সংবাদদাতা, হুগলি : অন্যান্য দিনের মতো পড়তে গিয়েছিল ছেলে। কিন্তু টিউশন থেকে ফিরেই তার চোখমুখ বদলে যায়। অস্বাভাবিক ব্যবহার করতে থাকে সে, এমনকি অকারণে গালিগালাজ করা থেকে শুরু করে গায়েও হাত তুলতে থাকে বড়দের। ছেলের এই কাণ্ড দেখে তো বাবা-মা ধরেই নিয়েছিলেন তাকে হয়তো ভুতে ধরেছে। আর সেই আশঙ্কা তেই ছেলেকে শিকলে বেঁধে রেখেছিল পরিবার। এরপর ছেলেকে সুস্থ করতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ওঝার কাছে। ঝাড়ফুঁক করানো হয়েছে বিস্তর। কিন্তু তাতে অবস্থা খুব একটা ফেরেনি। এরপর বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের পরামর্শে চিকিৎসককে দেখান পরিবার। ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। ওই কিশোরের বাড়িতে যান চুঁচুড়া সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা।
আরও পড়ুন-যাঁরা ভোট দেননি তাঁদের কাজ আগে করব : রচনা
- সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর অনিন্দিতা মন্ডল এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা। হেমন্ত বসু কলোনি এলাকায় এক কিশোর গত কয়েক দিন ধরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। হাত পা ছুঁড়তে থাকে গালিগালাজ করতে থাকে। সামনে কাউকে পেলে তাকে মারধরও করতে যায়। ছেলের এই হাবভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাড়ির লোকেরা। ভুতে ধরেছে সন্দেহে বাড়ির লোকেরা তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। ওঝার থেকে জল পড়া এনে খাওয়ানো মাদুলি পড়ানো সবই করা হয়। তাতে কোনো কাজ হয়না। এরপর চিকিৎসক দেখালে কিশোর ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকে। তার শিকল খুলে দেওয়া হয়।
মহকুমা শাসক বলেন,এখনও মানুষের মধ্যে কিছু কুসংস্কার রয়েছে। কিশোরের বাবা কুসংস্কার আচ্ছন্ন হয়ে ওঝার কাছে গেছেন তাতে সময় এবং অর্থ দুটোই ব্যয় হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর বা প্রশাসনের লোকজনকে জানালে হয়তো আরও আগে কিশোরের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত।এখন নিউরো সাইক্রিয়াটিস্টকে দেখানো হচ্ছে কিশোর অনেকটাই সুস্থ আছে। ক্লাস টেনের ছাত্র ভালোভাবে পড়াশোনা করুক এটাই আমরা চাই। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য সন্দীপ সিংহ বলেন,আমরা জানতে পেরে কিশোরের বাড়িতে আসি। ওঝা ঝাড়ফুঁক এসবের ফলে অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তেমন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সচেতন থাকতে হবে। কিশোরের বাবা কার্তিক মালাকার বলেন, ছেলে আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ হয়েছে।