প্রতিবেদন : পাঁচ হাজার বছর ধরে বাংলার এই ভূখণ্ডে বাঙালির বাস। আর বাংলাভাষার লিখিত ইতিহাস ১২০০ বছরের। সেই ভাষাকে কি না বাংলাদেশি ভাষা বলছে স্বৈরাচারী বিজেপি! এই অপমান মানবে না বাঙালি। কড়ায়-গণ্ডায় জবাব দেবে। মঙ্গলবার ডোরিনা ক্রসিংয়ে ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে নিশানায় তথ্য তুলে ধরে আক্রমণ শানালেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-সংগঠনকে মজবুত করতে নির্দেশ অভিষেকের বৈঠকে
বাংলার ভাষার ইতিহাস পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরে বিজেপির প্রতিটি অত্যাচারের জবাব দিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সরিয়ে আনা হয় ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ। এদিন এই প্রতিবাদ মঞ্চে ঋতব্রত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, তন্ময় ঘোষ, রাজ্য সম্পাদক অলোক দাস প্রমুখ। ছিলেন স্বপন সমাদ্দার, সোমনাথ শ্যাম, অরূপেশ ভট্টাচার্য-সহ বিভিন্ন জেলা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এদিন ইতিহাসের পাতা থেকে বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরেন ঋতব্রত। বলেন, পাঁচ হাজার বছর আগে এই ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলেন পূর্বদিক থেকে আসা জনজাতি। আমাদের যাপনে পাঁচ হাজার বছরের ইতিহাস। প্রাক বাংলা পরবর্তীতে বাংলা ভাষা দু’হাজার বছরের পুরনো। আমাদের লিখিত ইতিহাস ১২০০ বছরের। আর সেই বাংলাভাষাকে ধ্রপদী ভাষার স্বীকৃতি ও সম্মান এনে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী যখন নেপালের রাজদরবার থেকে অনেক পুঁথি আবিষ্কার করেছিলেন, উন্মোচিত হয়েছিল নতুন দিগন্তের। লেখার মধ্য দিয়ে তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন গোটা বাংলার চিত্র।
আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি বলেন, বিজেপির কথায় সেনাবাহিনী অভাবনীয় নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের দোষ দিই না। বিজেপি মঞ্চ খুলে দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীকে নামিয়েছে। এজেন্সি লেলিয়ে দিয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের এজেন্সিতে পরিণত করেছে। সেনাবাহিনীকে পর্যন্ত এজেন্টে পরিণত করে অ্যাজেন্ডা ফুলফিল করছে। মঞ্চ ভেঙে দিয়ে বিজেপি মনে করেছিল, এটা বুঝি মহারাষ্ট্র, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ। কিন্তু ওরা জানে না এটা বাংলার মাটি, দুর্জয় ঘাঁটি। এখানে বিজেপির কোনও ঠাঁই নেই। আবার গজিয়ে উঠেছে মঞ্চ। আন্দোলন চলছে, চলবেও। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাঙালি হয়ে জন্মাতে চাই, মন্তব্যকে কটাক্ষ করে ঋতব্রত বাঙালির পাঁচ হাজার বছর ধরে খাদ্যতালিকায় ভাত, মাছ, শাকের ইতিহাসও তুলে ধরেন। তুলে ধরেন কবিকঙ্কণ মুকুন্দরামের মঙ্গলকাব্য থেকে বিগত হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি রবীন্দ্রনাথের ভানুসিংহ থেকে নোবেল, নাইট উপাধির ইতিহাসও ব্যাখ্যা করেন। উত্তরপ্রদেশ সরকার পাঠ্যবই থেকে রবীন্দ্রনাথকে মুছে দিয়েছে। এ-প্রসঙ্গে ঋতব্রত বলেন, আসলে রবীন্দ্রনাথ বিজেপির চোখের বালি। বাংলার উপর এই অত্যাচারের আসল উদ্দেশ্য হল, বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্যাকডোর দিয়ে এনআরসি চালু করা। বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর ভাষা বাংলা পৃথিবীর মধুরতম ভাষাও। এই ভাষাকে আপনারা মুছে দিতে পারবেন না। আপনাদের চক্রান্তের জবাব দেবে বাংলা।