প্রতিবেদন : গাফিলতির চরম মূল্য দিতে হল এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রীদের? আমেদাবাদে স্বজনহারানোর কান্না, দেহ চিনতে না পারার বেদনা, পারিবারের হারিয়ে যাওয়া সদস্যদের খুঁজে না পাওয়ার আর্তনাদের মাঝে এই কথাটাই ঘুরে ফিরে মানুষের মুখে। বিমান সংস্থার প্রতি মানুষের ক্ষোভ চরমে। ড্রিমলাইনার নিয়েও মানুষের মনে চরম অসন্তোষ। যার জবাব দিতে হবে কেন্দ্রের সরকারকেও। রেল মন্ত্রককে বিজেপি সরকার জাহান্নমে পাঠানোর পর এবার বিমান পরিষেবা নিয়েও মানুষের আতঙ্ক চরমে উঠেছে।
তৃণমূল চায় তদন্ত
তৃণমূল কংগ্রেস দুর্ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত চায়। উচ্চপর্যায়ের নিরপেক্ষ গভীর তদন্তের প্রয়োজন। ডবল ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেল কী করে! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা হতে পারে না। এর মধ্যে অবহেলা যেমন রয়েছে তেমনি অন্য কোনও কারণও রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ, এত মানুষের মৃত্যুর সদুত্তর চান দেশের মানুষ।
রক্ষণাবেক্ষণে চরম ব্যর্থতা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার পিছনে রয়েছে চরম টেকনিক্যাল ব্যর্থতা। রক্ষণাবেক্ষণে চরম গাফিলতি। দুর্ঘটনায় পড়ার আগে পাইলটের বার্তাতেই তা পরিষ্কার। মেন্টেনান্স ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে যাঁরা ফিট সার্টিফিকেট দিয়েছেন বিমানটিকে তাঁরা কেউ-ই এই দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। ফুয়েল প্রেসার যদি ক্লগ করে যায় তাহলে তা আগে কেন দেখা হল না? এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকলকে এই তদন্তের আওতায় আনতে হবে। বোয়িং ৭৩৭-এর (Ahmedabad Plane Crash) ঘটনার পরেও কেন সতর্ক হল না অসামরিক পরিবহণ মন্ত্রক!
জবাব দিক ডিজিসিএ
এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে এর আগে বারবার অভিযোগ উঠেছে। টাটা সংস্থাকে দোষারোপ করে লাভ নেই। এয়ার ইন্ডিয়া সবে হস্তান্তর হয়েছে। তার আগে সরকারি হাতে থাকার সময়ে অসংখ্য অভিযোগ ছিল। বহু শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আর অভিযোগ পেয়েও চুপ করে ছিল কর্তৃপক্ষ। কোন কারণে? তদন্তের সঙ্গে বিচারও চাই।
মৃতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়াবে
বিমান দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা পরিষ্কার। ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমান ভেঙে পড়ার পর কলেজ হস্টেলের পাশাপাশি এলাকার বহু মানুষ নিখোঁজ। তাঁদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্ত্রী খুঁজছেন স্বামীকে। মা খুঁজছেন ছেলেকে। শুক্রবার দুর্ঘটনাস্থলে এই হাহাকার। যেভাবে মানুষের হাহাকার দেখা যাচ্ছে, তাতে মৃতের সংখ্যা নিশ্চিতভাবে ৫০০ ছাড়াবে। যদিও ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা লুকনোর ব্যর্থ চেষ্টা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- মোদি গেলেও সদুত্তর নেই, জোরালো তদন্তের দাবি
হাসপাতালে ভিড়
শুক্রবার আমেদাবাদের (Ahmedabad Plane Crash) হাসপাতালগুলিতে স্বজনহারাদের ভিড়। আগুনে পুড়ে যাওয়ায় কোনও দেহই শনাক্ত করা যায়নি। ডিএনএ টেস্ট হওয়ার পরেই দেহ স্বজনদের হাতে দেওয়া হবে। কিন্তু শরীর ছিন্নভিন্ন ক্ষতবিক্ষত। ফলে স্বজনরা পূর্ণ শরীরই খুঁজে পাচ্ছেন না। হাসপাতালে এই দৃশ্য অকল্পনীয়। আর যাঁরা নিখোঁজ তাঁদের জন্য হাসপাতাল আর থানায় ঘুরছেন স্বজনেরা। পিংপং বলের মতো তাঁদের পরিস্থিতি। প্রশাসনও নির্বিকার। জবাব নেই তাদের কাছে।
প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন
প্রধানমন্ত্রী আজ শুক্রবার আমেদাবাদে গিয়েছেন সকালে। দেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনাস্থলে যাবেন স্বাভাবিক। কিন্তু মণিপুর যখন ২ বছর ধরে জ্বলেছে, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি আক্রমণ করে, তখন সেখানে যান না কেন? পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পরেও সেখানে যান না। কেন? গুজরাত নিজের রাজ্য বলেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমেদাবাদে পৌঁছে গেলেন? তিনি কি গুজরাতের প্রধানমন্ত্রী? প্রধানমন্ত্রী গুজরাত ঘুরে আসার পর বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।