হাইকোর্টের বিচারপতিকে নিয়ে হস্তক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট

হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এলাহাবাদ হাইকোর্টের কর্মরত বিচারপতির ভাষণ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট।

Must read

প্রতিবেদন: হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এলাহাবাদ হাইকোর্টের কর্মরত বিচারপতির ভাষণ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের ওই বিচারপতির ভূমিকা বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বলে ইতিমধ্যেই সর্বস্তরে সমালোচনা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এলাহাবাদ হাইকোর্টের একজন বিচারপতি একটি সাম্প্রদায়িক ভাষণ দেন। বিজেপির সুরে বিতর্কিত অভিন্ন দেওয়ানি বিধির সমর্থনে সওয়াল করদন।

আরও পড়ুন-হার্দিকদের বিরুদ্ধে শামিই অস্ত্র বাংলার

সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর শীর্ষ আদালত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে বিচারপতি শেখর কুমার যাদবের ওই বক্তব্যের বিষয়টি তারা গুরুত্বের সঙ্গে নজরে নিয়েছে।
শীর্ষ আদালতের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য হাইকোর্ট থেকে চাওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি এখন বিবেচনাধীন। বিচারপতি যাদব বলেছিলেন, ভারত শুধুমাত্র ‍‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’ অর্থাৎ হিন্দু সম্প্রদায়ের ইচ্ছানুযায়ী পরিচালিত হবে। তিনি এমনকী মুসলমানদের একটি অংশের জন্য বিতর্কিত শব্দ ‍‘কাঠমুল্লা’ ব্যবহার করেন, যারা চার স্ত্রী রাখা এবং তিন তালাক প্রথার মতো আচরণে লিপ্ত হন। তিনি এসব প্রথাকে দেশের জন্য ‍‘মারাত্মক’ বলে অভিহিত করেন। ক্যাম্পেইন ফর জুডিসিয়াল একাউন্টেবিলিটি এন্ড রিফর্মস (সিজেএআর) প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে এই বিষয়ে ‍‘ইন-হাউস তদন্ত’ করার দাবি জানিয়েছে। তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করার প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। সিজেএআর তাদের চিঠিতে বলেছে, বিচারপতি যাদবের ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং বিতর্কিত বক্তব্য প্রদান সাধারণ নাগরিকদের মনে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর সন্দেহ তৈরি করেছে। ব্যাপক প্রচারের ফলে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং একটি দৃঢ় প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন। সিজেএআর চিঠিতে উল্লেখ করেছে যে বিচারপতি যাদবের বক্তব্য এবং অংশগ্রহণ ভারতের সংবিধানের ১৪, ২১, ২৫ এবং ২৬ অনুচ্ছেদের পাশাপাশি প্রস্তাবনার মূলনীতি—ধর্মনিরপেক্ষতা এবং আইনের সামনে সমতার—পরিপন্থী। তারা আরও বলেছে, উচ্চ আদালতের একজন বর্তমান বিচারপতি জনসম্মুখে এমন সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়া শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে না, এটি জনগণের বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠানের সততা এবং নিরপেক্ষতার প্রতি আস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়। বিচারপতি হিসেবে তার শপথের স্পষ্ট লঙ্ঘন এটি, যেখানে তিনি সংবিধান ও তার মূল্যবোধকে নিরপেক্ষভাবে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

Latest article