্ডিয়ান তেলুগু ছবি ‘হনুমান’ দারুণ সাফল্য পেয়েছে। এছাড়া দক্ষিণী ছবি ‘রাবণাসুর’, ‘দসরা’র মতো ছবিগুলোয় সেই রামায়ণের ছাপ সুস্পষ্ট। আবার সেই রামায়ণের ফর্মূলাকেই কাজে লাগালেন রোহিত শেট্টি তাঁর ছবি ‘সিংহম এগেইন’-এ। কাজেই এই ক্ষেত্রে একটা রিস্ক কিন্তু রয়েই যাচ্ছে। বাজিরাও সিংহম চরিত্রটা দর্শকদের যথেষ্ট পছন্দের হলেও রামায়ণী ফর্মুলার ম্যাজিক কিন্তু নাও খাটতে পারে। ‘সিংহম এগেইন’-এর (Singham Again) ভরাভুবিও হতে পারে। দীপাবলি, কালীপুজোর শুভ মুহূর্তে কী ঘটতে চলেছে ‘সিংহম এগেইন’-এর ভাগ্যে আজ সেটাই দেখার অপেক্ষা।
সীতাহরণ
পরিচালক সমকালের প্রেক্ষাপটে ‘রামায়ণ’-এর মূল সুরটা গল্পের মধ্যে বুনে দিয়েছেন। এসেছে শ্রীলঙ্কার প্রসঙ্গ। এক পুলিশি রামায়ণ রচনা করেছেন তিনি। সেই পুলিশি রামায়ণের রাম যদি হন অজয় দেবগণ অর্থাৎ বাজিরাও সিংহম। তাহলে সীতা হলেন বাজিরাওয়ের স্ত্রী অবনী, যে চরিত্রটিতে অভিনয় করেছেন করিনা কাপুর খান। গল্পে বাজিরাওয়ের স্ত্রীকে কিডন্যাপ করা হয়। নিজের স্ত্রীকে খুঁজতে বেরবেন বাজিরাও। এই অন্বেষণে তার সঙ্গে থাকবে এসিপি সত্যা যে চরিত্রে রয়েছেন টাইগার শ্রফ। টাইগারের চরিত্রটার সঙ্গে লক্ষ্মণের মিল খুঁজে পেতে পারেন দর্শক। লেডি সিংহমের চরিত্রে দেখা যাবে দীপিকা পাড়ুকোনকে। সিরিজ়ে এই প্রথম কোনও মহিলা পুলিশের চরিত্রকে নিয়ে এলেন রোহিত। এছাড়া অক্ষয়কুমারের চরিত্রটির সঙ্গে জটায়ু এবং রণবীর সিং-এর চরিত্রের সঙ্গে রামায়ণের হনুমান চরিত্রটির মিল খুঁজে পাবেন দর্শক। ছবিতে খলচরিত্রে দেখা যাবে অভিনেতা অর্জুন কাপুরকে।
মাল্টি স্টারার ছবি
মাল্টি স্টারার ছবি ‘সিংহম এগেইন’-এ (Singham Again) রয়েছে একঝাঁক বলিউডি তারকা। করিনা কাপুর খান, রণবীর সিং, অক্ষয়কুমার, দীপিকা পাড়ুকোন, টাইগার শ্রফ, অর্জুন কাপুর, জ্যাকি শ্রফ প্রমুখ। শুধু তাই নয়, সলমন ফ্যানদের জন্যও রয়েছে সুখবর। এই ছবিতে থাকছেন তাঁদের প্রিয় ভাইজান চুলবুল পান্ডে। পাক্কা দু’মিনিট জুড়ে পর্দায় ধুন্ধুমার অ্যাকশন করতে দেখবেন দর্শক সলমনকে। এই ছবির শ্যুটিং হয়েছে গোটা ভারত জুড়ে এবং শ্রীলঙ্কাতেও। ছবির চিত্রনাট্য করেছেন ইউনুস সাজাওয়াল, অভিজিৎ খুমান, শিতিজ পট্টবর্ধন, সন্দীপ সাকেত, অনুশা নন্দকুমার এবং রোহিত শেট্টি। সংলাপ লিখেছেন রোহিত শেট্টি-সহ আরও অনেকে। কাহিনি শিতিজ পট্টবর্ধন। এই ছবির প্রযোজনায় রোহিত শেট্টি, অজয় দেবগণের দেবগণ ফিল্মস, রিলায়েন্স এন্টারটেনমেন্ট এবং জিও স্টুডিও। ছবির সঙ্গীত পরিচালনায় রবি বাসুর এবং থামান এস।