রৌনক কুন্ডু, কোচবিহার: বড়দেবী হলেন কোচ রাজবংশের কুলদেবী, যিনি প্রায় ৫০০ বছর ধরে পুজিত হয়ে আসছেন। কোচ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা বিশ্বসিংহ অসমের চিনকা পাহাড়ে ময়নাগাছের ডালকে দেবী হিসাবে পুজোর শুরু করেছিলেন। তখন থেকেই বড়দেবীর পুজোর ঐতিহ্য শুরু হয়। বড়দেবীর স্বপ্নাদেশেই কোচবিহারের মহারাজা নরনারায়ণ বড়দেবীর যে প্রতিমার পুজো শুরু করেছিলেন। সে সময় থেকেই কোচবিহারের দেবী বাড়িতে বড়দেবীর পুজো হয়ে আসছে। রাজা বা রাজত্ব না থাকলেও আজও সেই নিয়ম রীতি মেনে পুজো হয়। তবে আর পাঁচটা দুর্গা পুজোর থেকে ভিন্ন নিয়মে। শ্রাবণের শুক্লা অষ্টমী থেকে পুজোর সূচনা হয়।
আরও পড়ুন-৫০০ বছরের প্রাচীন পুজো সাবিত্রী মন্দিরে
স্বপ্নাদেশ মতবড়দেবী রক্তবর্ণা। রাজআমলে এই পুজোতে নরবলির প্রথা ছিল। আজও বড়দেবী নররক্তে তুষ্ট হন পুজো চলাকালীন সন্ধিপুজোতে মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় গুপ্তপূজা। এই সময় মন্দিরে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। কোচবিহারের ডাঙ্গরাই মন্দিরে যূগছেদনের মধ্য দিয়ে এই পুজোর সূচনা হয়। একটি ময়না গাছ কেটে সেটিকে মন্দিরে নিয়ে এসে মহাস্নান করানো হয়। সঙ্গে চলে বিশেষ পুজো। এই ময়না কাঠ দিয়েই তৈরি হয় বড়দেবীর প্রতিমার মেরুদণ্ড। সাধারণত দুর্গার সঙ্গে লক্ষ্মী-সরস্বতী, কার্তিক, গনেশকে দেখা যায়। কিন্তু বড়দেবীর সঙ্গে থাকে জয়া এবং বিজয়া। বাহন হিসাবে থাকে বাঘ। অষ্টমীতে মহিষ বলির প্রথাও রয়েছে।