গ্রামের নাম চটকপুর (Chatakpur), হিমালয়ের বুকে ছোট্ট একটা পাহাড়ি গ্রাম। নির্জনতায় আপাদমস্তক মোড়া। মাত্র পঁচিশ-ছাব্বিশ কিলোমিটার দূরে হরেক কিসিমের পশরা সজ্জিত ব্যস্ত পাহাড়ি জনপদ দার্জিলিং শহরের সঙ্গে এর তুলনাই চলে না। কাছে-পিঠে চোখ জুড়োনো সবুজের সমারোহ, একটু দূরে বরফে ঢাকা হিমালয়, খুব সকালে আর গোধূলির আলোছায়ায় পাখির কলতান আর পাইনের বনের মধ্য দিয়ে ভেসে আসা মন্দ্র মধুর বাতাসের গান, এই নিয়ে এক টুকরো মায়াবী পৃথিবীর নাম চটকপুর (Chatakpur) । এখানে ঘর-গৃহস্থালির পাশ দিয়ে মাঝে মাঝেই ধূসর মেঘের মিছিল পাইনের উঁচু মাথা পেরিয়ে দূরে দূরে উড়ে যায় । এ যেন স্বপ্নে পাওয়া, বহু প্রতীক্ষিত এক বনস্থলী, যেখানে বছরভর পরিশ্রমে শ্রান্ত মানুষ নিশ্চিন্তে, নির্ভার সুখে অনায়াসে দু-তিনটে দিন কাটিয়ে আবার তাজা হয়ে উঠতে পারেন। হুড়োহুড়ি করে কিছু দেখার নেই, কেনাকাটার জন্য রকমারি পশরা সাজানো দোকান নেই। সারা গ্রামটিই যেন এক আশ্চর্য বিপণন কেন্দ্র, যেখানে হৃদয়ের প্রশান্তি সহজে কুড়িয়ে নেওয়া যায়, আজীবন স্মৃতিতে গেঁথে রাখার এমনই এক পরিপাটি ব্যবস্থা রেখেছে এখানকার নৈসর্গিক প্রকৃতি।
কয়েক দশক আগে মধ্যবিত্ত মানুষ এ রাজ্যের পাহাড়ি সৌন্দর্যে ভরা ট্যুরিস্ট স্পট বলতে বুঝতেন দার্জিলিং, কালিম্পং অথবা কার্শিয়ং। ক্রমশ সড়ক ব্যবস্থার উন্নতি, যাতায়াতের সুবিধার দৌলতে ভ্রমণপিপাসু মানুষ এই একুশ শতকে কাছে-পিঠে আরও কিছু পাহাড়ি গ্রামের খোঁজ পেয়ে গেল। এমনি একটি গ্রাম চটকপুর (Chatakpur)। ভৌগোলিক অবস্থান বললে বলতে হয়, জেলা দার্জিলিং, পোস্ট অফিস সোনাদা, ব্লক চটকপুর (Chatakpur)। উচ্চতা সমুদ্র সমতল থেকে ৭৮০০ ফুট, তার মানে দার্জিলিংয়ের থেকেও ২০০০ ফুট উঁচুতে এর অবস্থান। এলাকাটি সিঞ্চল ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি বা অভয়ারণ্যের অধীনের বনাঞ্চল। সরকারি ভাবে নাম চটকপুর (Chatakpur) ইকো ভিলেজে কমপ্লেক্স। উনিশ শতকের প্রথম ভাগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দার্জিলিংকে তাদের গ্রীষ্মের শৈলাবাস হিসেবে পছন্দ করেছিল, গড়ে তুলেছিল স্যানাটোরিয়াম, বিস্তৃত চা-বাগান। আশেপাশের বহু পাহাড়ি স্থান ছিল তখন আক্ষরিক অর্থেই দুর্গম, বন্যপ্রাণী-সংকুল। পাহাড়ের কোলে লুকিয়ে থাকা জীব- বৈচিত্র্যে ভরা গ্রামে মূলত হানা দিত চোরা কাঠ শিকারিরা, বনজ সম্পদ লুঠ করে তাদের জীবিকার সংস্থান হত। অর্থাৎ অতীতে এ জঙ্গল এলাকা ছিল কাঠের চোরা শিকারিদের স্বর্গরাজ্য। ক্রমে বন–দপ্তর বিষয়টি সম্বন্ধে ওয়াকিবহল হলেন। এলাকা অধিগ্রহণ করে তাঁরাই গড়ে তুললেন নতুন ট্যুরিস্ট স্পট। এরই পরিণতিতে কন্সারভেটর অফ ফরেস্ট মি টি ভুটিয়া ২০০৯ সালের মার্চ মাসে চটকপুর গ্রামের উদ্বোধন করলেন । অখ্যাত, অবজ্ঞাত গ্রামটি মর্যাদা পেল ইকো ট্যুরিস্ট স্পট-এর। চটকপুর (Chatakpur) নামে আরেকটি জনজাতি অধ্যুষিত জায়গা অবশ্য আছে ঝাড়খণ্ড রাজ্যে, রাঁচির কাছে। তবে এই চটকপুর (Chatakpur) হল পাহাড়ি গ্রাম, এখানে বাস করে মূলত নেপালিরা। কয়েক প্রজন্ম ধরেই। বাঙালির বহু চেনা টাইগার হিলের ঠিক উলটো দিকে এ গ্রামের অবস্থান। হাতে গোনা কয়েক ঘর পাহাড়ি মানুষের এই গ্রামে জীবিকা বলতে আগে ছিল চাষ আবাদ, গরু, হাঁস–মুরগি পালন আর সাইকেলে চড়ে দূরের গ্রামে দুধের জোগান দেওয়া। ইদানীং স্বীকৃত ট্যুরিস্ট স্পট হয়ে যাওয়ায় গ্রামের মানুষের গ্রাসাচ্ছাদনের নতুন এক দিশা এল। এই শান্ত গ্রামের মানুষের এখন অন্যতম জীবিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্যুরিস্টের জন্য হোম-স্টের ব্যবস্থা রাখা। অতএব একবার কষ্ট করে সেখানে যেতে পারলে থাকার জায়গার অভাব হবে না।
কী করে যাবেন সেই মায়া-পৃথিবীতে
প্রাথমিক গন্তব্য, প্লেনে এলে বাগডোগরা এয়ারপোর্ট, আর ট্রেনযাত্রায় নিউ-জলপাইগুড়ি স্টেশন। সেখান থেকে ভাড়া গাড়ি নিয়ে সোজা চটকপুর (Chatakpur) ইকোভিলেজ। সময় লাগে আড়াই থেকে পৌনে তিন ঘণ্টা। দূরত্ব প্রায় ৬৪ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের পথে হিল কার্ট রোড অথবা রোহিণী রোড ধরে সোজা কার্শিয়াং, তারপর সেখান থেকে সোনাদা পৌঁছলে আর মাত্র ৬-৭ কিলোমিটার দূরে চটকপুর। তবে সোনাদা থেকে ফরেস্টের ভেতরের রাস্তা যথেষ্ট খারাপ, ড্রাইভাররা দূরত্ব বাঁচাতে এ-পথই সচরাচর ধরে থাকে। গাড়ির ঝাঁকুনির জন্য শারীরিক অ্যস্বাচ্ছন্দ্য অবশ্য ভুলিয়ে দেবে যাত্রাপথের দুধারের ঘন বনানী, অফুরন্ত সবুজের সমারোহ, আর আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলে দেখা যাবেই অরণ্যশীর্ষের ফাঁকে ফাঁকে নির্মল আকাশ। যেহেতু এটি অভয়ারণ্যের মধ্যে, তাই বন-দপ্তরের কাছে শুল্ক জমা দিতে হয়, সে-ব্যবস্থা অবশ্য হোম-স্টে করে রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: শতবর্ষে নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা
থাকার জায়গা
পাহাড়ি পথ ধরে গাড়ি যখন ঢুকবে কংক্রিটের তোরণ পথে, অবশ্যই চোখে পড়বে তোরণের মাথায় বড় বড় করে লেখা আছে “ওয়েলকাম টু চটকপুর ইকো ভিলেজ”। চটকপুরে যাওয়া একটু কষ্টসাধ্য হলেও ট্যুরিস্টদের আতিথেয়তার জন্য সব সময় প্রস্তুত গ্রামের মানুষ। গ্রামের সব বাড়ি-ই আয়োজন রাখে প্রাইভেট হোম-স্টে-র। ভাড়া মোটামুটি সবারই অল্প-বিস্তর এক, একটি ঘরে দুই, তিন অথবা চারজন থাকতে পারে। ঘরগুলো যদিও তেমন বড় নয়, ভাড়া স্থির হয়, মাথাপিছু এবং দিনপিছু। তবে স্থান-সংকুলানের সমস্যা এরা পুষিয়ে দেন আন্তরিক অতিথি সৎকারে। ঠান্ডা এখানে যথেষ্ট, তাই সব ঘরেই লাগোয়া টয়লেটে গিজারের ব্যবস্থা থাকে, আর থাকে চারবেলা ঘরোয়া খাওয়ার ব্যবস্থা। বেড টি, ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, বিকেলের স্ন্যাক্স, আর ডিনার, পাহাড়ি মানুষ যত্নের কোনও ত্রুটি রাখেন না। লুচি, রুটি, পাঁউরুটি, পরোটা, মোমো, আচার, ভাত, ডাল, সবজি, ডিম, মুরগি, শূয়োরের মাংস থাকেই। মাছের ব্যবস্থা করা একটু শক্ত। হোম-স্টেগুলো পাহাড়ের ওপরে ধাপে ধাপে সাজানো, স্থানীয় মানুষের ভাষায় “আপার চটকপুরে”, পাহাড়ের মাঝামাঝি অবস্থানেও আছে গুটি কয়েক হোম-স্টে, আর লোয়ার চটকপুরে অর্থাৎ ইকো ভিলেজ শুরুর মুখেই রয়েছে একটি সাজানো গোছানো প্রাইভেট হোম-স্টে। তবে এখানে সব চেয়ে আরামের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে, অতি প্রশস্ত সরকারি ফরেস্ট কটেজে। বিশাল বিশাল ঘর, কাঠের আসবাবে সাজানো, ঘরের দু’পাশে চওড়া বারান্দা, বারান্দায় বসে বনের সৌন্দর্য আর পাখির ডাক সারাদিন ধরে দিব্য উপভোগ করা যায়। ফরেস্ট কটেজে থাকার জন্য আগে থেকে অন- লাইনে বুক করা যায়।
দেখার জিনিস, উপভোগের বিষয়
চটকপুর মানে দৃষ্টির নাগালে বরফে ঢাকা কাঞ্চনজংঘা, পাইনের জঙ্গল, অজস্র নাম না জানা গাছে ঘেরা বনাঞ্চল, পাখির কলতান, উদ্ধত লাল, হলুদ, সাদা রডোড্রেন্ডন, স্নিগ্ধ সূর্যোদয়, বিকেলের নীলিমায় পাহাড়ের আড়ালে অস্তমিত সূর্যের রশ্মি মাখা মায়াবী গোধূলি। এখানে যা কিছু দেখার সবই পায়ে হেঁটে দেখতে হবে। ফরেস্ট কটেজের সামনে দিয়ে ১০০ মিটার পথের পরেই শুরু হয়েছে দু ধারে পাইন গাছে সাজানো নির্জন বনবীথি। নবীন প্রেমিক প্রেমিকা যুগল , অথবা অতি প্রাচীন দম্পতি, জীবনসাথী নিয়ে এ পথে বেড়াতে এলে সম্পর্কের রসায়নে নতুন মাত্রা যোগ হবেই। শান্ত, ঈষৎ খাড়া পথের এক দিকে সবুজে ছাওয়া পাহাড়, আর অন্য দিকে খাদ, পাইনের দীর্ঘ কাণ্ডের মাঝে চিরযৌবনা বরফাবৃতা কাঞ্চনজঙ্ঘা, আকাশের নীল-সাদা হাতছানি, আর সেতারের মৃদু ঝালার মতো পাতাদের সম্মিলিত বন-সংগীত। এ-পথ ধরে এক কিলোমিটার অথবা মিনিট দশেকের হাঁটা পথের শেষে দৃষ্টি জুড়ে দেখা দেবে কালো জলে ভরা ছোট্ট এক পুকুর, জলের মধ্যে বিশালাকার এবড়ো-খেবড়ো কালো পাথর। স্থানীয় লোকের বিশ্বাস এই ‘কালা পোখরি’ আসলে এক পবিত্র স্থান। পুকুরের পাড়েই রয়েছে অস্থায়ী মন্দির। সেখানে অর্থ-প্রণামী পড়ে, পাতলা কাপড়ের টুকরো লাঠির আগায় বেঁধে বনদেবতার কাছে মানত রাখা যায়, হঠাৎ আসা পথিকের হাতের ছোঁয়ায় কাঠের ফ্রেমে ঝোলানো পেতলের ছোট-বড় ঘণ্টাট সুরেলা ধ্বনি বেজে যায়, সাময়িক জেগে ওঠে নির্জন বনভূমি। এ পথে প্রায়ই বন্য প্রাণীর দেখা মেলে। চিতা, ভাল্লুক, হরিণ এমনকী কপাল ভাল থাকলে রেড পান্ডার দেখাও মিলতে পারে। তাই গ্রামের লোক সাবধান করে দেন, আঁধার হলে এ পথে যাবেন না। কালীপোখরিতে শুয়োর, হরিণএর মতো প্রাণীরা জল খেতে আসে। এ-পথেই একটা বিশেষ জায়গা থেকে ধাপে ধাপে পাথুরে পথ নীচে চলে গেছে মংপুর দিকে। স্থানীয় মানুষ এ পথে দিব্য যাতায়াত করে। ফরেস্ট কটেজ থেকে পাহাড়ের ধাপ পেরিয়ে ওপরে বেশ কিছুটা হাঁটাপথে পড়বে “সান রাইস পয়েন্ট”। আদতে এটি একটি “ওয়াচ টাওয়ার”। খুব সকালে এখানে এসে দাঁড়ালেই বালার্ক তার ফুল্লকুসুমিত রাঙা রূপটি আপনার চোখের সামনে মেলে ধরবেই। আর ৩৬০ ডিগ্রি কৌণিক দূরত্বে জুড়ে পাহাড়ের দৃশ্য অপূর্ব লাগবে। আকাশ পরিষ্কার থাকলে সেখান থেকে সান্দাকফুও চোখে পড়তে পারে। সমস্ত এলাকা জুড়ে নির্ভয়ে বেড়াতে আসে কত রকমের পাখি, নীল ম্যাগপাই, বুলবুলি, ঘুঘু, পাহাড়ি ময়না আরও কত নাম না জানা, অচেনা পাখি। এ গ্রামে এলে বার্ড-ওয়াচিং না করে পারা যাবে না। এখানে গ্রামের লোকেরা বেশ আলাপী। পাহাড়ে হাঁটার পথে চারপাশে সবুজের সমারোহের মাঝে একটি দুটি রঙিন বাড়ি। জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে অথবা উঠোনে বসে আলাপী হাসি হাসে। সমতলের মানুষের অসুবিধে দেখলেই যত্ন করে বাঁশের লাঠি এগিয়ে দেয়। শুনতে চাইলে এলাকার গল্প বলে। এ গ্রামে কারুর বাস কয়েক পুরুষ ধরে। হয়তো কেউ আর্মিতে চাকরি করেছিল, অবসরের পর গাঁয়ের ছেলে আবার গাঁয়ে ফিরে এসে হোম-স্টে খুলেছে। শীতে, গরমে, হোম-স্টে ভাল চলে, নভেম্বর–ডিসেম্বরে আকাশ থাকে ঝকঝকে। মাঝে মাঝে শীতে বরফে চারদিক ঢেকে যায়, তখন নাকি কাঞ্চনজংঘা ছাড়াও দেখা যায় মাউন্ট প্যান্ডিম, মাউন্ট কুম্ভকর্ণ, আরও কত ছোট বড় পর্বত শৃঙ্গ। আর বর্ষায় ট্যুরিস্ট আসা কমে যায়। পাহাড়ে প্রায়ই ধস নামে, বাকি এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন বড় কষ্ট।
চটকপুরে এসে পাহাড়ের গ্রাম-জীবনের অভিজ্ঞতার সঞ্চয় হতে বাধ্য। গ্রামের মানুষ বেশ আলাপী এবং পরিশ্রমী। তারা ট্যুরিস্ট সামলায়, আবার ঘর লাগোয়া খেতে চাষ করে ভেষজ গাছ-গাছালির এবং অবশ্যই খাবার জন্য রকমারি সবজি। রাই শাক এদের খুব পছন্দের। আর আছে নিঙ্গড়ো শাক, পাহাড়ের ঢালে আপনি গজায়, সরু সরু কাণ্ডের গায়ে ঝিরিঝিরি পাতা, বেগুন, টম্যাটো দিয়ে রান্না করলে নাকি চমৎকার খেতে লাগে। এখানকার মেয়েরাও খুব পরিশ্রমী। সারাদিন হাসিমুখে হোমস্টে-র ট্যরিস্ট বাবু-বিবিদের আবদার সামলাচ্ছে। কখনও ধোঁয়া ওঠা চা, কফি, গরম মোমোর সঙ্গে রসুন লংকার আচার, আবার কখনো টমেটো, লংকা, বাদামবাটা দেওয়া নিজস্ব ঘরানার আচার। স্পেশ্যাল ট্যুরিস্টদের আবদার হলে গাঢ লিপ্সটিকে রাঙানো ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে তারাই এনে দেবে স্থানীয় সুরা “টংবা”। লম্বা বাঁশের গ্লাসে, বাঁশের পাইপ ডোবানো টংবার জোগাড় আগে থেকেই রাখতে হয়, স্থানীয় দানাশস্য সেদ্ধ করে, ইস্ট মিশিয়ে তৈরি করে রাখে ঘন সুরা, পরিবেশনের সময় শুধু গরম জল মিশিয়ে ধীরে ধীরে পান করতে হয়। এ তল্লাটে দোকান, রেস্ট্যুরেন্ট কিচ্ছু নেই। শুধু ফরেস্ট কটেজের সামনে ধনমায়া হোম-স্টে-র মালিক চালায় একটি ছোট্ট দোকান, শখ করে নাম দিয়েছে মিনি মার্কেট। সেখানে অবশ্য উলের টুপি, উলের হেয়ার ব্যান্ড, লোকাল আচার, লজেন্স পাওয়া যায়, এমনকী কাঠমান্ডু থেকে আনা সাবান, লিপ্সটিকও থাকে। ইদানীং চটকপুর বেশ জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট হয়ে উঠছে।। দার্জিলিংয়ের ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে এখানে নাকি রোজ নিয়ম করে লোকে বেড়াতে আসছে। আসে স্থানীয় স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা, জৈব-বৈচিত্র্যের পাঠ নিতে। এ গ্রাম নরবু শেরপা, তিলবাহাদুর রাই, নাগপা থাপা, শ্যাম থাপাদের নিজস্ব বনভূমি। এ-তল্লাটকে এরা যত্নে আগলে রাখছে। প্রকৃতিও তাই এখানে উজাড় করে সমস্ত বনজ মায়া ঢেলে দিয়েছে।
নিজের রাজ্যে এমন একটা স্নিগ্ধ-আরামের জায়গা না দেখে থাকা যায় নাকি?