প্রতিবেদন : এখন থেকে দিল্লির বঙ্গভবনের (Banga Bhawan- WB Police) নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাবে রাজ্য পুলিশ (West Bengal Police)। ২৩ জানুয়ারি সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে দিল্লিতে রাজ্যের দুই অতিথিশালা। কয়েকদিন আগেই সাগরদিঘিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বঙ্গভবনের নিরাপত্তা নিয়ে নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। এরপরই প্রশাসনের শীর্ষ মহলে তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। কিছুদিন আগেই সমাজকর্মী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সাকেত গোখেলকে দিল্লির চাণক্যপুরীর বঙ্গভবনের ২০৭ নম্বর ঘর থেকে দিল্লি পুলিশের সহায়তায় গুজরাত পুলিশের গ্রেফতারি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গভবন রাজ্যের সম্পত্তি। এমনকী কোনওরকম অনুমতি ছাড়াই গুজরাত পুলিশ দিল্লির বঙ্গভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ-সহ বাকি সব কিছু তুলে নিয়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন তিনি। এরপর থেকে রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া দিল্লির বঙ্গভবনে যাতে বাইরের পুলিশ ঢুকতে না পারে সে-বিষয়ে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির সভা থেকে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে স্পষ্ট নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ভবিষ্যতে বিনা অনুমতিতে বাংলার দুই অতিথিশালায় ঢুকলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনার পরই বিনা অনুমতিতে দিল্লির বঙ্গভবনে (Banga Bhawan- WB Police) ঢোকায় গুজরাত পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে রাজ্য সরকার। দিল্লির চাণক্যপুরী থানায় রাজ্যের তরফে অভিযোগ জানানো হয়। গুজরাত পুলিশের পাশাপাশি দিল্লি পুলিশের আধিকারিকদের নামেও অভিযোগ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিল্লি পুলিশ পরিচালনা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তাদের বিরুদ্ধে বঙ্গভবনের সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট করারও অভিযোগ উঠেছে।
গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে দিল্লির চাণক্যপুরীর বঙ্গভবন থেকেই সাকেত গোখেলকে গ্রেফতার করেছিল গুজরাট পুলিশ। অভিযোগ, স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় বলপ্রয়োগ করে গুজরাত পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। বলপ্রয়োগের কোনও চিহ্ন যাতে না থাকে তাই সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ আধিকারিকরা বলে অভিযোগ। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কেন্দ্রকে চিঠি লেখা হয়েছিল নবান্নের তরফে। তারপরই রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে পর-পর এই পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন-আন্দোলন ভাঙতে রাম-বাম আঁতাত বিশ্বভারতী
সোমবার ২৩ জানুয়ারি সকাল থেকেই দুই বঙ্গভবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় রাজ্য পুলিশ। ২২ জানুয়ারি রাতেই কনস্টেবল, এসআই মিলিয়ে মোট ২০ জনের একটি দল এসে পৌঁছেছে রাজধানী দিল্লিতে। এবার থেকে রাজ্য পুলিশের অনুমতি ছাড়া বঙ্গভবনে বাইরের কোনও লোক ঢুকতে পারবে না।
জানা গিয়েছে, যে দলটি এসেছে তারা আপাতত একমাস দিল্লিতে দুই বঙ্গভবনের দায়িত্বে থাকবেন। একমাস পরে তাদের পরিবর্তে অন্যদল আসবে। আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য এই নিয়মই বজায় থাকবে। রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তারক্ষীদের হাতেই থাকবে বঙ্গভবনের দায়িত্ব।